সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

নামায

অতৃপ্ত মনে শান্তির খোঁজে জায়নামাযে বিচরণ। করেই দেখুন না সেথা কত তৃপ্তি, কত শান্তি মিশে আছে। জায়নামাযের প্রতিটি সুতোই মেশক-আম্বরের অতুল গন্ধ। জাস্ট নিয়ে দেখুন, স্বর্গসুখ ওখানেই।


=>>নামায<<=

মুহাম্মদ সৈয়দুল হক


সে কখন ডেকেছে মুয়াজ্জিন

বেলা হয়ে গেছে ঢের

ঘুমের ঘোরে প্রভাত এলো কবে

পেলাম না তার টের।


সারা রাতজুড়ে চ্যাটিঙয়ে ব্যস্ত

ফোনালাপের কি ধুম!

এই তিনটে কি চারটে বাজে এলো

চোখের কোণায় ঘুম।


দশ পেরিয়ে এগারোটা বাজলো

নাক ডাকছি তখনো

সেই যে গিয়েছি ঘুমের রাজ্যে

ফেরা হয় নি এখনো।


ফেসবুক ইমো ভাইবারে গেলো

ঘণ্টাখানেক আরো

এপাশ-ওপাশ করতে করতে

বাজিয়ে দিলাম বারো।


ঢেকে উঠে ফের ‘মসজিদ মাঝি’

সুমধুর ধ্বনী মেখে

‘‘লা-শরিক আল্লাহ মহান-শ্রেষ্ঠ

পাঠালো মুহাম্মাদকে (দরুদ)


এসো এসো নামায কায়েম-পথে

কল্যাণের মহড়ায়

লা-শরিক আল্লাহ মহান-শ্রেষ্ঠ

এ বিশাল বসুধায়’’।


গা নাড়া দিয়ে উঠে পড়ি এবার

থাকি কত শুয়ে আর

কোনমতে গায়ে পানি ঢেলে দিয়ে

করে নিই পানাহার।


ব্যস্ত হয়ে পড়ি আবারো আমি

সোশ্যাল এ দুনিয়ায়

নানান অকাজে বহুরূপি সাজে

সময় গড়িয়ে যায়।


খেলতে খেলতে কবে যে আসর

বাদ পড়ে গেছে হায়!

পশ্চিমে সূর্য ডুবে গেলো কবে

সে খেয়াল করিনাই!


ফজর জোহর মাগরিব আসর

চলে গিয়ে হলো রাত

আবারো মুয়াজিন ঢাকছে জোরে

হবে ইশার জামাত।


ওরে অকৃতজ্ঞ মদন, ওরে

বদনসিবের দল

সকল কর্মে তালা মেরে ওরে

চল মসজিদে চল।


অজু্ করে চল জামাতে দাঁড়ায়

কাঁধে কাঁধে সফ বেঁধে

ঘোষণা করবো ‘আল্লাহ মহান’

মন থেকে কেঁদে কেঁদে।


সুরা ফাতিহার অমীয় বাণী

পড়বো মনটা খোলে

হৃদ-আবেগের ঝড় বয়ে যাক

মজিদ-ছাদের তলে।


‘‘কীর্তন সব জগৎস্বামীর

যেঁ দয়ালু-দয়াবান

বিচার দিনের রাজাধীরাজ হে

চাই দয়ার সোপান।


সরল-সঠিক পথের দিশারি

দাওনা হে মহীয়ান!

পুণ্যবান আর প্রিয়জনেরা

যেই পথে চলমান।


অভাজন যারা চির পথহারা

ওপথ চাইনা আমি

রুষ্ট-ভ্রষ্ট অভিশপ্ত পথে

করো না কভু গামি।’’


রুকু-সিজদায় আহাজারি করে

বলবোরে একসুরে

‘পবিত্র সত্ত্বা প্রভু মহিয়ান

অশুচি ছুঁয় না তাঁরে’।


কীর্তন ভরা তাশাহুদ পাঠে

প্রভুর গুণের সাথে

সালামি দেব ইশত স্মরিয়া

নবি-অলির কদমেতে।


ডানে-বামে সালাম ফিরায়ে পরে

তুলে দেব দুইহাত

দু’চোখ ছিড়ে দেব অশ্রু ছেড়ে 

কেঁদে কেঁদে মোনাজাত।


‘‘ওগো মহামহিম আল্লাহ শুনো

করেছি হাজার পাপ

তোমার দ্বারে তুলেছি দুইহাত

করে দাও প্রভু মাফ।


তুমি না করলে করবে কে আর

নাইকো দ্বিতীয় প্রভু

দয়া দিও ওগো দয়াল স্রষ্টা

শাস্তি চাই না কভু।


রেখো দাসে সদা নামাযে মত্ত

বিপথ থেকে বাঁচিয়ে

যাই যদি কভু ভুলপথে তবু

ফিরায়ো তব আলয়ে।


রাত ৮টা। গ্রামালয়।

১২জুলাই-১৮, বিষুদবার।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

ধর্মটা যে ধর্ম নেই

ধর্মটা যে ধর্ম নেই আর —মুহাম্মদ সৈয়দুল হক ধর্মটা যে ধর্ম নেই আর চর্ম কেবল আছে তা’য়, ধর্মমূলের কর্ম সকল দূর হয়েছে অচিন গাঁ’য়। জুব্বা টুপি পাগড়ি সবি বাড়ছে ক্রমে দিনে-দিন, মানুষগুলো হচ্ছে কেবল মুহাম্মদের ধর্মহীন (দরুদ)। তথ্যমতে নিত্য যারা গরীব-দুখীর ভাত মারে, গিয়ে দেখো ইদ-জুমাতে তারাই প্রথম কাতারে। যেই হুজুরে দিন-দুপুরে হালাল-হারাম বয়ান দেয়, দুই থেকে চার পয়সা পেলে ইমানখানাও বেইচা দেয়। পীর-সাধক আর ধর্মগুরুর বাড়ছে অভাব নিত্যদিন, পাত্র দেখে ছাত্র পোষে পীর নিজে বেশ ধর্মহীন। সহিহ হাদিস করছে হদিস দিনমজুর আর দিন-ফকির, মুহাদ্দিস আজ কলেজ-বালক ডাক্তারে-ও মুফাস্সির। প্রাথমিকের বাল-বালকে কাফের বলে রায় ছাড়ে, সোশ্যাল মামুর এই জগতে কার সাথে আর কে পারে! গাঞ্জা খেয়ে মঞ্চে উঠে পাঞ্জা দোলায় দেয় বয়ান, মোল্লা-মুনসির এই দশাতে যাবে কোথায় মুসলমান? কেউবা খেলে ফুটবল আবার কেউবা চড়ে রকেটে, দর্শকে কয় মারহাবা-জী হাদিয়া ভরুন পকেটে। সকাল থেকে রাত অবদি, রাত্র থেকে সকাল-তক, দীনটা ছিল সবটা-জুড়ে সবটা যেন থাকে হক। কর্ম যত ধর্ম সবি বলছে কুরআন মজিদে, অকর্মা...

পথে পথে-২

পথে পথে-২ ঢাকা থেকে মহানগর প্রভাতিতে চড়ে সোজা নারায়ণগঞ্জ বন্দরে পৌঁছলাম। সাথে আছে সদ্য প্রকাশিত ‘বাংলা কাব্যে নবী-বন্দনা এবং নজরুলের মুনশিয়ানা’র লেখক আবু সাইদ এবং স্নেহাস্পদ মুকিম। যাবো আল্লামা বাকি বিল্লাহ (রহ.)র প্রতিষ্ঠিত গাউছিয়া তৈয়বিয়া তাহেরিয়া মাদরাসায়। সামনে বুড়িগঙ্গা। পার হতে হবে। ঘাটে নৌকার হুড়োহুড়ি। দু-তিনজন মাঝি একসাথে ডাকাডাকি করছে—আয়েন হুজুর আয়েন। নিজেকে ভিআইপি ভিআইপি মনে হচ্ছে। পেছন পেছন আরও কিছু লোকের আগমন। মাঝিরা এবার আমাদের ছেড়ে ওদের ডাকছে। বুঝলাম—এ ঘাটে যারা আসে সবাই ভিআইপি। অতিরিক্ত ভাবসাব বাদ দিয়ে দ্রুত উঠে পড়লাম। উঠেই গান শুরু— “বাঁশখালিইইইই, মইশখালি      পাল উড়াইয়া দিলে সাম্পান গুরগুরাই টানে— হন হন যাবি আঁর সাম্পানে। কর্ণফুলীর মাঝি আঁই   নিয়ুম ভাটি-উজানে, হন হন যাবি আঁর সাম্পানে ও তোরা, হন হন যাবি আঁর সাম্পানে।” মুকিম রসিকতার সুরে বললো—“ভণ্ডামি বাদ দেন ভাই, এটা কর্ণফুলী না; বুড়িগঙ্গা।” তার পিঠে কষে এক চড় দিয়ে বললাম—আবে হালা, ঢাকাইয়ারা বুড়িগঙ্গা নিয়া না-লেইখলে মুই কী করবাম? আবু সাইদের মুখটা কেমন জানি ফ্যাকাসে দেখাচ্ছে। বাড়ি কুমিল্লা...

ধ্রুব

ধ্রুব ধ্রুব চা খাচ্ছিল। খেতে খেতে ভাবছে। ভাবতে ভাবতে খাচ্ছে। কোনটা আগে? ভাবনা না খাওয়া? খাওয়া না ভাবনা? আরে, এটা তো পান করার জিনিস; খাচ্ছে কেন? যাব্বাবা, কী যে মাথামুণ্ডু ভাবছে—কে জানে! পানকে খাওয়া ভেবে ভাবনার অপমান হয়েছে ঢের। আর না। এবার খাওয়ায় মনোযোগ দেয়া যাক। হে হে, মনোযোগ দেবার আগেই মনোভাব পাল্টে গেল? আবারো খাওয়া? ভাবনার মান-ইজ্জত একেবারে শেষ। কিন্তু না, এভাবে শেষ হতে পারে না। সে ভাবুক৷ ভাবনার অপমান সে হতে দেবে না। প্রয়োজনে পানকে যে-কোনো রীতিতে খাওয়া বানিয়ে ছাড়বে। আচ্ছা, চা’কে বিরিয়ানি ভাবলে কেমন হয়? হাঁ, বিরিয়ানি ভাবলেই হয়ে যায়। খাওয়া-পানের দ্বন্দ্ব শেষ। তা-ছাড়া চা আর বিরিয়ানির কালারটা কাছাকাছি। বিরিয়ানিতে ঝোল ঢালা হোক। মাখামাখি করে পান্তাভাত বানানো যাক। এবার পান্তাভাতের তরিকায় পুরুত পুরুত টানা যাক। আহা! সে কী স্বাদ, সে কী স্বাদ! ধ্রুব এবার চিৎকার দেয়—পৃথিবী বিরিয়ানির, পৃথিবী বিরিয়ানির। চায়ের কাপটা আর কাপ নেই। আকাশের বুকে সুসজ্জিত থালা। থালাটা আবার চাঁদের মতো। সে চাঁদে ঝিলিক মারছে। চাঁদটাকে একবার ডানহাতে, আবার বাঁহাতে। সেটাকে আবার কিছুক্ষণ পরপর মুখে পুরে লম্বা চুমুক। চু...