সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

ফোরাতেন ক্রন্দনরোল

ফোরাতের ক্রন্দনরোল

                          মুহাম্মদ সৈয়দুল হক

মোহররম!

বেদনা ভরা বাণী নিয়ে তোমার আগমন

সত্যের জয় আর মিথ্যার পরাজয়ে তোমারি গঠন।


কানে বাজে ঐ ফোরাত তীরের ক্রন্দন রোল

আসগর সমেত হোসাইন যেথায় কেঁদেছিল নির্ভুল!


হাঁকে হোসাইন,

‘‘ধর্ম বর্ণ গোত্র ছাড়ি শুধু মনুষ্যত্বের আহ্বান

কোলের শিশু মরলে হবে সব জাতির অপমান


                                  দাওনা তোমরা তাই,

শত্রুতা সব আমার সঙ্গে আসগর সেথা নাই।

মোর ত্বরে নহে, নহে মোর পুত্রের ত্বরে

     এ শুধু এক ছোট্ট শিশুর জীবন বাচার ত্বরে

দাওনা ওহে একটু বারি, মাগি তব ধারে।’’


পোড়া কপাল কিন্তু হায়!

শান্তির বানী কি আর পৌঁছে এজিদি কলিজায়?

                                     পানি চাও? 

তবে নাও দিতেছি লুটে যদি তা পাও!

ভুলিল তাহারা মানবতা যত ছিল এই দুনিয়ায়

বারির বদলে তীর মিলিল হোসাইনের বাদশায়!

নিথর নিস্তব্ধ ভুবন হাহাকারে তাই মরে

          দেখেনি কো আগে কখনো এহেন নিষ্টুরেরে!


ছুটে চলে ফের হোসাইন শহর বানুর ঘর

   হাতে তার আপন পুত্র জান্নাতি সে বর


দুর থেকে ঐ মা জননী আশায় বাঁধে বুক

দুলাল তাহার পানি পিয়ে আজ পাবে একটু সুখ!


যতই যা হোক এজিদরা কি আর অতটাই হবে পাষাণ?

কোলের শিশুর আকুতিতে হয়তো গলবে তাদের প্রাণ!


জল্পনা আর কল্পনা সব মিছে হয় একটু পর

দেখল যখন শিশু আসগরের রক্তমাখা ধড়!


পাথর হয়ে দাড়ায়ে থাকে  কথার নাই সে বল

দু-চোখ বেয়ে ঝড়তে থাকে অমানিশির জল।


বলল হোসাইন, 

‘‘নাও কোলে তব রাজপুত্র আনিছি তারে পিয়ে

উদ্ধারিল আমায় সে যে, স্বর্গ অমৃত্ খেয়ে।


দাওনা গোসল দাওনা তারে, দাও দোলা সাজায়

প্রিয় নানাজির হস্থে তারে সপিব আজিকে যায়!’’


হায়রে শিমুর, হায়রে এজিদ একি করিলি তোরা?

নিষ্পাপ নিষ্কলংক শিশুয় করলিরে কোল হাঁরা!


ক্ষমিবেনা তবে ঐ পাপ তব কোন কালে কোন মানব

ধিক শত ধিক তোদের ত্বরে,ওহে মানব রূপি দানব!

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

হযরতের স্কুল-১

হজরতের স্কুল-১ –মুহাম্মদ সৈয়দুল হক “হাসরের দিন আমি সর্বপ্রথম বলিব– ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ।” শিরক শিরক বলে মাইজভাণ্ডারের প্রতি আঙ্গুল তোলা ব্যক্তিরা গাউছুল আজম মাইজভাণ্ডারির এ বাণীটি অন্তরে গেঁতে রাখুন। অঘোষিত এক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা গাউছুল আজম হজরত আহমদ উল্লাহ মাইজভাণ্ডারি। সে ভার্সিটির পহেলা সবক ছিল “কবুতরের মত বাছিয়া খাও, হারাম খাইও না। নিজ সন্তানসন্ততি লইয়া আল্লাহর জিকির কর।”  গ্রামবাংলার আমজনতা সেসময় বিশ্ববিদ্যালয় বুঝত না৷ স্কুল বুঝত৷ তাই রমেশ স্কুল বলেছেন। এভাবে– “সেই স্কুলের এমনি ধারা, বিচার নাইরে জোয়ান বুড়া সিনায় সিনায় লেখাপড়া শিক্ষা দিতাছে মাস্টার ও মাহিনা ছাড়া, এলমে লাদুনি ভরা কাগজ কলম দোয়াত কালির কী দরকার আছে? গাউছুল আজম মাইজভাণ্ডারি স্কুল খুইলাছে...” রমেশ শীল হিন্দু ছিলেন। মাইজভাণ্ডারি গান লিখেছে প্রায় ৩৫০। ‘আমি তোমায় ভালোবাসি, তুমি আমাকে দেখা দাও’ টাইপের না। মানে গানগুলো কেবল গান না। এলমে শরিয়ত ও তরিকতের গভীর থেকে গভীরতর রহস্য। সেখানে নামাজ, রোজা, হজ, জাকাত কোনটি নেই? যেমনটি লিখেছেন– “নামাজ রোজা কলমা আর, হজ ও জাকাত সার এই পাঁচ কাজে দাসগণে মশগুল রাখিও দয়াল ভাণ্ডারি ...

মসলকে আলা হযরত

বিষয়ঃ মসলকে আলা হযরতঃ একটি তাত্ত্বিক পর্যালোচনা। —মুহাম্মদ সৈয়দুল হক শিক্ষার্থী: জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া কামিল মাদরাসা। ফলপ্রার্থী: ফাযিল প্রথম বর্ষ ★প্রারম্ভিকাঃ  “তমসা ঘেরা এ দুনিয়ার মানুষ দেখিলো সেদিন পথ দীনের আকাশে উদিল যেদিন ‘মসলকে আলা হযরত’ বতুলতায় ভরা এ উপমহাদেশ পেয়েছে সেদিন দিশা রবিসম সে মসলক-গুণে কেটে গেছে অমানিশা।” যাবতীয় প্রশংসা সেঁ মহীয়ান সত্ত্বা আল্লাহর জন্য, যিনি আমাদেরকে শ্রেষ্ঠ নবির শ্রেষ্ঠ উম্মত হিসেবে কবুলের পাশাপাশি শ্রেষ্ঠ মুজাদ্দিদ ইমাম আলা হযরত (রহ.)’র মসলকে কবুল করেছেন। অগুনতি দরুদ ও সালামের নজরানা সেঁ দুজাহানের বাদশা নবি মুহাম্মদ (দ.) এর পাক কদমে, যাঁর অশেষ করুণায় তাঁরই নির্ধারিত যুগের মহান দিকপাল ইমাম আহমদ রেযা খাঁন (রা.)’র মসলকের শামীয়ানায় আমরা আশ্রিত। ইসলামের সকল যুগের সকল সূর্যসন্তানদের প্রতি সশ্রদ্ধ সালামপূর্বক স্মরণ করছি যাঁর পথ-মত তথা ’মসলক’ নিয়ে লিখতে বসেছি, যুগের সে মহান সংস্কারক, আঁধারে আলোকরশ্মি, দোজকের তাপদাহে জান্নাতি পবন, অথৈ সমুদ্রে জাহাজের কাণ্ডারিতুল্য ইমাম আহমদ রেযা খাঁঁন ব্রেলভী (রা.) কে, যিনি এ পৃথিবীতে না এলে ইসলাম-সূর্য এদ্দিনে হয়ত তাঁর...

সত্যের আলোকবর্তিকা

সত্যের আলোকবর্তিকা      (শুভ জন্মদিন) যুবক হন্য হয়ে ছোটে। কখনও নগরের পথে কখনও বা বনবাদাড়ে। ছুটতে ছুটতে পা ফুলে যায়। রক্ত ঝড়ে। হুট করে বসে। জিরোই। আবার ছোটে। কখনও উথাল-পাতাল লাফায় তো কখনও ধীরস্থির শান্তভাবে একদৃষ্টে তাকিয়ে রয় হযরতের রওজার কিংবা শূন্য আকাশে। বদ্ধঘরে একাকী দিন কাটে। নাওয়াখাওয়া নাই। হঠাৎ ঘর ছেড়ে কোথায় যে হারিয়ে যায়—খোঁজে পাওয়া মুশকিল। পৌষ-মাঘের শীতেও দিনের-পর-দিন পানিতে ডুবে থাকে। গ্রীষ্মের উত্তপ্ত সূর্যের দিকে চেয়ে থাকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা। কারে যেন খোঁজে? কী যেন চায়? আমার আমি কই? কিংবা আমি কে? কোথা থেকে এলাম? ভেতরে কে আছে? তাঁকে জানা চাই, সাক্ষাৎ প্রয়োজন, চেনা লাগবেই। শরীরের রক্ত ছোটে, চামড়া ছেঁড়ে, জরাজীর্ণ হয়—পণ আর ছোটে না৷ হযরতের রওজায় সামা চলতো। ‘সামা’তে হালকা হয়। কোন এক অদৃষ্টের শক্তিতে শরীর দোলে উঠে। কাঁপন ধরে। কখনোসখনো সে কাঁপন লাফে গিয়ে ঠেকে। সামা শেষে যুবক আসলেন। শুরু হলো মারামারি৷ ‘যাকে পাই তাকে খাই’ নিয়মে চলছে মারধর। “নামাজ কালাম নাই? এত লাফালাফি কীসের? আবার সাজদা মারা হচ্ছে?” ভক্তকুল লে-ছোট। দৌঁড়ে কূল পায় না। ‘পড়ি কী মরি’ করে বাবাকে জানায়। বাবা...