সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

ধর্মটা যে ধর্ম নেই

ধর্মটা যে ধর্ম নেই আর
—মুহাম্মদ সৈয়দুল হক
ধর্মটা যে ধর্ম নেই আর চর্ম কেবল আছে তা’য়,
ধর্মমূলের কর্ম সকল দূর হয়েছে অচিন গাঁ’য়।
জুব্বা টুপি পাগড়ি সবি বাড়ছে ক্রমে দিনে-দিন,
মানুষগুলো হচ্ছে কেবল মুহাম্মদের ধর্মহীন (দরুদ)।
তথ্যমতে নিত্য যারা গরীব-দুখীর ভাত মারে,
গিয়ে দেখো ইদ-জুমাতে তারাই প্রথম কাতারে।
যেই হুজুরে দিন-দুপুরে হালাল-হারাম বয়ান দেয়,
দুই থেকে চার পয়সা পেলে ইমানখানাও বেইচা দেয়।
পীর-সাধক আর ধর্মগুরুর বাড়ছে অভাব নিত্যদিন,
পাত্র দেখে ছাত্র পোষে পীর নিজে বেশ ধর্মহীন।
সহিহ হাদিস করছে হদিস দিনমজুর আর দিন-ফকির,
মুহাদ্দিস আজ কলেজ-বালক ডাক্তারে-ও মুফাস্সির।
প্রাথমিকের বাল-বালকে কাফের বলে রায় ছাড়ে,
সোশ্যাল মামুর এই জগতে কার সাথে আর কে পারে!
গাঞ্জা খেয়ে মঞ্চে উঠে পাঞ্জা দোলায় দেয় বয়ান,
মোল্লা-মুনসির এই দশাতে যাবে কোথায় মুসলমান?
কেউবা খেলে ফুটবল আবার কেউবা চড়ে রকেটে,
দর্শকে কয় মারহাবা-জী হাদিয়া ভরুন পকেটে।
সকাল থেকে রাত অবদি, রাত্র থেকে সকাল-তক,
দীনটা ছিল সবটা-জুড়ে সবটা যেন থাকে হক।
কর্ম যত ধর্ম সবি বলছে কুরআন মজিদে,
অকর্মা এই জাতি তারে বেন্ধে দিলো মসজিদে।
দিন কাটে যার পর-আচারে রাত্রে ফাঁদে ঠকের ফাঁদ
সে নাকি কাল দীনের তরে করতে যাবে দীন-আবাদ!
দেখলে মেয়ে লালা ঝরে দিলপুরা যার কামের রেশ
কোটি লোকের মুরুব্বি সে দেশের খ্যাতিমান দরবেশ!
বাড়ছে এমন আলেম-দীন—
সর্বত্রে হুজুগমনা সবটাতে সব যুক্তিহীন।
যুগ-চাহিদার ধার ধারে না, আবোল-তাবোল যায় বকে,
দিনশেষে ঐ আমজনতা তাদের তরেই যায় ঠেকে।
নাস্তিকরা পায় গুলি—
সেই গুলিতে ঝাঁঝরা করে গালপাড়ে দীন-নাম তুলি।
“ধর্ম বড় অন্ধ জিনিস ধার্মিক সে আন্ধা বেশ
ধর্ম এবং ধার্মিকেরাই নষ্ট করলো সোনার দেশ!”
হায়রে-ও-হায় মুসলমান!
দীন-ইসলামের করলি এ কী, নিলি কোথায় দীনের মান?

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

হযরতের স্কুল-১

হজরতের স্কুল-১ –মুহাম্মদ সৈয়দুল হক “হাসরের দিন আমি সর্বপ্রথম বলিব– ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ।” শিরক শিরক বলে মাইজভাণ্ডারের প্রতি আঙ্গুল তোলা ব্যক্তিরা গাউছুল আজম মাইজভাণ্ডারির এ বাণীটি অন্তরে গেঁতে রাখুন। অঘোষিত এক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা গাউছুল আজম হজরত আহমদ উল্লাহ মাইজভাণ্ডারি। সে ভার্সিটির পহেলা সবক ছিল “কবুতরের মত বাছিয়া খাও, হারাম খাইও না। নিজ সন্তানসন্ততি লইয়া আল্লাহর জিকির কর।”  গ্রামবাংলার আমজনতা সেসময় বিশ্ববিদ্যালয় বুঝত না৷ স্কুল বুঝত৷ তাই রমেশ স্কুল বলেছেন। এভাবে– “সেই স্কুলের এমনি ধারা, বিচার নাইরে জোয়ান বুড়া সিনায় সিনায় লেখাপড়া শিক্ষা দিতাছে মাস্টার ও মাহিনা ছাড়া, এলমে লাদুনি ভরা কাগজ কলম দোয়াত কালির কী দরকার আছে? গাউছুল আজম মাইজভাণ্ডারি স্কুল খুইলাছে...” রমেশ শীল হিন্দু ছিলেন। মাইজভাণ্ডারি গান লিখেছে প্রায় ৩৫০। ‘আমি তোমায় ভালোবাসি, তুমি আমাকে দেখা দাও’ টাইপের না। মানে গানগুলো কেবল গান না। এলমে শরিয়ত ও তরিকতের গভীর থেকে গভীরতর রহস্য। সেখানে নামাজ, রোজা, হজ, জাকাত কোনটি নেই? যেমনটি লিখেছেন– “নামাজ রোজা কলমা আর, হজ ও জাকাত সার এই পাঁচ কাজে দাসগণে মশগুল রাখিও দয়াল ভাণ্ডারি ...

মসলকে আলা হযরত

বিষয়ঃ মসলকে আলা হযরতঃ একটি তাত্ত্বিক পর্যালোচনা। —মুহাম্মদ সৈয়দুল হক শিক্ষার্থী: জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া কামিল মাদরাসা। ফলপ্রার্থী: ফাযিল প্রথম বর্ষ ★প্রারম্ভিকাঃ  “তমসা ঘেরা এ দুনিয়ার মানুষ দেখিলো সেদিন পথ দীনের আকাশে উদিল যেদিন ‘মসলকে আলা হযরত’ বতুলতায় ভরা এ উপমহাদেশ পেয়েছে সেদিন দিশা রবিসম সে মসলক-গুণে কেটে গেছে অমানিশা।” যাবতীয় প্রশংসা সেঁ মহীয়ান সত্ত্বা আল্লাহর জন্য, যিনি আমাদেরকে শ্রেষ্ঠ নবির শ্রেষ্ঠ উম্মত হিসেবে কবুলের পাশাপাশি শ্রেষ্ঠ মুজাদ্দিদ ইমাম আলা হযরত (রহ.)’র মসলকে কবুল করেছেন। অগুনতি দরুদ ও সালামের নজরানা সেঁ দুজাহানের বাদশা নবি মুহাম্মদ (দ.) এর পাক কদমে, যাঁর অশেষ করুণায় তাঁরই নির্ধারিত যুগের মহান দিকপাল ইমাম আহমদ রেযা খাঁন (রা.)’র মসলকের শামীয়ানায় আমরা আশ্রিত। ইসলামের সকল যুগের সকল সূর্যসন্তানদের প্রতি সশ্রদ্ধ সালামপূর্বক স্মরণ করছি যাঁর পথ-মত তথা ’মসলক’ নিয়ে লিখতে বসেছি, যুগের সে মহান সংস্কারক, আঁধারে আলোকরশ্মি, দোজকের তাপদাহে জান্নাতি পবন, অথৈ সমুদ্রে জাহাজের কাণ্ডারিতুল্য ইমাম আহমদ রেযা খাঁঁন ব্রেলভী (রা.) কে, যিনি এ পৃথিবীতে না এলে ইসলাম-সূর্য এদ্দিনে হয়ত তাঁর...

সত্যের আলোকবর্তিকা

সত্যের আলোকবর্তিকা      (শুভ জন্মদিন) যুবক হন্য হয়ে ছোটে। কখনও নগরের পথে কখনও বা বনবাদাড়ে। ছুটতে ছুটতে পা ফুলে যায়। রক্ত ঝড়ে। হুট করে বসে। জিরোই। আবার ছোটে। কখনও উথাল-পাতাল লাফায় তো কখনও ধীরস্থির শান্তভাবে একদৃষ্টে তাকিয়ে রয় হযরতের রওজার কিংবা শূন্য আকাশে। বদ্ধঘরে একাকী দিন কাটে। নাওয়াখাওয়া নাই। হঠাৎ ঘর ছেড়ে কোথায় যে হারিয়ে যায়—খোঁজে পাওয়া মুশকিল। পৌষ-মাঘের শীতেও দিনের-পর-দিন পানিতে ডুবে থাকে। গ্রীষ্মের উত্তপ্ত সূর্যের দিকে চেয়ে থাকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা। কারে যেন খোঁজে? কী যেন চায়? আমার আমি কই? কিংবা আমি কে? কোথা থেকে এলাম? ভেতরে কে আছে? তাঁকে জানা চাই, সাক্ষাৎ প্রয়োজন, চেনা লাগবেই। শরীরের রক্ত ছোটে, চামড়া ছেঁড়ে, জরাজীর্ণ হয়—পণ আর ছোটে না৷ হযরতের রওজায় সামা চলতো। ‘সামা’তে হালকা হয়। কোন এক অদৃষ্টের শক্তিতে শরীর দোলে উঠে। কাঁপন ধরে। কখনোসখনো সে কাঁপন লাফে গিয়ে ঠেকে। সামা শেষে যুবক আসলেন। শুরু হলো মারামারি৷ ‘যাকে পাই তাকে খাই’ নিয়মে চলছে মারধর। “নামাজ কালাম নাই? এত লাফালাফি কীসের? আবার সাজদা মারা হচ্ছে?” ভক্তকুল লে-ছোট। দৌঁড়ে কূল পায় না। ‘পড়ি কী মরি’ করে বাবাকে জানায়। বাবা...