‘‘সু-সময়ের সুজন’’ আর ‘‘দুর্দিনে নির্জন’’ কবিতা দুটির মিলিত রূপ, আকতার ভায়ের দেয়া নামটি বেশ পছন্দ হলো-
★দুধের মাছি★
_মুহাম্মদ সৈয়দুল হক
<><><><><><><><><><>
-------------------১---------------------
আজকে আমার সুদিন বলে
কতই আপন আমি
সবার কাছে আমার সময়
অনেক খানি দামি।
ভাত কী খেলাম, চা খেলাম কী,
নাস্তা খেলাম কবে?
সুজন-স্বজন-প্রতিবেশিরা
খবর নিবে সবে।
মিষ্ট মোয়া প্রাণের প্রিয়া
গলা টেনে পুছ করে
‘ওষুধ-ক্যাপসুল খেলে কী গো
কাঁপছে শরীর জ্বরে।’
বন্ধু-বান্ধব, সহপাঠি আর
পাড়াগাঁয়ের লোকে
সকাল-সন্ধ্যা খোঁজে আজকাল
ঠিক ‘ডুবুরির চোখে’।
খেলার মাঠে কিংবা পাঠে
মিস যদি হয় কভু
কল আর বার্তায় জমিয়ে তোলে
বন্ধুরা মোর ‘ফেবু’।
বিকেল বেলার চায়ের মেলায়
থাকলে গরহাজির
চা সমেত যে দোস্তরা মোর
বারান্দায় হাজির।
হাসি-ঠাট্টা-আনন্দ আজ
মোর দুয়ারে ভীড়
আপন জনের আপন মেলায়
ভরা আমার নীড়।
আজকে আমার সু’দিন বলে
সুজনাভাব নাই
হাজার-কোটি সালাম রইলো
সব সুজনের পা’য়।
------------------২--------------------
আজকে আমার দুর্দিন তাই
কাউরে পাশে পাই না
প্রাণের প্রিয় দুস্তরাও আজ
ঘেঁসতে কাছে চায় না।
বিপদ আমার নিকট বলে
আপনজনরা দূরে
একে একে সব সুজনা
গেলো আমায় ছেড়ে।
সপ্তাহ খানেক গত হলো
প্রিয়ার বার্তা নাই
সকাল-সন্ধ্যা, রাত্র-দুপুর
কে কারে আর পায়?
হার-হামেশা যারা আমার
গা’য়ে থাকতো পরে
গা বাঁচিয়ে চলে তারা
থাকে অজুত দূরে।
পাড়াগাঁয়ের খেলার মাঠে
যাওয়া হয় না এখন
ঠেঙ ভাঙারই হুমকি দিছে
গেলে যখন-তখন!
গলির মোড়ের চা-দোকানটা
বড়ই পানসে লাগে
হাসি-ঠাট্টা-আনন্দটার
যায়গা খেলো ছাগে।
সুসময়ে যেই মহাজন
হাটতো গলা ধরে
মাস তিনেক আজ গেলো তারে
দেখিনি নজরে।
খোঁড়া আবুল লেঙটি মারে
বিলাইও কয় মেঁউ
অনুগত কুকুরটা আজ
করতেছে ঘেউ ঘেউ।
ধরার রীতি কঠিন অতি
কে বুঝে তার গতি
ক্ষুধার্থেরই ফাটে ছাতি
ভর্তি পেঠে হাতি।
যেই হাতে মোর সোনা হতো
সেই হাতে আজ মাটি
বেইমানিটা করলো শেষে
দুগ্ধ খাবার বাটি।
নাইরে কেহ নাই আপনা
আজকে আমার ধারে
বিশ্বাসখানি উঠে গেছে
নিজেরই উপরে।
দুর্দিনে দুর্ভিক্ষ নামে
রাজারো আলয়ে
সুদিনে দেখ্ পুষ্পসারি
পাথরেরো গায়ে।
সুদিনে থাক আমার আপন-
স্বজন-প্রিয় ভাই
দুর্দিন-দুর্ভিক্ষ সবি
আসুক আমার গায়।
ওগো আমার সুজন বন্ধু
সুখে থেকো সবে
দুর্দিনে কেউ না থাকলেও
আমায় সঙ্গে পাবে।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন