সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

মনের মাঝে

প্রাণপ্রিয় সকল সুন্নি জনতার প্রতি উৎসর্গ___

           ★মনের মাঝে তপ্ত ব্যথা★

                    মুহাম্মদ সৈয়দুল হক

মনের মাঝে তপ্ত ব্যথা চোখের কোনে জল

    গহীন ফাটল সুন্নিয়তে আর কতদিন বল?


কাউকে বলি কাফের ভন্ড, কাউকে দালাল

     কাউকে বলি ফতোয়াবাজ, কাউকে আবাল!


দারুন একটা গল্প বলি, একটু খানি শুনো

      ভুল হলে শুধরে দিও, সঠিক হলে মানো।


‘‘এক বনে এক মহিষ পালের বিবাদের কাহিণী

      দু-দলে বিভক্ত হয়ে, সে কি কানাকানি!


এক দল অপর দলকে দেখে মারতে আসে তেড়ে

   অপর দলের গালমন্ধতে মনের ক্ষোভ ঝাড়ে।


এভাবে তা চলছিল বেশ রেশারেশির মেলা

      মাঝে মধ্যেই বেঁধে বসতো উঠকো ঝামেলা।


এই না দেখে হিংস্র বাঘে সুযোগ খুঁজে বেড়ায়

  ঝোঁক বুঝে তাই খোপ মারে,পালে হামলা চালায়।


দিনে দিনে মহিষ সংখ্যা কমতে থাকে বেশ

   মহিষ পালে ব্যাঘ্র দালাল বাড়ায় ঝগড়ার রেশ।


এভাবে তা চলতে থাকে, বাড়তে থাকে ক্ষত

      সবটায় গেল বাঘের পেটে মহিষ ছিল যত!


তাইনা দেখে পন্ডিৎ শিয়াল স্ব-আপসোছে বলে,

   ‘বংশ ধ্বংস করলিরে মেষ, ‘কলহের অনলে’’।


    দ্বন্দ্ব সংঘাত মাটি চেপে হলে একতা

          হিংস্র বাঘে কি করিত থাকলে সমতা?


একের বোঝা দশের লাটি গেলি কেন ভুলে

     রক্ষিতি সব একিসাথে মিলেমিশে থাকলে’।

 

মতের অমিল যত গরমিল আপোসেতে বসে

     মিমাংসা তা যায়রে করা ভ্রাতার হাসি হেসে।


অল্প স্বল্প বিবাদ হলে আহামরি কি আর?

    আকিদাতে থাকলে অটল দেয়া যায় তা ছাড়!


সুন্নি মতাদর্শ যাহা কোরআন-সূন্নাহ্ও তাহা

    বাংলাদেশের যে সুন্নিয়ত বিশ্বমাঝেও তাহা!


উনিশ বিশের ব্যবধান মানিয়ে নেওয়া গেলে

     একটা ‘ক’ এর ব্যবধানে বিভেদ কেন চলে?


প্রচার যাহা কাম্য ছিল রূপ নিল অপপ্রচারে

     বাগযুদ্ধের এই রচনায় কে ছাড়ে আর কারে?!


আলা হযরত, শেরে বাংলা, ফারুকির সুন্নিয়তে

     বিভেদ নামক বিশফোঁড়াটা ছিল নাতো তাতে!


   ছিল যত জিহাদ তাদের, বাতিল সবটা জুড়ে  সুন্নিরা আজ একে অপরের পায়েই কোড়াল মারে!


  দৃষ্ট্রান্ত তো দিয়েই গেলেন শেরে বাংলা আমার

আপন পীরকে কাফের বলে ডাক দিল মীমাংসার।


কিন্তুরে ভাই ফেইসবুকে যা দেখে অশ্রু ঝরে

       সুন্নি নামের সুন্নিরা আজ বেঁধে ঝগড়া করে।


হও হুঁশিয়ার সুন্নিয়তের সকল সুন্নি ভাই

      ছেছড়া পিচ্ছি সৈয়দ ঐক্যের গান গেয়ে যায়।


ভুল বুঝোনা ছোট মুখের বড় কথা দেখে

    ঐক্য গড় মতানৈক্য ছেড়ে সকল বিভেদ রেখে।


উদ্দেশ্যহীন এই কবিতার উদ্দেশ্য যে বিশাল

     একটু ভেবে দেখলে তবে বুঝবে তারি কামাল।


জানি,,,,

ছোট মুখের ছোট কথায় কান দেবে না কেউ

     মনের ভেতর তপ্ত ব্যথা সাত সাগরের ঢেউ।


হায়রে যদি সকল সুন্নি এক হয়ে কাজ করে

     শহীদ ফারুকিদের আবার, কে বা শহীদ করে?


চতুর্দিকের রাগব বোয়াল হিংস্র হায়েনারা

   লেজ গুটিয়ে শির লুকিয়ে পালাতো যে তারা!


স্বপ্ন দেখি, স্বপ্নে থাকি সুন্নি ঐক্য গড়ার

    কোন সে প্রভাত-সূর্য দেবে কাটিয়ে অন্ধকার....!

                                                      (অসমাপ্ত)

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

ধর্মটা যে ধর্ম নেই

ধর্মটা যে ধর্ম নেই আর —মুহাম্মদ সৈয়দুল হক ধর্মটা যে ধর্ম নেই আর চর্ম কেবল আছে তা’য়, ধর্মমূলের কর্ম সকল দূর হয়েছে অচিন গাঁ’য়। জুব্বা টুপি পাগড়ি সবি বাড়ছে ক্রমে দিনে-দিন, মানুষগুলো হচ্ছে কেবল মুহাম্মদের ধর্মহীন (দরুদ)। তথ্যমতে নিত্য যারা গরীব-দুখীর ভাত মারে, গিয়ে দেখো ইদ-জুমাতে তারাই প্রথম কাতারে। যেই হুজুরে দিন-দুপুরে হালাল-হারাম বয়ান দেয়, দুই থেকে চার পয়সা পেলে ইমানখানাও বেইচা দেয়। পীর-সাধক আর ধর্মগুরুর বাড়ছে অভাব নিত্যদিন, পাত্র দেখে ছাত্র পোষে পীর নিজে বেশ ধর্মহীন। সহিহ হাদিস করছে হদিস দিনমজুর আর দিন-ফকির, মুহাদ্দিস আজ কলেজ-বালক ডাক্তারে-ও মুফাস্সির। প্রাথমিকের বাল-বালকে কাফের বলে রায় ছাড়ে, সোশ্যাল মামুর এই জগতে কার সাথে আর কে পারে! গাঞ্জা খেয়ে মঞ্চে উঠে পাঞ্জা দোলায় দেয় বয়ান, মোল্লা-মুনসির এই দশাতে যাবে কোথায় মুসলমান? কেউবা খেলে ফুটবল আবার কেউবা চড়ে রকেটে, দর্শকে কয় মারহাবা-জী হাদিয়া ভরুন পকেটে। সকাল থেকে রাত অবদি, রাত্র থেকে সকাল-তক, দীনটা ছিল সবটা-জুড়ে সবটা যেন থাকে হক। কর্ম যত ধর্ম সবি বলছে কুরআন মজিদে, অকর্মা...

পথে পথে-২

পথে পথে-২ ঢাকা থেকে মহানগর প্রভাতিতে চড়ে সোজা নারায়ণগঞ্জ বন্দরে পৌঁছলাম। সাথে আছে সদ্য প্রকাশিত ‘বাংলা কাব্যে নবী-বন্দনা এবং নজরুলের মুনশিয়ানা’র লেখক আবু সাইদ এবং স্নেহাস্পদ মুকিম। যাবো আল্লামা বাকি বিল্লাহ (রহ.)র প্রতিষ্ঠিত গাউছিয়া তৈয়বিয়া তাহেরিয়া মাদরাসায়। সামনে বুড়িগঙ্গা। পার হতে হবে। ঘাটে নৌকার হুড়োহুড়ি। দু-তিনজন মাঝি একসাথে ডাকাডাকি করছে—আয়েন হুজুর আয়েন। নিজেকে ভিআইপি ভিআইপি মনে হচ্ছে। পেছন পেছন আরও কিছু লোকের আগমন। মাঝিরা এবার আমাদের ছেড়ে ওদের ডাকছে। বুঝলাম—এ ঘাটে যারা আসে সবাই ভিআইপি। অতিরিক্ত ভাবসাব বাদ দিয়ে দ্রুত উঠে পড়লাম। উঠেই গান শুরু— “বাঁশখালিইইইই, মইশখালি      পাল উড়াইয়া দিলে সাম্পান গুরগুরাই টানে— হন হন যাবি আঁর সাম্পানে। কর্ণফুলীর মাঝি আঁই   নিয়ুম ভাটি-উজানে, হন হন যাবি আঁর সাম্পানে ও তোরা, হন হন যাবি আঁর সাম্পানে।” মুকিম রসিকতার সুরে বললো—“ভণ্ডামি বাদ দেন ভাই, এটা কর্ণফুলী না; বুড়িগঙ্গা।” তার পিঠে কষে এক চড় দিয়ে বললাম—আবে হালা, ঢাকাইয়ারা বুড়িগঙ্গা নিয়া না-লেইখলে মুই কী করবাম? আবু সাইদের মুখটা কেমন জানি ফ্যাকাসে দেখাচ্ছে। বাড়ি কুমিল্লা...

ধ্রুব

ধ্রুব ধ্রুব চা খাচ্ছিল। খেতে খেতে ভাবছে। ভাবতে ভাবতে খাচ্ছে। কোনটা আগে? ভাবনা না খাওয়া? খাওয়া না ভাবনা? আরে, এটা তো পান করার জিনিস; খাচ্ছে কেন? যাব্বাবা, কী যে মাথামুণ্ডু ভাবছে—কে জানে! পানকে খাওয়া ভেবে ভাবনার অপমান হয়েছে ঢের। আর না। এবার খাওয়ায় মনোযোগ দেয়া যাক। হে হে, মনোযোগ দেবার আগেই মনোভাব পাল্টে গেল? আবারো খাওয়া? ভাবনার মান-ইজ্জত একেবারে শেষ। কিন্তু না, এভাবে শেষ হতে পারে না। সে ভাবুক৷ ভাবনার অপমান সে হতে দেবে না। প্রয়োজনে পানকে যে-কোনো রীতিতে খাওয়া বানিয়ে ছাড়বে। আচ্ছা, চা’কে বিরিয়ানি ভাবলে কেমন হয়? হাঁ, বিরিয়ানি ভাবলেই হয়ে যায়। খাওয়া-পানের দ্বন্দ্ব শেষ। তা-ছাড়া চা আর বিরিয়ানির কালারটা কাছাকাছি। বিরিয়ানিতে ঝোল ঢালা হোক। মাখামাখি করে পান্তাভাত বানানো যাক। এবার পান্তাভাতের তরিকায় পুরুত পুরুত টানা যাক। আহা! সে কী স্বাদ, সে কী স্বাদ! ধ্রুব এবার চিৎকার দেয়—পৃথিবী বিরিয়ানির, পৃথিবী বিরিয়ানির। চায়ের কাপটা আর কাপ নেই। আকাশের বুকে সুসজ্জিত থালা। থালাটা আবার চাঁদের মতো। সে চাঁদে ঝিলিক মারছে। চাঁদটাকে একবার ডানহাতে, আবার বাঁহাতে। সেটাকে আবার কিছুক্ষণ পরপর মুখে পুরে লম্বা চুমুক। চু...