সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

ছেলেবেলা

★*★ছেলেবেলা★*★

______মুহাম্মদ সৈয়দুল হক

চল দোস্ত- খেলতে যায় মামা বাড়ির মাঠে

খেলার সময় খেলতে মজা, মন কি বসে পাঠে?


নারে দোস্ত- যা একা তুই মা বকবে আমায়

ধরা খেলে সোজা জেলে, আর যে জামিন নাই।


ওরে ছাগল, শোন না পাগল, কেমনে খাবি ধরা

একটু পরে আন্টি যাবে, ওই যে উত্তর পাড়া।


আজকে যদি জিততে পারি পাব অনেক টাকা

সে টাকাতে বল কিনেরে মারতে পাব ছক্কা।


চলনা ওরে আলসে মোটো, হলদে দিঘির পাড়ে

পুর্ব পাড়ার ছেলেরা তাই ঢাং মারিছে জুরে।


পাড়ার যত দুষ্টু ছেলে দুষ্টুমিতে মেতে

খেলব সেথা ঢাংগুলিটি সবাই একিসাথে।


ঐ দেখ, সব বেটারা বড় বিলের চড়ে

খেলছে সেথা মারবেলটি আমাদেরকে ছেড়ে।


দুইয়ে মিলে ‘ভাই খেলা’তে হারিয়ে দেব ওদের

বুঝবে তখন আচ্ছা করে টক্কা খেলা মোদের।


লাটিম খেলার লাটিমঘিরি মোর’চে বেশি কার

আমায় হারায় লাটিম খেলায় সাধ্যি আছে কার?


প্রথম মারে ফাটলে লাটিম, দেখতাম সেটা মোর

চাপাবাজির চাপার জোরটা গড়াতনা দূর!


ক্লান্ত দুপুর, শান্ত পুকুর, অশান্ত যে মোরা

সবাই মিলে পুকুর জলে সব করিতাম সারা।


নারকেল গাছের ঢালটি ধরে দোলন খেলার মজা

কে বুঝিবে না দোলিলে দোলন কেমন সোজা।


এ বাড়ি আর ও বাড়িতে দিন কাটিত বেশ

সন্ধা বেলা বকার জ্বালা, মা করিত শেষ।


রাতের বেলা চাঁদের খেলা, উঠোন জুড়ে মাছ

বোয়াল-কাতাল, ইছা-ফুঁটি, কেউবা ফুলের গাছ।


মারের ভয়ে উপুড় হয়ে করতাম ঘুমের ভান

কাজের শেষে মা যে এসে মারতো হাতে টান।


উঠরে বাঁদর, ধো হাত-মুখ, খেতে যাবি চল

সারাদিন কোথায় ছিলি আমায় খুলে বল।


চোখে তখন বেজায় ঘুম, কানে যায় না কথা

কোনমতে খাওয়া সেরে বিছানাতেই মাথা।


গভির রাতে ঘুমের ঘোরে হস্ত জোড়া কোলস

কে যেন মোর মাথার উপর দিচ্ছে তাহার পরশ


অমনি করে মাথা গুঁজে দিতাম মায়ের বুকে

রাতটি আমার কেটে যেতো, তৃপ্তি-পরম সুখে।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

ধর্মটা যে ধর্ম নেই

ধর্মটা যে ধর্ম নেই আর —মুহাম্মদ সৈয়দুল হক ধর্মটা যে ধর্ম নেই আর চর্ম কেবল আছে তা’য়, ধর্মমূলের কর্ম সকল দূর হয়েছে অচিন গাঁ’য়। জুব্বা টুপি পাগড়ি সবি বাড়ছে ক্রমে দিনে-দিন, মানুষগুলো হচ্ছে কেবল মুহাম্মদের ধর্মহীন (দরুদ)। তথ্যমতে নিত্য যারা গরীব-দুখীর ভাত মারে, গিয়ে দেখো ইদ-জুমাতে তারাই প্রথম কাতারে। যেই হুজুরে দিন-দুপুরে হালাল-হারাম বয়ান দেয়, দুই থেকে চার পয়সা পেলে ইমানখানাও বেইচা দেয়। পীর-সাধক আর ধর্মগুরুর বাড়ছে অভাব নিত্যদিন, পাত্র দেখে ছাত্র পোষে পীর নিজে বেশ ধর্মহীন। সহিহ হাদিস করছে হদিস দিনমজুর আর দিন-ফকির, মুহাদ্দিস আজ কলেজ-বালক ডাক্তারে-ও মুফাস্সির। প্রাথমিকের বাল-বালকে কাফের বলে রায় ছাড়ে, সোশ্যাল মামুর এই জগতে কার সাথে আর কে পারে! গাঞ্জা খেয়ে মঞ্চে উঠে পাঞ্জা দোলায় দেয় বয়ান, মোল্লা-মুনসির এই দশাতে যাবে কোথায় মুসলমান? কেউবা খেলে ফুটবল আবার কেউবা চড়ে রকেটে, দর্শকে কয় মারহাবা-জী হাদিয়া ভরুন পকেটে। সকাল থেকে রাত অবদি, রাত্র থেকে সকাল-তক, দীনটা ছিল সবটা-জুড়ে সবটা যেন থাকে হক। কর্ম যত ধর্ম সবি বলছে কুরআন মজিদে, অকর্মা...

পথে পথে-২

পথে পথে-২ ঢাকা থেকে মহানগর প্রভাতিতে চড়ে সোজা নারায়ণগঞ্জ বন্দরে পৌঁছলাম। সাথে আছে সদ্য প্রকাশিত ‘বাংলা কাব্যে নবী-বন্দনা এবং নজরুলের মুনশিয়ানা’র লেখক আবু সাইদ এবং স্নেহাস্পদ মুকিম। যাবো আল্লামা বাকি বিল্লাহ (রহ.)র প্রতিষ্ঠিত গাউছিয়া তৈয়বিয়া তাহেরিয়া মাদরাসায়। সামনে বুড়িগঙ্গা। পার হতে হবে। ঘাটে নৌকার হুড়োহুড়ি। দু-তিনজন মাঝি একসাথে ডাকাডাকি করছে—আয়েন হুজুর আয়েন। নিজেকে ভিআইপি ভিআইপি মনে হচ্ছে। পেছন পেছন আরও কিছু লোকের আগমন। মাঝিরা এবার আমাদের ছেড়ে ওদের ডাকছে। বুঝলাম—এ ঘাটে যারা আসে সবাই ভিআইপি। অতিরিক্ত ভাবসাব বাদ দিয়ে দ্রুত উঠে পড়লাম। উঠেই গান শুরু— “বাঁশখালিইইইই, মইশখালি      পাল উড়াইয়া দিলে সাম্পান গুরগুরাই টানে— হন হন যাবি আঁর সাম্পানে। কর্ণফুলীর মাঝি আঁই   নিয়ুম ভাটি-উজানে, হন হন যাবি আঁর সাম্পানে ও তোরা, হন হন যাবি আঁর সাম্পানে।” মুকিম রসিকতার সুরে বললো—“ভণ্ডামি বাদ দেন ভাই, এটা কর্ণফুলী না; বুড়িগঙ্গা।” তার পিঠে কষে এক চড় দিয়ে বললাম—আবে হালা, ঢাকাইয়ারা বুড়িগঙ্গা নিয়া না-লেইখলে মুই কী করবাম? আবু সাইদের মুখটা কেমন জানি ফ্যাকাসে দেখাচ্ছে। বাড়ি কুমিল্লা...

ধ্রুব

ধ্রুব ধ্রুব চা খাচ্ছিল। খেতে খেতে ভাবছে। ভাবতে ভাবতে খাচ্ছে। কোনটা আগে? ভাবনা না খাওয়া? খাওয়া না ভাবনা? আরে, এটা তো পান করার জিনিস; খাচ্ছে কেন? যাব্বাবা, কী যে মাথামুণ্ডু ভাবছে—কে জানে! পানকে খাওয়া ভেবে ভাবনার অপমান হয়েছে ঢের। আর না। এবার খাওয়ায় মনোযোগ দেয়া যাক। হে হে, মনোযোগ দেবার আগেই মনোভাব পাল্টে গেল? আবারো খাওয়া? ভাবনার মান-ইজ্জত একেবারে শেষ। কিন্তু না, এভাবে শেষ হতে পারে না। সে ভাবুক৷ ভাবনার অপমান সে হতে দেবে না। প্রয়োজনে পানকে যে-কোনো রীতিতে খাওয়া বানিয়ে ছাড়বে। আচ্ছা, চা’কে বিরিয়ানি ভাবলে কেমন হয়? হাঁ, বিরিয়ানি ভাবলেই হয়ে যায়। খাওয়া-পানের দ্বন্দ্ব শেষ। তা-ছাড়া চা আর বিরিয়ানির কালারটা কাছাকাছি। বিরিয়ানিতে ঝোল ঢালা হোক। মাখামাখি করে পান্তাভাত বানানো যাক। এবার পান্তাভাতের তরিকায় পুরুত পুরুত টানা যাক। আহা! সে কী স্বাদ, সে কী স্বাদ! ধ্রুব এবার চিৎকার দেয়—পৃথিবী বিরিয়ানির, পৃথিবী বিরিয়ানির। চায়ের কাপটা আর কাপ নেই। আকাশের বুকে সুসজ্জিত থালা। থালাটা আবার চাঁদের মতো। সে চাঁদে ঝিলিক মারছে। চাঁদটাকে একবার ডানহাতে, আবার বাঁহাতে। সেটাকে আবার কিছুক্ষণ পরপর মুখে পুরে লম্বা চুমুক। চু...