সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

প্যারাসিটামল দুইবেলা

পবিত্র শবে বরাতের আগমণে  যাঁদের জ্বর ১০৫ ডিগ্রিতে উত্তির্ণ, তাঁদের জন্যে বিশেষ প্রেসক্রিপশন-

    ★‘প্যারাসিটামল’ দুই বেলা★

           __মুহাম্মদ সৈয়দুল হক


তীব্র কাঁপুনি দিয়ে জ্বর আসছে? মাথা ঝনঝন করছে? জ্বরের বেগে আবকা বকছেন? কী করবেন, কী খাবেন কিছুই বুঝে উঠতে পারছেন না? চতুর্দিকে মাইকের বিকট আওয়াজে গদির সাথে পিরিতি জমে উঠছে না? সবখানেতে শিরিক আর বেদাতের ভাইরাস দেখতে পাচ্ছেন? তবে এই দাবাই আপনার জন্য।


এই নিন-

কী করবেন? 

আমার পোস্ট নামের প্রেসক্রিপশনটা পূর্ণাঙ্গ ফলো করুন।

কী খাবেন?

সহজ! প্রেসক্রিপশনে দেয়া ‘প্যরাসিটামল’ দুই বেলা তৃপ্তি সহকারে গলাদগরন করুন।


 ওহে গান্ধি পোকা! শবে বরাতে কী শিরিকের গন্ধ পাও? তবে তুমিই মুশরিক! কেননা শবে বরাত কুরআন-সুন্নাহ্ সমর্থিত। আর খোদায়ী কোন নিদর্শন অস্বীকার করে মুশরিকেরা।


 বেদাতের বাদ্য দেখতে পাও? তবে তুমিই বেদাতি! কেন? কারণ হাজার হাজার বছরের সীকৃত ইবাদতকে অস্বীকার করাটাই বড় বিদয়াতে সায়্যিয়াহ্!


 আরামের হালওয়া-রুটিতে হারাম কিছু পাও? তবে তুমিই হারামখুর! কেন জানো? কারণ শরীয়ত কতৃক হালাল খাদ্যকে হারাম মনে করা সম্পূর্ণ হারাম। অতএব নিজ ফতোয়ায় নিজে হারামি!


 রাতভর ইবাদতে মুশরেকি নিদর্শন পাও? তবে তুমিই মুর্তি পুঁজারী! কেনো, কেনো? আমরা খোদার ইবাদতে মগ্ন থাকাতে যেহেতু তোমার নাকে শিরকি গন্ধ লাগে, তবে তোমার খোদা অন্য কেউ! নিশ্চয় লাত-মানাহ্-ওজ্জাদের থেকেই কেউ!


 মসজিদে আলোক সজ্জাতে কি চোখের আলো কমে যায়? তবে চশমা ব্যবহার কর।খোদা ভীতির চশমা, ঈমানের চশমা, খুলুসিয়তের চশমা, নবী প্রেমের চশমা, তবে মরুতেও ফুল দেখবে, আলোক সজ্জাকে জান্নাতি নিদর্শন বলে মনে হবে, খোদার জমিনে খোদায়ী কাজ সুন্দর মনে হবে। পারবেন তো?


প্রথম বেলাঃ

আজ রাতের ওষুধ-

দশের সাথে দশজনা হয়ে মসজিদে যান, কাঁদে কাঁদ লাগিয়ে জামা’আতে শরিক হোন। সালাতুত তাসবীহ, তাহাজ্জুদে রাত গোজার করুন।কুরআনে পাকের তিলাওয়াতে মগ্ন থাকুন। বিনম্র চিত্তে খোদার দরবারে কাঁদুন। ছেড়ে যাওয়া হক্বদার আহলদের ক্ববরে দন্ডায়মান হোন, গোণাহ মাপে প্রার্থনা করুন। দেখবেন- শিরকি গন্ধ মেশকে পরিণত হয়েছে, বদ বুঁ’র পলায়ণে খুশবুঁ ছড়িবে, মনের সকল কলুষতা, বিষাক্ত বাষ্প হাওয়ায় উড়ে যাবে।বেহেস্তি মেঘমালা এসে মনের উঠানে বৃষ্টিতে ভিজিয়ে দিবে, দেহ-মনে প্রশান্তির পোয়ারা বইবে।


দ্বিতীয় বেলাঃ

কাল দিনের ওষুধ-

রাতের ক্লান্তি লগ্নে হালওয়া-রুটি কিংবা উত্তম কিছু আহার করে নিন। দিনভর পেট-মুখ-হাত বন্ধ রাখুন। দেখবেন- জ্বরের তীব্রতা কমে গেছে, কাঁপুনি প্রশমিত হয়েছে, মাথা ব্যথা হিমালয় পেরিয়ে গেছে, ভেতর-বাহিরের সকল দুর্গন্ধ-দুরারোগ্য দূরিভূত হয়েছে।


আবেদন- রাতের গভীরে দোয়ার শামিয়ানায় তিলক পরিমাণ যায়গা আমার জন্য রাখবেন, আপনার জায়গাও আমার শামিয়ানায় থাকবে ইনশা-আল্লাহ্!

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

হযরতের স্কুল-১

হজরতের স্কুল-১ –মুহাম্মদ সৈয়দুল হক “হাসরের দিন আমি সর্বপ্রথম বলিব– ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ।” শিরক শিরক বলে মাইজভাণ্ডারের প্রতি আঙ্গুল তোলা ব্যক্তিরা গাউছুল আজম মাইজভাণ্ডারির এ বাণীটি অন্তরে গেঁতে রাখুন। অঘোষিত এক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা গাউছুল আজম হজরত আহমদ উল্লাহ মাইজভাণ্ডারি। সে ভার্সিটির পহেলা সবক ছিল “কবুতরের মত বাছিয়া খাও, হারাম খাইও না। নিজ সন্তানসন্ততি লইয়া আল্লাহর জিকির কর।”  গ্রামবাংলার আমজনতা সেসময় বিশ্ববিদ্যালয় বুঝত না৷ স্কুল বুঝত৷ তাই রমেশ স্কুল বলেছেন। এভাবে– “সেই স্কুলের এমনি ধারা, বিচার নাইরে জোয়ান বুড়া সিনায় সিনায় লেখাপড়া শিক্ষা দিতাছে মাস্টার ও মাহিনা ছাড়া, এলমে লাদুনি ভরা কাগজ কলম দোয়াত কালির কী দরকার আছে? গাউছুল আজম মাইজভাণ্ডারি স্কুল খুইলাছে...” রমেশ শীল হিন্দু ছিলেন। মাইজভাণ্ডারি গান লিখেছে প্রায় ৩৫০। ‘আমি তোমায় ভালোবাসি, তুমি আমাকে দেখা দাও’ টাইপের না। মানে গানগুলো কেবল গান না। এলমে শরিয়ত ও তরিকতের গভীর থেকে গভীরতর রহস্য। সেখানে নামাজ, রোজা, হজ, জাকাত কোনটি নেই? যেমনটি লিখেছেন– “নামাজ রোজা কলমা আর, হজ ও জাকাত সার এই পাঁচ কাজে দাসগণে মশগুল রাখিও দয়াল ভাণ্ডারি ...

মসলকে আলা হযরত

বিষয়ঃ মসলকে আলা হযরতঃ একটি তাত্ত্বিক পর্যালোচনা। —মুহাম্মদ সৈয়দুল হক শিক্ষার্থী: জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া কামিল মাদরাসা। ফলপ্রার্থী: ফাযিল প্রথম বর্ষ ★প্রারম্ভিকাঃ  “তমসা ঘেরা এ দুনিয়ার মানুষ দেখিলো সেদিন পথ দীনের আকাশে উদিল যেদিন ‘মসলকে আলা হযরত’ বতুলতায় ভরা এ উপমহাদেশ পেয়েছে সেদিন দিশা রবিসম সে মসলক-গুণে কেটে গেছে অমানিশা।” যাবতীয় প্রশংসা সেঁ মহীয়ান সত্ত্বা আল্লাহর জন্য, যিনি আমাদেরকে শ্রেষ্ঠ নবির শ্রেষ্ঠ উম্মত হিসেবে কবুলের পাশাপাশি শ্রেষ্ঠ মুজাদ্দিদ ইমাম আলা হযরত (রহ.)’র মসলকে কবুল করেছেন। অগুনতি দরুদ ও সালামের নজরানা সেঁ দুজাহানের বাদশা নবি মুহাম্মদ (দ.) এর পাক কদমে, যাঁর অশেষ করুণায় তাঁরই নির্ধারিত যুগের মহান দিকপাল ইমাম আহমদ রেযা খাঁন (রা.)’র মসলকের শামীয়ানায় আমরা আশ্রিত। ইসলামের সকল যুগের সকল সূর্যসন্তানদের প্রতি সশ্রদ্ধ সালামপূর্বক স্মরণ করছি যাঁর পথ-মত তথা ’মসলক’ নিয়ে লিখতে বসেছি, যুগের সে মহান সংস্কারক, আঁধারে আলোকরশ্মি, দোজকের তাপদাহে জান্নাতি পবন, অথৈ সমুদ্রে জাহাজের কাণ্ডারিতুল্য ইমাম আহমদ রেযা খাঁঁন ব্রেলভী (রা.) কে, যিনি এ পৃথিবীতে না এলে ইসলাম-সূর্য এদ্দিনে হয়ত তাঁর...

সত্যের আলোকবর্তিকা

সত্যের আলোকবর্তিকা      (শুভ জন্মদিন) যুবক হন্য হয়ে ছোটে। কখনও নগরের পথে কখনও বা বনবাদাড়ে। ছুটতে ছুটতে পা ফুলে যায়। রক্ত ঝড়ে। হুট করে বসে। জিরোই। আবার ছোটে। কখনও উথাল-পাতাল লাফায় তো কখনও ধীরস্থির শান্তভাবে একদৃষ্টে তাকিয়ে রয় হযরতের রওজার কিংবা শূন্য আকাশে। বদ্ধঘরে একাকী দিন কাটে। নাওয়াখাওয়া নাই। হঠাৎ ঘর ছেড়ে কোথায় যে হারিয়ে যায়—খোঁজে পাওয়া মুশকিল। পৌষ-মাঘের শীতেও দিনের-পর-দিন পানিতে ডুবে থাকে। গ্রীষ্মের উত্তপ্ত সূর্যের দিকে চেয়ে থাকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা। কারে যেন খোঁজে? কী যেন চায়? আমার আমি কই? কিংবা আমি কে? কোথা থেকে এলাম? ভেতরে কে আছে? তাঁকে জানা চাই, সাক্ষাৎ প্রয়োজন, চেনা লাগবেই। শরীরের রক্ত ছোটে, চামড়া ছেঁড়ে, জরাজীর্ণ হয়—পণ আর ছোটে না৷ হযরতের রওজায় সামা চলতো। ‘সামা’তে হালকা হয়। কোন এক অদৃষ্টের শক্তিতে শরীর দোলে উঠে। কাঁপন ধরে। কখনোসখনো সে কাঁপন লাফে গিয়ে ঠেকে। সামা শেষে যুবক আসলেন। শুরু হলো মারামারি৷ ‘যাকে পাই তাকে খাই’ নিয়মে চলছে মারধর। “নামাজ কালাম নাই? এত লাফালাফি কীসের? আবার সাজদা মারা হচ্ছে?” ভক্তকুল লে-ছোট। দৌঁড়ে কূল পায় না। ‘পড়ি কী মরি’ করে বাবাকে জানায়। বাবা...