সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

ইনতেজার

ইনতেজার

-মুহাম্মদ সৈয়দুল হক


আসবে হুজুর আসবে

ঐ আসনেই বসবে

গায়বে কুকিল কন্ঠে

আহা! দারুণ ছন্দে!


দেখবে সবে দেখবে

দেখলে তবেই বুঝবে

সে কি সুরের জাদু!

আ!! কন্ঠে প্রচুর মধু!


শুনছো কি তার বয়ান

কাঁপে জমিন-আসমান

যেই না ধরে লুরি

অমনি সবে চিৎপঠাং

খায় যে গড়াগড়ি!

আহা! সে কি মধুর হাড়ি!


ম্যা ম্যা সুরে; ধুর ছাই-

মা মা সুরের গানটাতে না

ভীষণ পাষাণ মনটাও না

কেঁদে ভেঙ্গে পড়ে

আহা! তাহার মধুর স্বরে!


আমার হুজুর তোমার হুজুর

সাত জনমের সেরা হুজুর

যুগের কামেল আচ্ছা হুজুর

জুট নেহি হ্যায়; সাচ্ছা জরুর


ইছ বা-ত তো শুননা’ই হোগা

হুজুর কি বা-ত আচ্ছা’ই হোগা!

বলরে তবে আসবে কবে

মিলেমিশে আসবো সবে

রাত না দুপুর; সন্ধ্যাবেলা?

মাঠে নাকি শিউলীতলা?


‘‘সানডে রাতে দশটা ত্রিশ

আসবে হুজুর ‘হেলির ব্রীজ’’।

ষাটহাজার এক টাকা দিয়ে

করছি ভাড়া অফিস গিয়ে


এলাম তোড়া অ্যাডভান্স দিয়ে

বিশহাজারী চেকের গায়ে

করেছে সাইন হাত বুলিয়ে

আসবে সবে আসবে?

দিন-দুনিয়া দুই জাহানের

রতন সেথা মিলবে..........


~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~

রবিবার রাত ঠিক দশটা ত্রিশ।

ঘড়ির কাটা এখন একত্রিশের দিকে টকটক টকটক করে ঘুরছে............. মাইকে আজও বাজছে-


আসবে হুজুর আসবে

একটু পরেই পৌঁছবে

ধৈর্যধরে শান্ত হয়ে

বসুন সবে আসন লয়ে

এসেই যাবেন হুজুর;

চেয়ে আছে পথের পানে

হয়ে সবে বিভোর....

ইনতেজার.........

        ইনতেজার.........

                ইনতেজার.........

দশ পেরিয়ে এগারোটা

বারো’র বাকি এই খানিকটা

নাই হুজুরে দেখা-হদিস

তবে কি বাটপার?

আর কতকাল নিরব পাবলিক

করবে ইনতেজার........?


বাড়লো এদিক পেটের ক্ষুদা

বিগড়ে গ্যাছে মাথা-মোথা

নিরব পাবলিক সরব হয়ে

রাগের মাথায় গালফুলিয়ে

দিলো গালাগাল

সব শালারা চিটিং-বাটপার

জন্মেতে ভেজাল!


 

কতৃপক্ষের বেহাল দশা

পায়না ফোনে হুজুর-দিশা

আয়োজন আর আলোচনার

সবখানি ছারখার

মানুষ সবের সভাত্যাগের

করছে ইনতেজার......................


বলো- দেরি কত ওগো মাবুদ

রাত্রি পোহাবার।


[বিঃ দ্রঃ ইহা একখান রইম্যকবিতা😜 ছবির দৃশ্য; ধুত্তুরি কবিতার ভাইষ্য সম্পূর্ণ কাল্পনিক! কারো কোন প্রিয় হুজুরের লগে ইহার কোন মিল পাওয়া গ্যালে পাবলিক; ধেৎ লেখক কোনভাবে দায়ি থাকিবে না😂। বিনীত নিবেদক- আঁই😆]

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

ধর্মটা যে ধর্ম নেই

ধর্মটা যে ধর্ম নেই আর —মুহাম্মদ সৈয়দুল হক ধর্মটা যে ধর্ম নেই আর চর্ম কেবল আছে তা’য়, ধর্মমূলের কর্ম সকল দূর হয়েছে অচিন গাঁ’য়। জুব্বা টুপি পাগড়ি সবি বাড়ছে ক্রমে দিনে-দিন, মানুষগুলো হচ্ছে কেবল মুহাম্মদের ধর্মহীন (দরুদ)। তথ্যমতে নিত্য যারা গরীব-দুখীর ভাত মারে, গিয়ে দেখো ইদ-জুমাতে তারাই প্রথম কাতারে। যেই হুজুরে দিন-দুপুরে হালাল-হারাম বয়ান দেয়, দুই থেকে চার পয়সা পেলে ইমানখানাও বেইচা দেয়। পীর-সাধক আর ধর্মগুরুর বাড়ছে অভাব নিত্যদিন, পাত্র দেখে ছাত্র পোষে পীর নিজে বেশ ধর্মহীন। সহিহ হাদিস করছে হদিস দিনমজুর আর দিন-ফকির, মুহাদ্দিস আজ কলেজ-বালক ডাক্তারে-ও মুফাস্সির। প্রাথমিকের বাল-বালকে কাফের বলে রায় ছাড়ে, সোশ্যাল মামুর এই জগতে কার সাথে আর কে পারে! গাঞ্জা খেয়ে মঞ্চে উঠে পাঞ্জা দোলায় দেয় বয়ান, মোল্লা-মুনসির এই দশাতে যাবে কোথায় মুসলমান? কেউবা খেলে ফুটবল আবার কেউবা চড়ে রকেটে, দর্শকে কয় মারহাবা-জী হাদিয়া ভরুন পকেটে। সকাল থেকে রাত অবদি, রাত্র থেকে সকাল-তক, দীনটা ছিল সবটা-জুড়ে সবটা যেন থাকে হক। কর্ম যত ধর্ম সবি বলছে কুরআন মজিদে, অকর্মা...

পথে পথে-২

পথে পথে-২ ঢাকা থেকে মহানগর প্রভাতিতে চড়ে সোজা নারায়ণগঞ্জ বন্দরে পৌঁছলাম। সাথে আছে সদ্য প্রকাশিত ‘বাংলা কাব্যে নবী-বন্দনা এবং নজরুলের মুনশিয়ানা’র লেখক আবু সাইদ এবং স্নেহাস্পদ মুকিম। যাবো আল্লামা বাকি বিল্লাহ (রহ.)র প্রতিষ্ঠিত গাউছিয়া তৈয়বিয়া তাহেরিয়া মাদরাসায়। সামনে বুড়িগঙ্গা। পার হতে হবে। ঘাটে নৌকার হুড়োহুড়ি। দু-তিনজন মাঝি একসাথে ডাকাডাকি করছে—আয়েন হুজুর আয়েন। নিজেকে ভিআইপি ভিআইপি মনে হচ্ছে। পেছন পেছন আরও কিছু লোকের আগমন। মাঝিরা এবার আমাদের ছেড়ে ওদের ডাকছে। বুঝলাম—এ ঘাটে যারা আসে সবাই ভিআইপি। অতিরিক্ত ভাবসাব বাদ দিয়ে দ্রুত উঠে পড়লাম। উঠেই গান শুরু— “বাঁশখালিইইইই, মইশখালি      পাল উড়াইয়া দিলে সাম্পান গুরগুরাই টানে— হন হন যাবি আঁর সাম্পানে। কর্ণফুলীর মাঝি আঁই   নিয়ুম ভাটি-উজানে, হন হন যাবি আঁর সাম্পানে ও তোরা, হন হন যাবি আঁর সাম্পানে।” মুকিম রসিকতার সুরে বললো—“ভণ্ডামি বাদ দেন ভাই, এটা কর্ণফুলী না; বুড়িগঙ্গা।” তার পিঠে কষে এক চড় দিয়ে বললাম—আবে হালা, ঢাকাইয়ারা বুড়িগঙ্গা নিয়া না-লেইখলে মুই কী করবাম? আবু সাইদের মুখটা কেমন জানি ফ্যাকাসে দেখাচ্ছে। বাড়ি কুমিল্লা...

ধ্রুব

ধ্রুব ধ্রুব চা খাচ্ছিল। খেতে খেতে ভাবছে। ভাবতে ভাবতে খাচ্ছে। কোনটা আগে? ভাবনা না খাওয়া? খাওয়া না ভাবনা? আরে, এটা তো পান করার জিনিস; খাচ্ছে কেন? যাব্বাবা, কী যে মাথামুণ্ডু ভাবছে—কে জানে! পানকে খাওয়া ভেবে ভাবনার অপমান হয়েছে ঢের। আর না। এবার খাওয়ায় মনোযোগ দেয়া যাক। হে হে, মনোযোগ দেবার আগেই মনোভাব পাল্টে গেল? আবারো খাওয়া? ভাবনার মান-ইজ্জত একেবারে শেষ। কিন্তু না, এভাবে শেষ হতে পারে না। সে ভাবুক৷ ভাবনার অপমান সে হতে দেবে না। প্রয়োজনে পানকে যে-কোনো রীতিতে খাওয়া বানিয়ে ছাড়বে। আচ্ছা, চা’কে বিরিয়ানি ভাবলে কেমন হয়? হাঁ, বিরিয়ানি ভাবলেই হয়ে যায়। খাওয়া-পানের দ্বন্দ্ব শেষ। তা-ছাড়া চা আর বিরিয়ানির কালারটা কাছাকাছি। বিরিয়ানিতে ঝোল ঢালা হোক। মাখামাখি করে পান্তাভাত বানানো যাক। এবার পান্তাভাতের তরিকায় পুরুত পুরুত টানা যাক। আহা! সে কী স্বাদ, সে কী স্বাদ! ধ্রুব এবার চিৎকার দেয়—পৃথিবী বিরিয়ানির, পৃথিবী বিরিয়ানির। চায়ের কাপটা আর কাপ নেই। আকাশের বুকে সুসজ্জিত থালা। থালাটা আবার চাঁদের মতো। সে চাঁদে ঝিলিক মারছে। চাঁদটাকে একবার ডানহাতে, আবার বাঁহাতে। সেটাকে আবার কিছুক্ষণ পরপর মুখে পুরে লম্বা চুমুক। চু...