★ওগো মা★
__মুহাম্মদ সৈয়দুল হক
(সমাপনী পর্ব)
ওগো মা-
তুলতুলে ঐ নরম বিছানাটা কি
আজো আছে বিছানো?
যেটা অন্ধকারে বদ্ধ ঘরে রোজ
পেতাম যে সাজানো।
ঐ হাত দুটোর কোমল স্পর্শ্ব
অনুভবি দু-চোখ মেলে
ক্ষুদার জ্বালা না মিটায় যবে
দিতে মোর মুখে তুলে।
ওগো মা!
তুমি দিয়াছো গো তোমায় মোরে
আমি দিইনি তিলক মালা
তোমারই রক্ত-মাংস-নাড়ি ছিড়ে আমি দিয়াছি হাজার জ্বালা।
তুমি অন্ধ ছিলে,
বিন্দুকে সিন্ধু করে বিলায়ে দিলে
আমি স্বচেতন অতি!
দিই নাকো সিন্ধু থেকে বিন্দু লতি।
আমি আমারে সেবি;
তুমি সেবিলে মোরে কতো কাল
হায়! বোকা মা আমার!
মিষ্টসুরে ডাকে;দিলেও গালাগাল।
খেয়ালি আমি,
দেখিনা তব তীব্র জ্বরের গাত্রদাহ
অখেয়ালি তুমি;
পরম খেয়ালে বিলাও শান্ত প্রবাহ।
মনে পড়ে সেই রাতের কথা!
জ্বরের বেগে যবে কাঁপিছিনু থরথর
তুমি আসলে; পাশে বসলে;
কাটালে নির্ঘুম সে রাত গভীরতর।
ঐ এক রাতের ক্ষনিকের ঋণ
শুধিবো কি দিয়ে?
ঋণের বোঝা চাপিয়ে মাথায়
যাওনি কেনো নিয়ে।
বলো মা! দিবো কী তোমায়?
গয়না-শাড়ি, কাঁকন-বালা?
একটুকু সুখ, নাকি শঙ্খমালা?
কিবা দিবো, অকর্মা এই ছেলা!
না মা, না! সে ঋণ শুধিবে না!
হাজার তারা আনিলেও না;
সুখের দরিয়ায় ভাসালেও না;
অষ্ট জান্নাত লিখে দিলেও না।
তবে করিবো কী? কিছুই না।
করিবার সে সাধ্যি নাই
দিবার সে তৌফিক নাই
আনিবার সে ক্ষেমতা নাই।
শুধু চরণ যুগল বিচায়ে দিও!
একটু খানি ধুলি নিবো,
মাথার পরে চড়িয়ে নিবো
ঠোট লাগিয়ে চুমো খাবো
জান্নাত খানা খোঁজে নেবো।
ঐ হাত খানার পরশ দিয়ো!
আরশের ছায়া নিবো
জান্নাতি সুবাস নিবো
ব্রহ্মশ্রেষ্ট সুখটি নিবো।
দিবে তো মা?
ঐ হাতের একটু পরশ!
ঐ পায়ের একটু ধুলি!
মমতার বেগে নিবে কি
ঐ কোলে একটু তুলি?
ঐ বুকে ক্ষণিকাশ্রয়ে মা!
স্বর্গসুখ যেতাম ভুলি।
দিবে মা?
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন