সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

কুরবান

পড়ুন এবং শেয়ার করুন। কুরবানির ইতিহাস, ঐতিহ্য, ভবিষ্যত ছন্দে বাঁধার ক্ষুদ্র প্রয়াস-


★কুরবান★

মুহাম্মদ সৈয়দুল হক

~~~~~~~~~~~~~~~~~~

আসছে ওরে ঐ ফেরারি আহ্বান 

খোদারি তরে দাও প্রিয়কে কোরবান


ভাবে ইবরাহীমে মগনো হয়ে তাই 

দিবো কি খোদাকে, কি তাঁকে দেয়া যায়।


অতুলের তুলনে, কিছু নেই ভূবনে 

আদেশিলো যা বিধি মোর সপনে।


খামার ভরা বকরি ছিলো

সব কটাকে জবেহ দিলো

ফের খলিলে স্বপ্নে দেখে- 

ঠিক আগে যা দেখেছিলো।


হায় হায় হায় হলো একি!

কাকে ফেলে কাকে রাখি

কার উপরে চালায় ছুরি

পায়না ভেবে বুজে আঁখি


শির কাটলো হাজার উটের 

সন্তুষ্ঠে মহান রবের

সপন জগৎ ফের নাড়া দেয় 

কোরবানি দাও প্রিয় বৎসের।


ভাবছে ওরে ওই খলিলে রাব্বানার 

চাহে যা পরওয়ার, কি এমন আছে তাঁর


ভাবে, ভাবে, ভাবে... ভেবে যে পাই না 

কেমনে মিটে হায় মর্মতল যাতনা


অমনি হঠাৎ সে দেখলো সহসা 

বাচাধন আহারে খেলিছে ধিন তা।


পেয়ে গেলো প্রিয় বাচু

কাম্য যাহা নিলো পিছু

আপন পুত্র সন্তান ছে-

প্রিয় তো আর হয়না কিছু


হাজেরা ও! আ-ছেরা ধন

দাওনা দোলা সাজায় এখন 

ঈসমাইল মোর খোদার রাহে 

কোরবানি হোক মনের মতন।


মা সাজিয়ে দিচ্ছে তাঁকে 

খোদা কবুল করলো যাঁকে

বাপ নিয়ে যায় কুরবান দিতে 

অতুল দৃশ্য ধরার বুকে।


জগতের মা ও বাপ, দেখো গো মহিনা 

কিরূপে কি দিয়ে পেতে হয় রাব্বানা


শিখো গো শিখে নাও বিভূরো ঈসমাইল

আত্মার কোরবানি জিহাদের শামিল


খোদারো তরে জান, দিলে গো কোরবান 

ভুবনের ভূতলেও করবে সম্মান।


ওরে দেখ-  মরুর বুকে ময়ূর গাড়ি

                  স্ব আনন্দে দিচ্ছে পাড়ি 

                  যাত্রা কালের খুশির মাত্রা 

                  তাকায় দুজন আড়াআড়ি।


শয়তান-     জন্ম থেকে জন্মান্তরে 

                   শত্রু যে জন ঘরে বাইরে

                   পথের পিছু নিলো সে জন

                   ধোকা দিতে খোদ নবীরে


                  পয়লা গেলো পিতার ধারে

                   জোর গলায়ে কেঁদে মরে

                   মিছে সপ্নে করতেছো কি 

                   অবুঝ-নাদান সন্তানেরে।


ভাবে নবী ইবরাহীমে

কাণ্ড একি এই মরমে

মা’র চেয়ে যে মাসির দরদ 

উৎলে উঠলো পুরো ধমে।


নবুয়তি থাপর খেয়ে

মারেফতি ফাপর লয়ে 

পুত্রধারে গিয়ে বলে

শোনরে বাচা শোন দাড়িয়ে


বাবা তোমার হাবা-বোবা

খোদার সপ্নে হয়ে শোবা

জবেহ তোমায় করবে মনু

এবার কী ঐ পথে যাবা?


                নবীজাদা নবী হলে

                কে তাঁরে আর টেপে ফেলে?

বলে-        খোদার রাহে দেয় যদি বাপ 

                দেবো মাথা হেলে-দোলে।


চলেছে দেখো ওই খোদার দুই মিতা 

দিবে শির পুত্রে, কাটবে তাঁর পিতা


এ কেমন চাওয়া তোর মালিক পরোয়ার 

এ কেমন ইমতেহান করলে গো সওয়ার


পারবে কি ইবরাহীম, অথবা ইসমাঈল  

হবে কি দুজনে বিজয়ের শামিল।


ওই যে ওই এলো সে পবিত্র ভুমি যে 

কুরবানি হতে খোদ নবীজি এলো যে।


হয় যদি গো চোখাচোখি 

বাপ-বেটাতে মাখামাখি

কেমনে তবে কাটবে মাথা 

পুত্রের চোখে দুচোখ রাখি


তাইতো নবী ইবরাহীমে

দুচোখ বাঁধে পুরো দমে

পুত্র চোখও বেঁধে দিলো

শির থাকতে দেহ-ধামে


খলিল চালায় সলিল ছুরি 

কাটেনা হায় গলার দড়ি

ফের ধাঁধাঁতে পড়লো খলিল 

ভাবে এখন কি যে করি!


রাগের বসে ছুড়লো ছুরা

দূরে ছিলো পাথর মরা

এক আঘাতেই খণ্ডিত দুই 

আজব-অদ্ভুত এই মহড়া।


প্রশ্ন ছিলো এই-

ও মরারে মরার ছোরা

কাটিস না কেন হতচ্ছড়া

পাথর কাটলে মানুষ কেন

কাটতে গিয়ে এত লেড়া?


খোদারো কুদরত বুঝা যে বড় দায় 

প্রাণহীন জড়েতেও জবানি শোনা যায়-


‘আদেশে খলিলে, বাধা দেয় জলিলে 

কিরূপে কাটি ছের ইসমাঈল ছাওয়ালে’


এ কি হায়, ও কি বাত! করোরে তলোয়ার 

তবে কেন আদেশিল মালিকে সরোয়ার?


হাসেন মুনিব পাক পরোয়ার 

বলেন- ওগো নবী আমার

পাশের খাতায় উঠলেরে নাম 

পরীক্ষার আর কিবা দরকার?


ঐ যে আসে দুম্বা নেমে 

কোরবানি দাও আপন মনে

ছুরি এবার করলো জবাই 

‘আল্লাহু আকবার’ নামে।


খুশি নবী খোদার মিতা 

কৃতকার্য পুত্র-পিতা

তারচে বেশি খুশি ওরে 

লা-মকানের ঐ বিধাতা।


দেরে দে তোরা দে, দে তোরা দিয়ে দে 

আল্লার রাহেতে কুরবানি দিয়ে দে


এক আল্লার নামেতে তোরা সব ছুরি ধর 

দে ছুরি চালিয়ে- ‘আল্লাহু আকবর’


ঝুকা তোর শিরকান, তুই পুরো ঝুকে যা

এক আল্লার প্রেমেতে যারে যা লুটে যা


বকরি, দুম্বা, গরু দে 

মোটা-তাজা মেষও দে

পারলে ওরে উস্ট্র দে

দেরে তোরা কুরবানি দে


শোন-   না দিয়ে তোর ভেতর পশু

             দিসনারে তুই যত কিছু

             হবে না তোর সিদ্ধি-সাধন

             করিস যত কাঁচুমাচু।


তাইতো বলি দেরে দে

আপনাকে ফের জবেহ দে 

আত্মগৌরব-আমিত্বকে

খোদার কাছে জমা দে।


শুনিসনারে দুষ্টু কথন

বলে যারা মনের মতন 

গো-বেচারার গো বাঁচাতে 

জীবের প্রেমের দোহায়-কেতন


দেরে তোরা ছুড়ে দে

তাদের মুখে মেরে দে

তাজা খানিক থুথু দে 

বৃক্ষতেও প্রাণ দেখায় দে।


জগতের মুসলমান!

নে হাতে তলোয়ার,বুকে বাঁধ পাঁজরা 

জালিমের বাঁকা শির করে দে ঝাঁঝরা


গেলে যাক ধড়-প্রাণ, নাহি দে আমামা 

বাজিয়ে তোল আবার বদরের দামামা


ছুড়ে দে তির আবার মায়ানমার-ফিলিস্তান 

বাঁচাতে মুসলমান, দিয়ে যা কুরবান।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

ধর্মটা যে ধর্ম নেই

ধর্মটা যে ধর্ম নেই আর —মুহাম্মদ সৈয়দুল হক ধর্মটা যে ধর্ম নেই আর চর্ম কেবল আছে তা’য়, ধর্মমূলের কর্ম সকল দূর হয়েছে অচিন গাঁ’য়। জুব্বা টুপি পাগড়ি সবি বাড়ছে ক্রমে দিনে-দিন, মানুষগুলো হচ্ছে কেবল মুহাম্মদের ধর্মহীন (দরুদ)। তথ্যমতে নিত্য যারা গরীব-দুখীর ভাত মারে, গিয়ে দেখো ইদ-জুমাতে তারাই প্রথম কাতারে। যেই হুজুরে দিন-দুপুরে হালাল-হারাম বয়ান দেয়, দুই থেকে চার পয়সা পেলে ইমানখানাও বেইচা দেয়। পীর-সাধক আর ধর্মগুরুর বাড়ছে অভাব নিত্যদিন, পাত্র দেখে ছাত্র পোষে পীর নিজে বেশ ধর্মহীন। সহিহ হাদিস করছে হদিস দিনমজুর আর দিন-ফকির, মুহাদ্দিস আজ কলেজ-বালক ডাক্তারে-ও মুফাস্সির। প্রাথমিকের বাল-বালকে কাফের বলে রায় ছাড়ে, সোশ্যাল মামুর এই জগতে কার সাথে আর কে পারে! গাঞ্জা খেয়ে মঞ্চে উঠে পাঞ্জা দোলায় দেয় বয়ান, মোল্লা-মুনসির এই দশাতে যাবে কোথায় মুসলমান? কেউবা খেলে ফুটবল আবার কেউবা চড়ে রকেটে, দর্শকে কয় মারহাবা-জী হাদিয়া ভরুন পকেটে। সকাল থেকে রাত অবদি, রাত্র থেকে সকাল-তক, দীনটা ছিল সবটা-জুড়ে সবটা যেন থাকে হক। কর্ম যত ধর্ম সবি বলছে কুরআন মজিদে, অকর্মা...

পথে পথে-২

পথে পথে-২ ঢাকা থেকে মহানগর প্রভাতিতে চড়ে সোজা নারায়ণগঞ্জ বন্দরে পৌঁছলাম। সাথে আছে সদ্য প্রকাশিত ‘বাংলা কাব্যে নবী-বন্দনা এবং নজরুলের মুনশিয়ানা’র লেখক আবু সাইদ এবং স্নেহাস্পদ মুকিম। যাবো আল্লামা বাকি বিল্লাহ (রহ.)র প্রতিষ্ঠিত গাউছিয়া তৈয়বিয়া তাহেরিয়া মাদরাসায়। সামনে বুড়িগঙ্গা। পার হতে হবে। ঘাটে নৌকার হুড়োহুড়ি। দু-তিনজন মাঝি একসাথে ডাকাডাকি করছে—আয়েন হুজুর আয়েন। নিজেকে ভিআইপি ভিআইপি মনে হচ্ছে। পেছন পেছন আরও কিছু লোকের আগমন। মাঝিরা এবার আমাদের ছেড়ে ওদের ডাকছে। বুঝলাম—এ ঘাটে যারা আসে সবাই ভিআইপি। অতিরিক্ত ভাবসাব বাদ দিয়ে দ্রুত উঠে পড়লাম। উঠেই গান শুরু— “বাঁশখালিইইইই, মইশখালি      পাল উড়াইয়া দিলে সাম্পান গুরগুরাই টানে— হন হন যাবি আঁর সাম্পানে। কর্ণফুলীর মাঝি আঁই   নিয়ুম ভাটি-উজানে, হন হন যাবি আঁর সাম্পানে ও তোরা, হন হন যাবি আঁর সাম্পানে।” মুকিম রসিকতার সুরে বললো—“ভণ্ডামি বাদ দেন ভাই, এটা কর্ণফুলী না; বুড়িগঙ্গা।” তার পিঠে কষে এক চড় দিয়ে বললাম—আবে হালা, ঢাকাইয়ারা বুড়িগঙ্গা নিয়া না-লেইখলে মুই কী করবাম? আবু সাইদের মুখটা কেমন জানি ফ্যাকাসে দেখাচ্ছে। বাড়ি কুমিল্লা...

ধ্রুব

ধ্রুব ধ্রুব চা খাচ্ছিল। খেতে খেতে ভাবছে। ভাবতে ভাবতে খাচ্ছে। কোনটা আগে? ভাবনা না খাওয়া? খাওয়া না ভাবনা? আরে, এটা তো পান করার জিনিস; খাচ্ছে কেন? যাব্বাবা, কী যে মাথামুণ্ডু ভাবছে—কে জানে! পানকে খাওয়া ভেবে ভাবনার অপমান হয়েছে ঢের। আর না। এবার খাওয়ায় মনোযোগ দেয়া যাক। হে হে, মনোযোগ দেবার আগেই মনোভাব পাল্টে গেল? আবারো খাওয়া? ভাবনার মান-ইজ্জত একেবারে শেষ। কিন্তু না, এভাবে শেষ হতে পারে না। সে ভাবুক৷ ভাবনার অপমান সে হতে দেবে না। প্রয়োজনে পানকে যে-কোনো রীতিতে খাওয়া বানিয়ে ছাড়বে। আচ্ছা, চা’কে বিরিয়ানি ভাবলে কেমন হয়? হাঁ, বিরিয়ানি ভাবলেই হয়ে যায়। খাওয়া-পানের দ্বন্দ্ব শেষ। তা-ছাড়া চা আর বিরিয়ানির কালারটা কাছাকাছি। বিরিয়ানিতে ঝোল ঢালা হোক। মাখামাখি করে পান্তাভাত বানানো যাক। এবার পান্তাভাতের তরিকায় পুরুত পুরুত টানা যাক। আহা! সে কী স্বাদ, সে কী স্বাদ! ধ্রুব এবার চিৎকার দেয়—পৃথিবী বিরিয়ানির, পৃথিবী বিরিয়ানির। চায়ের কাপটা আর কাপ নেই। আকাশের বুকে সুসজ্জিত থালা। থালাটা আবার চাঁদের মতো। সে চাঁদে ঝিলিক মারছে। চাঁদটাকে একবার ডানহাতে, আবার বাঁহাতে। সেটাকে আবার কিছুক্ষণ পরপর মুখে পুরে লম্বা চুমুক। চু...