সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

মুসলমান

★মুসলমান★

               মুহাম্মদ সৈয়দুল হক

মুসলমান!

অর্ধ জাহান চষে বেড়িয়েছিলে, কোথায় সে সম্মান?


কোথায় ওমর, কোথায় খালিদ, কোথায় খোদার শের?

ওঠে এসো তোমরা দানব দুনিয়ায় মৈত্রি আনো ফের!


কোথায় ফোরাত, কোথায় কারবালা, কোথায় শহিদ হোসাইন?

ত্যাগের শুধা পিয়ে দাও মোদের, শিখাও খোদার আইন!


ভুলেছি বাণী; স্মরিবে কে সে? ‘মুসলিমু আখুল মুসলিম’

ভরেছে জুলমতে ধরাধামেতে ভ্রাতাগণেও আজ জালিম!


কই সে বদর; সাওমী মুমিন, দন্ত দেয়া সে বীর কোথায়

ওহুদে? সর্বদাতা সিদ্দিক কোথা, রাখে যে রাসূল-আল্লায়!


গজনী সুলতান গেলো কই আজ, ছেড়ে ফেলে নরাপৃষ্ঠ!

লজ্জিত মুসলিমে খোদায়ী আ-লমে দিশা দিবে কোন বীরশ্রেষ্ঠ?


এসো হে সুফি, ছুটে এসো তুমি, এসো হে মঈনুদ্দীন

এসো শাহ্জালাল, খোদার দুলাল, এসো হে মহিউদ্দীন।


জিন্দা কর পূণ তবলোক গুণে খোদার মহান দ্বীন

দুরিভূত হোক গৌড় গোবিন্দ, ইবলিশি যত জিন!


মুসলমান!

কোথায় তোমার আধিপত্য, মর্যাদা পর্বত সমান?


আদর্শ কোথায়, ত্যাগ কোথায়, কোথায় জিহাদ অবিচারে?

বীরবল তোমার গেল কই আজ, হত্যাযজ্ঞ যবে নির্বিচারে!


পবিত্র ভুমি মক্কা-আরব, জাহেলি যুগের কালে

     নরাধমে অপবিত্র করে পাপিষ্ট ছোবলে।


প্রতিবাদি এলো, জগৎ কাঁপালো, শান্তি দিল ফিরিয়ে

সঙ্গি হয়েছিল সিদ্দিক-ওমর কাঁদে কাঁদ মিলিয়ে!


তেমনি করে জগৎ জুড়ে নজির নাই এমন কোনো

অত্যাচারের চুপ থেকেছে কোনো মুসলমানো!


বার্মা আজ ঐ জাহেলি আরব, রোহিঙ্গা মুসলিম নারী

জাহেলি যুগের নরপশু পিতার মায়ানমারই আজ বাড়ি!


নেতা সে কোথায়, খুঁজিয়া বেড়াই, সঙ্গিরা তার কই?

আমার ভায়ের রক্তস্রোত আর কতকাল সই?


ঘুমন্ত আজ বিশ্ব বিবেক, সুসুপ্ত মুসলমান

অবিচারের যাত্রাকলে যাচ্ছে তাদের প্রাণ!


তবে শোন অমীয় বাণী!

চলে যদি এ কাহানি

মুসলিম একদা নাম থাকিবে, কর্মে হবে হারামি!


মুসলমানিত্বের বড়াই কর, লজ্জা করেনা তোমার?

ফেলে দাও ওসব জুব্বা-দাড়ি, শয়তানি ঐ খামার!


প্রয়োজনে বিশ্বনবির শিক্ষা কি ভুলে যাবার?

হাতের তসবি ফেলিয়া নিয়াছে মুক্ত তলোয়ার!


বলছি ওরে বোকা!

আর কত করবি গোলামি, খাবি কত আর ধোঁকা?


মার্কিন-ইজরাঈল সহোধরে খেলো কি মাথা পুরোটায়?

তোর কাঁদেই ভর করিয়া করছে যা ইচ্ছে তাই!


টাকার গোলামী ছেড়ে তবে যদি করিস তা খোদার

তবে রে বেটা হবে শির উঁচু, খুলিবে বন্দি দ্বার!


পাবি ফিরে তবে হারানো চাবি, ছিল যত সম্মান!

খোদার এ জগতে উঠবে একি রব, ‘’জিন্দাবাদ মুসলমান’’!

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

ধর্মটা যে ধর্ম নেই

ধর্মটা যে ধর্ম নেই আর —মুহাম্মদ সৈয়দুল হক ধর্মটা যে ধর্ম নেই আর চর্ম কেবল আছে তা’য়, ধর্মমূলের কর্ম সকল দূর হয়েছে অচিন গাঁ’য়। জুব্বা টুপি পাগড়ি সবি বাড়ছে ক্রমে দিনে-দিন, মানুষগুলো হচ্ছে কেবল মুহাম্মদের ধর্মহীন (দরুদ)। তথ্যমতে নিত্য যারা গরীব-দুখীর ভাত মারে, গিয়ে দেখো ইদ-জুমাতে তারাই প্রথম কাতারে। যেই হুজুরে দিন-দুপুরে হালাল-হারাম বয়ান দেয়, দুই থেকে চার পয়সা পেলে ইমানখানাও বেইচা দেয়। পীর-সাধক আর ধর্মগুরুর বাড়ছে অভাব নিত্যদিন, পাত্র দেখে ছাত্র পোষে পীর নিজে বেশ ধর্মহীন। সহিহ হাদিস করছে হদিস দিনমজুর আর দিন-ফকির, মুহাদ্দিস আজ কলেজ-বালক ডাক্তারে-ও মুফাস্সির। প্রাথমিকের বাল-বালকে কাফের বলে রায় ছাড়ে, সোশ্যাল মামুর এই জগতে কার সাথে আর কে পারে! গাঞ্জা খেয়ে মঞ্চে উঠে পাঞ্জা দোলায় দেয় বয়ান, মোল্লা-মুনসির এই দশাতে যাবে কোথায় মুসলমান? কেউবা খেলে ফুটবল আবার কেউবা চড়ে রকেটে, দর্শকে কয় মারহাবা-জী হাদিয়া ভরুন পকেটে। সকাল থেকে রাত অবদি, রাত্র থেকে সকাল-তক, দীনটা ছিল সবটা-জুড়ে সবটা যেন থাকে হক। কর্ম যত ধর্ম সবি বলছে কুরআন মজিদে, অকর্মা...

পথে পথে-২

পথে পথে-২ ঢাকা থেকে মহানগর প্রভাতিতে চড়ে সোজা নারায়ণগঞ্জ বন্দরে পৌঁছলাম। সাথে আছে সদ্য প্রকাশিত ‘বাংলা কাব্যে নবী-বন্দনা এবং নজরুলের মুনশিয়ানা’র লেখক আবু সাইদ এবং স্নেহাস্পদ মুকিম। যাবো আল্লামা বাকি বিল্লাহ (রহ.)র প্রতিষ্ঠিত গাউছিয়া তৈয়বিয়া তাহেরিয়া মাদরাসায়। সামনে বুড়িগঙ্গা। পার হতে হবে। ঘাটে নৌকার হুড়োহুড়ি। দু-তিনজন মাঝি একসাথে ডাকাডাকি করছে—আয়েন হুজুর আয়েন। নিজেকে ভিআইপি ভিআইপি মনে হচ্ছে। পেছন পেছন আরও কিছু লোকের আগমন। মাঝিরা এবার আমাদের ছেড়ে ওদের ডাকছে। বুঝলাম—এ ঘাটে যারা আসে সবাই ভিআইপি। অতিরিক্ত ভাবসাব বাদ দিয়ে দ্রুত উঠে পড়লাম। উঠেই গান শুরু— “বাঁশখালিইইইই, মইশখালি      পাল উড়াইয়া দিলে সাম্পান গুরগুরাই টানে— হন হন যাবি আঁর সাম্পানে। কর্ণফুলীর মাঝি আঁই   নিয়ুম ভাটি-উজানে, হন হন যাবি আঁর সাম্পানে ও তোরা, হন হন যাবি আঁর সাম্পানে।” মুকিম রসিকতার সুরে বললো—“ভণ্ডামি বাদ দেন ভাই, এটা কর্ণফুলী না; বুড়িগঙ্গা।” তার পিঠে কষে এক চড় দিয়ে বললাম—আবে হালা, ঢাকাইয়ারা বুড়িগঙ্গা নিয়া না-লেইখলে মুই কী করবাম? আবু সাইদের মুখটা কেমন জানি ফ্যাকাসে দেখাচ্ছে। বাড়ি কুমিল্লা...

ধ্রুব

ধ্রুব ধ্রুব চা খাচ্ছিল। খেতে খেতে ভাবছে। ভাবতে ভাবতে খাচ্ছে। কোনটা আগে? ভাবনা না খাওয়া? খাওয়া না ভাবনা? আরে, এটা তো পান করার জিনিস; খাচ্ছে কেন? যাব্বাবা, কী যে মাথামুণ্ডু ভাবছে—কে জানে! পানকে খাওয়া ভেবে ভাবনার অপমান হয়েছে ঢের। আর না। এবার খাওয়ায় মনোযোগ দেয়া যাক। হে হে, মনোযোগ দেবার আগেই মনোভাব পাল্টে গেল? আবারো খাওয়া? ভাবনার মান-ইজ্জত একেবারে শেষ। কিন্তু না, এভাবে শেষ হতে পারে না। সে ভাবুক৷ ভাবনার অপমান সে হতে দেবে না। প্রয়োজনে পানকে যে-কোনো রীতিতে খাওয়া বানিয়ে ছাড়বে। আচ্ছা, চা’কে বিরিয়ানি ভাবলে কেমন হয়? হাঁ, বিরিয়ানি ভাবলেই হয়ে যায়। খাওয়া-পানের দ্বন্দ্ব শেষ। তা-ছাড়া চা আর বিরিয়ানির কালারটা কাছাকাছি। বিরিয়ানিতে ঝোল ঢালা হোক। মাখামাখি করে পান্তাভাত বানানো যাক। এবার পান্তাভাতের তরিকায় পুরুত পুরুত টানা যাক। আহা! সে কী স্বাদ, সে কী স্বাদ! ধ্রুব এবার চিৎকার দেয়—পৃথিবী বিরিয়ানির, পৃথিবী বিরিয়ানির। চায়ের কাপটা আর কাপ নেই। আকাশের বুকে সুসজ্জিত থালা। থালাটা আবার চাঁদের মতো। সে চাঁদে ঝিলিক মারছে। চাঁদটাকে একবার ডানহাতে, আবার বাঁহাতে। সেটাকে আবার কিছুক্ষণ পরপর মুখে পুরে লম্বা চুমুক। চু...