সমাজের উঁচু তলায় বসে নিচু তলার লোকেদের খবর নেবার সময় যাদের হয়ে উঠে না, তাদের নিয়ে এবারের ছন্দরাশি--
♦আমি-তুমি♦
_মুহাম্মদ সৈয়দুল হক
~~~~~~~~~~~~~~~~
মুখ দেখে হায় মুখ লুকালে
চিনবো তোমায় কেমনে
দেখেও আমায় না দেখলে
ডাকবো পেছন কোন মনে।
তুমি আমি নয়তো দূরের
এইতো কাছাকাছি
তুমি উত্তম, অধম আমি
ফারাক মিছেমিছি।
থাকো তুমি যে দালানের
চার কিবা পাঁচ তলায়
আমার আসন দালান পাশের
ঐ যে গাছের তলায়।
আমি মরি অন্ন-জ্বালায়
পাইনা মুঠো ভাত
মাংস-মাছ, পোলাও ভাতে
পোরা তোমার পাত।
তবু তোমার ত্বরে বাবুর চিঠি
নেমন্ত্রন্য খেতে
বিনে চিঠিই গলা হেঁকে
কয় না আমায় যেতে।
গায়ে তোমার দামি জামা
ব্রেন্ডের সিলে গড়া
অঙ্গে আমার নোংরা পোষাক
অনেক খানি ছেড়া।
ঝড়-বৃষ্টি আর তুফান-ঘুর্ণি
টের পাও খবর এলে
ততক্ষণে মোর কুঁড়েঘর
ডুবে পানির তলে।
লোকে তোমায় সকাল-সন্ধ্যা
বলে- ‘সালাম জনাব’
আমি লোককে দিলে সালাম
পাইনা যে তার জবাব।
তোমার কত নাম-ডাক ভাই
কত যশ ও খ্যাতি
খেতের পাশে থেকে আমি
রয়ে গেলাম ক্ষেত-ই।
তাই কিরে ভাই, মুখ তুলে হায়
চাওনা পেছন ফিরে
এক আদমে গড়া তবু
থাকো যে অন্তরে। (অন্তর=দূরত্ব)
আজ বাদে কাল হলে মরণ
ঐ যে কবর মাঝে-
পাড়া-পড়শি তোমায় আমায়
দিবে একই সাজে।
এই যদি হয় আসা-যাওয়া
স্বাদের দুনিয়াতে
কোন কারণে মরবো আমি
ক্ষিদেয় অন্ন-ভাতে।
আমার গায়ে রক্ত-মাংস
তোমার গায়েও তাই কি?
মিলে কেমনে গেলোরে ভাই
হায় হায় হায়, একি!
নাক-মুখ, চোখ-কান
সবি দেখি একই
ভাইটি তোমার ‘গৌরভ মিয়া’
দেখি নাতো, সে কই?
উঁচু-নিচুর দ্বন্দ্বে পড়ি
গেছো তুমি ভুলে
আমিও আশরাফুল মাখলুকাত হয়ে
আসছি ধরার কুলে।
কই গেলো সে জাতির অ টান
কোথা তোমার হুশ
তুমি গেছো ভুলে সৃষ্টি কুলে
আমিও এক মানুষ।
মানুষ সত্য, মনুষ্যত্ব
থাকলে মানব মনে
ওরে মানুষ কভূ হয় না মানুষ
মানব সেবা বিনে।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন