পাঞ্জেরীর গল্প বলছি, শুনবে?
-মুহাম্মদ সৈয়দুল হক
পাঞ্জেরী। যিনি জাহাজের অগ্রভাগে দাঁড়িয়ে পথ নির্দেশ করেন। আঙুল দিয়ে যিনি দেখিয়ে দেন- ওদিকে চলো, তবেই গন্তব্যে পৌঁছুতে পারবে। আমি দিকহাঁরা ভ্রান্ত পথিকের ন্যায় হাঁটছিলাম। লক্ষ্যহীনভাবে কখনো এদিক তো কখনো ওদিক-এই করে করে খেটে মরছিলাম। কখনো কোমর বেঁধে নামছিলাম তো কখনো হতাশ হয়ে দু’কদম পিছিয়ে পড়ছিলাম। অতঃপর জাকার মেকারের কারিশমাতে একজন পাঞ্জেরী জোটে গেলো। আমার পথটা কেবল দেখিয়ে দিলেন না, বরং হাতটা ধরে এগিয়ে নিয়ে চললেন এই বলে- আমার সাথে এসো। বলে দিলেন- এটা করো, ওটা করো না। এটা ঠিক, ওটা ঠিক না। চেনেন, ওনি কে? হাঁ, ঠিকই ধরেছেন- আবুল কাশেম মুহাম্মদ ফজলুল হক।
বিশেষণ লাগাইনি। কেন জানেন? ‘কাজী নজরুল ইসলাম’ নামটা শুনেছেন নিশ্চয়? কিছু মানুষ আছে, যাঁদের নামটাই যাবতীয় বিশেষণকে হার মানায়। মনে হয় যেন- ঐ নামটাতেই বিশেষণেরা এসে লজ্জায় লালে লাল হয়ে ঘাপটি মেরে লুকিয়ে পড়েছে। ঐ নামের সাথে যেন কোন বিশেষণেরও তুলনা চলে না। তেমনই একটা নাম- আবুল কাশেম ফজলুল হক। বিশেষণ ছাড়াই বিশেষিত! হাতটা ধরে টেনে নিয়ে লক্ষ্যে পৌঁছে দেয়া এক পাঞ্জেরী।
‘ল্যাপটপ’টা সময়ের সেরা স্কলারদের হাত থেকে এই গরীবের হাতে এসেছে আলহামদুলিল্লাহ! হুজুরের স্নেহের পরশ, সিদ্দিকি (মুহাম্মদ মুহিব্বুল্লাহ সিদ্দিকী) ভাই, তুষার (Imran Hussain Tushar) ভাই, মির (আপনের নামটা মেনশন হচ্ছে না কেন?) ভাইদের আন্তরিকতা মুগ্ধ করেছে বেশ। মোর বেয়াই আশিক (Mohammad Mesbahul Islam Akib) আর ‘ক’ গ্রপের প্রথম স্থান অধিকারী সাঈদ (Abu Sayed Noyon) ভায়ের বারোটা বাজিয়ে ছেড়েছি বলে sorry’ত😆। হাতিরঝিলে ঘুরাঘুরির সময় বার বার হারিয়ে যাচ্ছিলাম, আর ওনারা খোঁজে খোঁজে হরয়ান! কি যে মগা😂, আমি হারাচ্ছি বলে কেউ আমায় খোঁজছে-তা নয়, বরং কেউ আমায় খোঁজছে বলে আমি হারিয়ে যাচ্ছিলাম। এরকম কেউ খোঁজে নেবে এমন গ্যারান্টি থাকলে আমি আজীবন স্বেচ্ছায় হারিয়ে যেতে থাকবো। আছে কি কেউ? যাহোক, এ দুজন মিলে আমার ঢাকা-সফরটা বহু রঙে রাঙিয়ে দিয়েছে। অতিথি হিসেবে নয়, যতক্ষণ ছিলাম, মনে হয়েছিলো আমি ওদেরই একজন। ঢাকা’টা আমার বাড়ি নয়, এটা তারা বুঝতেই দেয় নি। কৃতজ্ঞ বস, আপনাদের প্রতি কৃতজ্ঞ। ও হাঁ, পিচ্ছিটা
(Shiekh Ahmed Rakib ক গ্রুপের তৃতীয় স্থান অধিকারী) কায়দা করে ল্যাপটপটা নিয়ে নিতে চাইছিলো, কিন্তু ল্যাপটপটার সাথে আমার বিয়ে হয়ে যাওয়াতে দেয়া হলো না। বউকে তো দিয়ে দেয়া যায় না, তাই না সিমপনী বয়? কেন দেই নি বুঝেছো? আরে আরে আরে, ইফতেখারাইনের কথাতো লিখাই হলো না। ওরা দুজন। দুজনেই ইফতেখার(Ifthaker Mishuk & Iftekar Raju)। অনেকটা মিরাক্ষেল সিস্টেমে ওরা মিলে গেলো সফরসঙ্গি হিসেবে। দুজনেই অমায়িক, একেবারে সহজ-সরল নিখাঁদ ভালো মানুষ।
শেষ করবো, তার আগে বলতে চাই- আপনার মাঝে লুকিয়ে থাকা সুপ্ত প্রতিভাকে জাগিয়ে দিতে ‘আল-নুর ফাউন্ডেশন’ বদ্ধপরিকর। নেতৃত্বে আছেন ঐ যে পাঞ্জেরীর কথা বলেছিলাম শুরুতেই- শ্রদ্ধেয় ফজলুল হক হুজুর। প্রস্তুত থাকুন সামনের প্রতিযোগিতার জন্য। সময় থাকতে আপনার প্রতিভাকে বিকশিত করুন। কথায় আছে- ‘সময়ে যে না দেয় চাষ
তার দুঃখ বারোমাস।’
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন