সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

তালাচাবি

------★তালাচাবি★-----

___মুহাম্মদ সৈয়দুল হক

````````````````````````````````````````````````````````

পোষ্ট টি পুরোটা পড়লে দুটা জিনিষ খুঁজে পাবেন। ১- আনন্দ, ২- বাস্তবতা।

শিরোনাম দেখে ‘অনাকাঙ্ক্ষিত ব্যক্তি সামনে পড়ার মত’ ঘাবড়ানোর কিছুই নাই। তালা আর চাবি নিয়ে একটু তালচামি করার মহৎ উদ্দেশ্যেই এই পোষ্টের আয়োজন। 


পোষ্টে মরিচ, মসলা, হলুদ, লবণের যথেষ্ট ঘাটতি থাকলেও পোষ্টটি পড়ার পর- মাছ ধরতে গিয়ে শামুক পাওয়ার মত হলেও কিছু একটা পাবেন বলে আশা করছি। বলছিলাম তালা আর চাবির কথা- এই তালাচাবির সাথে পরিচিত নয়, অসুস্থ মস্তিস্ক আর নির্বোধ শিশু ছাড়া এমন মনুষ্য খুঁজে পাওয়া খুবই মুশকিল। ঘরের দরজায় তালা, ড্রয়ের ঝাপে তালা, বক্সের মুখে তালা, ব্যগের শিখলে তালা, বিল্ডিংয়ের গেইটে তালা, গাড়িতে তালা-লরিতে তালা। এভাবে বলতে গেলে পৃথিবীটাই তালাময়! তার সাথে সাথে ভাগিনা চাবিটাও ঘুরে বেড়াই পৃথিবীর রন্দ্রে রন্দ্রে। 


বিদ্যুত আর লাইট-ফ্যানের মত এগুলো একটা ছাড়া অন্যটা আমার ন্যায় ‘বেকার’। চাবি হাঁরিয়ে বিপত্তিতে পড়েনি এমন জনতা কয়েক কোটিতে একজন পাওয়া যাবে কিনা, তা নিয়ে ‘মাহাত্না গান্দি’ও দারুণ দ্বিধান্বিত।

আর চাবি ব্যটার পলায়ণ মানেই তালা মামার অবস্থা চৌদ্দ টা! ‘ইট, লোহা, পাথর’ সবকিছু তার পোড়া কপালে একসাথে জুটতে দেরি হয়না মোটেও। 


‘‘তালাচাবি’’ বিশেষ ভাবে সম্মাণিত হয় নির্বাচন আসলেই। তখন তালা মামা আর ভাগ্নে চাবির সে কি কদর! ‘‘আমার তোমার মার্কা কী? তালাচাবি তালাচাবি’’ টাইপের স্লোগান কানের দুইহাত দূরে বাঁজতে থাকে প্রায় সময়! কি জানি! তখন মামা-ভাগ্নের ফিলিংসটার কি অসাভাবিক অবস্থা হয়! উভয়ের ফেইসবুক আইডি থাকলে নিশ্চয় আমাদের দেশের অতি স্মার্ট ছেলে-মেয়েদের মত ঘন্টার পর ঘন্টা স্ট্যাটাসের রোল পড়ে যেত- ‘ফিলিং ওয়াও’, ‘ফিলিং ফেন্টাস্টিক’, ’ফিলিং ইমোশনাল’ ইত্যাদি ইত্যাদি। বলতে পারেন ফিলিংসের ডিব্বা নিয়ে বসে থাকতেন- প্রার্থীদের অতি আদরের ‘‘তালাচাবি’’। 


তালা আর চাবি কিনতে গিয়ে আজ আমি যে বিশাল অভিজ্ঞতা লাভ করেছি, মূলতঃ তা থেকেই এই স্ট্যাটাসটা লিখতে অনুপ্রাণিত হলাম। হাটতে হাটতে এশিয়া খ্যাত দ্বীনি শিক্ষা নিকেতন- জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া মাদরাসা থেকে বিবিরহাট হয়ে হামজারবাগের দিকে কিছুটা অগ্রসর হতেই চোখে পড়লো একটি হার্ডওয়্যার এর দোকান। দোকানিকে বললাম মামা ড্রয়ের এর জন্য ছোট সাইজের তালা দেখান তো! কথা শেষ হতে দেরি, দোকানির তালা দিতে দেরি নাই। সামনে পাঁচ-ছয়টার মত তালা বিলিয়ে দিলেন। আমি বোকা মানুষ পরীক্ষা করার জন্য একটি তালা আর চাবি ঠিকটাক কাজ করছে কিনা দেখে নিলাম। না, ঠিকই আছে- কোন ডিষ্টার্ব নাই। ইশারাতেই খোলা-বাঁধা হচ্ছে। কিন্তু পরক্ষণেই চোখ কপালে! এ কি! এ তো দেখছি- ‘’বাংলাদেশ সরকার’’!!! এক চাবিতেই পাঁচ-ছয়টা তালা সবগুলো খুলে যাচ্ছে!!! কান্ড দেখে আক্কেল কাকার (দোকানি) গুডুম অবস্থা! দুজনেই বেশ বেকায়দায় পড়লুম। কোন কথা নাই, কিছুক্ষণের জন্য দুজন দুজনের দিকে তাকিয়ে! শেষমেষ তালা না নিয়েই ফেরত এলাম।


 এবার একটু উপরে যান। এক চাবিতে সব তালা খুলে যাওয়াটাকে ‘বাংলাদেশ সরকারের’ সাথে তুলনা করাতে অনেকের ইতিমধ্যে পেঠে ‘বেহজম' হওয়ার সম্ভাবনা। কেউ কেউ কথাটি গিলা’র মত সৎ সাহজ আটলান্টিকের তলের মত খুঁজে পাচ্ছেন না। তাই বিষয়টা একটু ক্লিয়ার করা দরকার! ওই চাবি আর বাংলাদেশ সরকারের বিশেষ সাদৃশ্য এই- বর্তমান সরকার এমন এক চাবি, যা দিয়ে জাতীয় পার্টি, জামাত, হেফাজত, বি.এন.পি জাতীয় তালাগুলো খুলে যাচ্ছে অনায়াসেই! একসাথে থেকেও বিরোধি দল- ‘জাপা’। স্বাধীনতা পদক পেলো- রাজাকার খ্যাত- ‘সাঈদি পুত্র’। ‘‘ঢাকা টু চিটাগং- নাস্তিক টু আস্তিক কান্ড হেফাজতের’’। বি.এন.পি’র বড় বড় নেতা- সরকারি দলে। সব মিলিয়ে তালা যেমনই হোক, এক চাবিতেই কেল্লাপতে! এত বিশাল গুণধর চাবিটির ভবিষ্যত তাই সুদূর প্রসারি! রাব্বুল আলামিন প্রসারত্ব দান করুন। 


তবে,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,, যে চাবি দিয়ে সব তালা খুলে যায়- অদূর ভবিষ্যতে জনতা নিজেদের নিরাপত্তার সার্থে- সেই চাবিটিকে খুঁজে মাটিতে ফুঁতে ফেলবে নাতো????????

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

ধর্মটা যে ধর্ম নেই

ধর্মটা যে ধর্ম নেই আর —মুহাম্মদ সৈয়দুল হক ধর্মটা যে ধর্ম নেই আর চর্ম কেবল আছে তা’য়, ধর্মমূলের কর্ম সকল দূর হয়েছে অচিন গাঁ’য়। জুব্বা টুপি পাগড়ি সবি বাড়ছে ক্রমে দিনে-দিন, মানুষগুলো হচ্ছে কেবল মুহাম্মদের ধর্মহীন (দরুদ)। তথ্যমতে নিত্য যারা গরীব-দুখীর ভাত মারে, গিয়ে দেখো ইদ-জুমাতে তারাই প্রথম কাতারে। যেই হুজুরে দিন-দুপুরে হালাল-হারাম বয়ান দেয়, দুই থেকে চার পয়সা পেলে ইমানখানাও বেইচা দেয়। পীর-সাধক আর ধর্মগুরুর বাড়ছে অভাব নিত্যদিন, পাত্র দেখে ছাত্র পোষে পীর নিজে বেশ ধর্মহীন। সহিহ হাদিস করছে হদিস দিনমজুর আর দিন-ফকির, মুহাদ্দিস আজ কলেজ-বালক ডাক্তারে-ও মুফাস্সির। প্রাথমিকের বাল-বালকে কাফের বলে রায় ছাড়ে, সোশ্যাল মামুর এই জগতে কার সাথে আর কে পারে! গাঞ্জা খেয়ে মঞ্চে উঠে পাঞ্জা দোলায় দেয় বয়ান, মোল্লা-মুনসির এই দশাতে যাবে কোথায় মুসলমান? কেউবা খেলে ফুটবল আবার কেউবা চড়ে রকেটে, দর্শকে কয় মারহাবা-জী হাদিয়া ভরুন পকেটে। সকাল থেকে রাত অবদি, রাত্র থেকে সকাল-তক, দীনটা ছিল সবটা-জুড়ে সবটা যেন থাকে হক। কর্ম যত ধর্ম সবি বলছে কুরআন মজিদে, অকর্মা...

পথে পথে-২

পথে পথে-২ ঢাকা থেকে মহানগর প্রভাতিতে চড়ে সোজা নারায়ণগঞ্জ বন্দরে পৌঁছলাম। সাথে আছে সদ্য প্রকাশিত ‘বাংলা কাব্যে নবী-বন্দনা এবং নজরুলের মুনশিয়ানা’র লেখক আবু সাইদ এবং স্নেহাস্পদ মুকিম। যাবো আল্লামা বাকি বিল্লাহ (রহ.)র প্রতিষ্ঠিত গাউছিয়া তৈয়বিয়া তাহেরিয়া মাদরাসায়। সামনে বুড়িগঙ্গা। পার হতে হবে। ঘাটে নৌকার হুড়োহুড়ি। দু-তিনজন মাঝি একসাথে ডাকাডাকি করছে—আয়েন হুজুর আয়েন। নিজেকে ভিআইপি ভিআইপি মনে হচ্ছে। পেছন পেছন আরও কিছু লোকের আগমন। মাঝিরা এবার আমাদের ছেড়ে ওদের ডাকছে। বুঝলাম—এ ঘাটে যারা আসে সবাই ভিআইপি। অতিরিক্ত ভাবসাব বাদ দিয়ে দ্রুত উঠে পড়লাম। উঠেই গান শুরু— “বাঁশখালিইইইই, মইশখালি      পাল উড়াইয়া দিলে সাম্পান গুরগুরাই টানে— হন হন যাবি আঁর সাম্পানে। কর্ণফুলীর মাঝি আঁই   নিয়ুম ভাটি-উজানে, হন হন যাবি আঁর সাম্পানে ও তোরা, হন হন যাবি আঁর সাম্পানে।” মুকিম রসিকতার সুরে বললো—“ভণ্ডামি বাদ দেন ভাই, এটা কর্ণফুলী না; বুড়িগঙ্গা।” তার পিঠে কষে এক চড় দিয়ে বললাম—আবে হালা, ঢাকাইয়ারা বুড়িগঙ্গা নিয়া না-লেইখলে মুই কী করবাম? আবু সাইদের মুখটা কেমন জানি ফ্যাকাসে দেখাচ্ছে। বাড়ি কুমিল্লা...

ধ্রুব

ধ্রুব ধ্রুব চা খাচ্ছিল। খেতে খেতে ভাবছে। ভাবতে ভাবতে খাচ্ছে। কোনটা আগে? ভাবনা না খাওয়া? খাওয়া না ভাবনা? আরে, এটা তো পান করার জিনিস; খাচ্ছে কেন? যাব্বাবা, কী যে মাথামুণ্ডু ভাবছে—কে জানে! পানকে খাওয়া ভেবে ভাবনার অপমান হয়েছে ঢের। আর না। এবার খাওয়ায় মনোযোগ দেয়া যাক। হে হে, মনোযোগ দেবার আগেই মনোভাব পাল্টে গেল? আবারো খাওয়া? ভাবনার মান-ইজ্জত একেবারে শেষ। কিন্তু না, এভাবে শেষ হতে পারে না। সে ভাবুক৷ ভাবনার অপমান সে হতে দেবে না। প্রয়োজনে পানকে যে-কোনো রীতিতে খাওয়া বানিয়ে ছাড়বে। আচ্ছা, চা’কে বিরিয়ানি ভাবলে কেমন হয়? হাঁ, বিরিয়ানি ভাবলেই হয়ে যায়। খাওয়া-পানের দ্বন্দ্ব শেষ। তা-ছাড়া চা আর বিরিয়ানির কালারটা কাছাকাছি। বিরিয়ানিতে ঝোল ঢালা হোক। মাখামাখি করে পান্তাভাত বানানো যাক। এবার পান্তাভাতের তরিকায় পুরুত পুরুত টানা যাক। আহা! সে কী স্বাদ, সে কী স্বাদ! ধ্রুব এবার চিৎকার দেয়—পৃথিবী বিরিয়ানির, পৃথিবী বিরিয়ানির। চায়ের কাপটা আর কাপ নেই। আকাশের বুকে সুসজ্জিত থালা। থালাটা আবার চাঁদের মতো। সে চাঁদে ঝিলিক মারছে। চাঁদটাকে একবার ডানহাতে, আবার বাঁহাতে। সেটাকে আবার কিছুক্ষণ পরপর মুখে পুরে লম্বা চুমুক। চু...