=>>সাহরি<<=
-মুহাম্মদ সৈয়দুল হক
ঘুমিয়েছি কাল রাতে তারাবির পর
না জানি সে গেলো কত রাতের প্রহর
গ্রীষ্মকালের রোযায় অবসাদ বেশ
যেই না সে পড়েছিনু ঘুমঘোরে শেষ
ধারাপাত নেমেছিলো বারোটার পর
টেনেছিলেম চাদরেক গায়েরো উপর
সেই থেকে দ্বিপ্রহর কিভাবে যে গেলো
বৃষ্টিরস থেমে কবে রাত শেষ হলো?
পবন ছেদন করে ভেসে আসে ডাক
‘পুঁয়াতির ভাত খাও’ ইমামের বাক
জানিনে সে ইতিহাস রাতেরো খবর
সহসা পড়লো মায়ের আদুরে থাপর
‘উঠে বোস বাচাধন’ পিট মেজে ডাকে
আলসে ভীষণ আমি উঠবো না জেগে
নাছোড়বান্দা মা যে ডাকে অবিরাম
‘তিনটা এই বেজে গেছে উঠ সোনা আম্ম্ম!
শোন খোকা, নবীনুর করে গেছে বাণী
‘বরকতের সাহরিতে সোয়াবের খনি’।
রাতের শেষের ভাগে সাহরিটা খেলে
রাখতে যে পারিবি রোযা দিনে হেলে-দুলে।
উঠে আয় বোসে পড় হাত-মুখ ধুয়ে
সাহরি রাখিছি আজ পোলাও পাকিয়ে।
কোথা গেলো ঘুম মোর শুনেছি যখনো
‘পোলাও’ শব্দে এসব থাকে কি কখনো?
দুই লাফে খাট ছেড়ে হাত-মুখ ধুয়ে
গফাগফ ঢালিলাম উদর-আলয়ে
বেস মজা শেষ হলো পাতের সকল
প্লেট থেকে পেটে গিয়ে নিয়েছে দখল
আহ্! কি যে মজাদার সাহরি খেলাম
নিয়তটা পড়ি মুখে ‘আছু-মা গাদাম’।
অমনিতে মসজিদে মুয়াজ্জিন ডাকে
না খাবার বাঁশি দিয়ে হুআকবার হাঁকে
দলে দলে যায় লোকে মজিদের পানে
নামাযের অন্তে ফের ঘুম মোরে টানে.....
[এসব এখন স্মৃতিকথা। শৈশবটা এভাবেই কাটতো। বলতে পারেন রমজানে নিত্যদিনের রুটিন। কিন্তু কালের গর্ভে সে সব সোনালী দিন এখন অতীত। তবু মনে পড়ে, মিস করি।]
♦পুঁয়াতির ভাত= সাহরি। (চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষা।
♦মজিদ= মসজিদ।
(৩১ মে-১৮
বিষুধবার, মধ্যরাত
সাদিয়া ভবন, হামজারবাগ, চট্টগ্রাম।)
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন