সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

বাঘের ছালে গাধা

উৎসর্গ- সময়ের সকল মহান(!) মহান(?) ইমাম, গাউছ, মুজাদ্দিদ, কুতুবদের প্রতি। 


বাঘের ছালে গাধা

-মুহাম্মদ সৈয়দুল হক


নাম পালালো লকব দেখে

রামছাগলের দলের

হালের গরু তাল পাকিয়ে

লকব নিলো বীরের

সে তো- আস্ত পশু বনের


মাথার চেয়ে চুলের জটা

দেখায় বেজায় ভারি

ধড়’ছে মোটা হাত আর পা

ওজন কেমন ধরি?

হেসে- দিলাম গড়াগড়ি!


খলিফাতুর রাসূল বলে

ওমর ফারুক যবে

নেয়নি লকব ঝলক জোড়ে

এই যে বিশাল ভবে

বলো- হকাছে কার তবে?


তেমন করে কিছু লকব

যুগ-যুগ ধরে খাস

আম বেপারী আম বানিয়ে

নিজের বেলায় ফাঁস

দ্বীনের- করলো সর্বনাশ।


হালার বলদ গলত করে

ইমাম বানায় যারে

তন্ন-তন্ন খোঁজে গেলাম

পেলাম না আজ তারে

হেঁ গো- নাম কী খেলো ষাঁড়ে?


দিনে মফিছ রাতে খবিছ

পড়েছে বোধয় বাদ

দে লাগিয়ে কুকুর-বিড়াল

লকব বেজায় স্বাদ

এসব- থাকবে কেন বাদ?


ইমাম-গাউছ ঘরে-ঘরে

অলি-গলির মোড়ে

ইনসানিয়াত বা’আমানত

ভণ্ডপীরেদের ঘরে

চলে- মাইকিং জোরে-সুরে!


নকল মালের সফল প্রচার

বিজ্ঞাপনে নারী

তাইতো বলি ঐ বিনোদন

সদা, থাকে কেন জারি?

সেথা- রঙয়ের ছড়াছড়ি!


শোনো- গল্প বলি নতুন

বাঘের চামড়া লাগিয়ে দিলো

এক গাধাকে ‘বামুন’......


গাধার গায়ে বাঘের জামা

লাগছে দারুণ বেশ

‘বামুন’ বলে যাও বাঁচাধন

এবার নিজের দেশ

দিলো- ছেড়ে বনের শেষ


দর্পের সহিত ঘোরে গাধা

ফাপর নিয়ে বাঘের

দেখে তারে পালিয়ে বেড়ায়

বেবাক পশু বনের

আহা- আনন্দ কি মনের!

[তা ধীন ধীন, ধীনতানা তা

তা ধীন ধীন তা]


মাইনকা চিপায় পড়লো গাধা

ছাড়ায় নিজের হাঁক

ডাকতে গিয়ে বাঘের মত

হাঁরায় নিজের ডাক

ভাবে- পালায় আগে-ভাগ!


সামনে পড়ে ‘রিয়েল মামা’

লেজের মাথা উঁচায়

আজিব এ বাঘ দেখে বাঘে

চোখের পাতা নাড়ায়

এবার- বাঁচার নাইরে উপায়!


বাঘের জাত সে চেনে বাঘে

জাতের বাঘ সে হলে

এই গাধাকে দেখেই বাঘে

চড়াও তার শরীলে

দেখো- খাচ্ছে গিলে গিলে।


গল্পটা শেষ শিক্ষাটা এই-

শোনরে সকল গাধা

গাধা হয়েও বাঘ-কাবারে

যাদের বিবেক বাঁধা

নাই- মজা নিতে বাধা।


নাম ভাঙিয়ে দাম হাঁকিয়ে

ইতর-নিথর পোষো

কিন্তু মাগার বাঘ আসিলে

হিসাব একটু কষো

হবে- কেমন চুষো-মুষো!


সেদিন আর দিন রবে না

আঁধার শতেক-রাত

বাঘের ধরা প্রাণের মরা

এক তুড়িতেই কাত

ভাবো- ওহে কমবখতের জাত!

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

ধর্মটা যে ধর্ম নেই

ধর্মটা যে ধর্ম নেই আর —মুহাম্মদ সৈয়দুল হক ধর্মটা যে ধর্ম নেই আর চর্ম কেবল আছে তা’য়, ধর্মমূলের কর্ম সকল দূর হয়েছে অচিন গাঁ’য়। জুব্বা টুপি পাগড়ি সবি বাড়ছে ক্রমে দিনে-দিন, মানুষগুলো হচ্ছে কেবল মুহাম্মদের ধর্মহীন (দরুদ)। তথ্যমতে নিত্য যারা গরীব-দুখীর ভাত মারে, গিয়ে দেখো ইদ-জুমাতে তারাই প্রথম কাতারে। যেই হুজুরে দিন-দুপুরে হালাল-হারাম বয়ান দেয়, দুই থেকে চার পয়সা পেলে ইমানখানাও বেইচা দেয়। পীর-সাধক আর ধর্মগুরুর বাড়ছে অভাব নিত্যদিন, পাত্র দেখে ছাত্র পোষে পীর নিজে বেশ ধর্মহীন। সহিহ হাদিস করছে হদিস দিনমজুর আর দিন-ফকির, মুহাদ্দিস আজ কলেজ-বালক ডাক্তারে-ও মুফাস্সির। প্রাথমিকের বাল-বালকে কাফের বলে রায় ছাড়ে, সোশ্যাল মামুর এই জগতে কার সাথে আর কে পারে! গাঞ্জা খেয়ে মঞ্চে উঠে পাঞ্জা দোলায় দেয় বয়ান, মোল্লা-মুনসির এই দশাতে যাবে কোথায় মুসলমান? কেউবা খেলে ফুটবল আবার কেউবা চড়ে রকেটে, দর্শকে কয় মারহাবা-জী হাদিয়া ভরুন পকেটে। সকাল থেকে রাত অবদি, রাত্র থেকে সকাল-তক, দীনটা ছিল সবটা-জুড়ে সবটা যেন থাকে হক। কর্ম যত ধর্ম সবি বলছে কুরআন মজিদে, অকর্মা...

পথে পথে-২

পথে পথে-২ ঢাকা থেকে মহানগর প্রভাতিতে চড়ে সোজা নারায়ণগঞ্জ বন্দরে পৌঁছলাম। সাথে আছে সদ্য প্রকাশিত ‘বাংলা কাব্যে নবী-বন্দনা এবং নজরুলের মুনশিয়ানা’র লেখক আবু সাইদ এবং স্নেহাস্পদ মুকিম। যাবো আল্লামা বাকি বিল্লাহ (রহ.)র প্রতিষ্ঠিত গাউছিয়া তৈয়বিয়া তাহেরিয়া মাদরাসায়। সামনে বুড়িগঙ্গা। পার হতে হবে। ঘাটে নৌকার হুড়োহুড়ি। দু-তিনজন মাঝি একসাথে ডাকাডাকি করছে—আয়েন হুজুর আয়েন। নিজেকে ভিআইপি ভিআইপি মনে হচ্ছে। পেছন পেছন আরও কিছু লোকের আগমন। মাঝিরা এবার আমাদের ছেড়ে ওদের ডাকছে। বুঝলাম—এ ঘাটে যারা আসে সবাই ভিআইপি। অতিরিক্ত ভাবসাব বাদ দিয়ে দ্রুত উঠে পড়লাম। উঠেই গান শুরু— “বাঁশখালিইইইই, মইশখালি      পাল উড়াইয়া দিলে সাম্পান গুরগুরাই টানে— হন হন যাবি আঁর সাম্পানে। কর্ণফুলীর মাঝি আঁই   নিয়ুম ভাটি-উজানে, হন হন যাবি আঁর সাম্পানে ও তোরা, হন হন যাবি আঁর সাম্পানে।” মুকিম রসিকতার সুরে বললো—“ভণ্ডামি বাদ দেন ভাই, এটা কর্ণফুলী না; বুড়িগঙ্গা।” তার পিঠে কষে এক চড় দিয়ে বললাম—আবে হালা, ঢাকাইয়ারা বুড়িগঙ্গা নিয়া না-লেইখলে মুই কী করবাম? আবু সাইদের মুখটা কেমন জানি ফ্যাকাসে দেখাচ্ছে। বাড়ি কুমিল্লা...

ধ্রুব

ধ্রুব ধ্রুব চা খাচ্ছিল। খেতে খেতে ভাবছে। ভাবতে ভাবতে খাচ্ছে। কোনটা আগে? ভাবনা না খাওয়া? খাওয়া না ভাবনা? আরে, এটা তো পান করার জিনিস; খাচ্ছে কেন? যাব্বাবা, কী যে মাথামুণ্ডু ভাবছে—কে জানে! পানকে খাওয়া ভেবে ভাবনার অপমান হয়েছে ঢের। আর না। এবার খাওয়ায় মনোযোগ দেয়া যাক। হে হে, মনোযোগ দেবার আগেই মনোভাব পাল্টে গেল? আবারো খাওয়া? ভাবনার মান-ইজ্জত একেবারে শেষ। কিন্তু না, এভাবে শেষ হতে পারে না। সে ভাবুক৷ ভাবনার অপমান সে হতে দেবে না। প্রয়োজনে পানকে যে-কোনো রীতিতে খাওয়া বানিয়ে ছাড়বে। আচ্ছা, চা’কে বিরিয়ানি ভাবলে কেমন হয়? হাঁ, বিরিয়ানি ভাবলেই হয়ে যায়। খাওয়া-পানের দ্বন্দ্ব শেষ। তা-ছাড়া চা আর বিরিয়ানির কালারটা কাছাকাছি। বিরিয়ানিতে ঝোল ঢালা হোক। মাখামাখি করে পান্তাভাত বানানো যাক। এবার পান্তাভাতের তরিকায় পুরুত পুরুত টানা যাক। আহা! সে কী স্বাদ, সে কী স্বাদ! ধ্রুব এবার চিৎকার দেয়—পৃথিবী বিরিয়ানির, পৃথিবী বিরিয়ানির। চায়ের কাপটা আর কাপ নেই। আকাশের বুকে সুসজ্জিত থালা। থালাটা আবার চাঁদের মতো। সে চাঁদে ঝিলিক মারছে। চাঁদটাকে একবার ডানহাতে, আবার বাঁহাতে। সেটাকে আবার কিছুক্ষণ পরপর মুখে পুরে লম্বা চুমুক। চু...