ঈমামের উরসের অর্ধশতবর্ষে তামাম মুক্তাদির প্রতি দু’কলম
-মুহাম্মদ সৈয়দুল হক
কোন ওহাবীর কানে কানে গিয়ে শুধু বলুন- শেরে বাংলা আসছে। কোন কিছু বুঝে উঠার আগেই হয়তো সে আচমকা বৈদ্যুতিক শর্ট খাওয়ার মত করে পাঁচ থেকে সাতহাত দূরে ছিটকে পড়বে। মওদুদিবাদী কারো মঞ্চে শেরে বাংলা সেজে হঠাৎ উঠে পড়ুন, সে জ্ঞানশূন্য হয়ে পলায়ণ করবে। কাদিয়ানি-শিয়া-সালাফিরা তো ক্ষুদ্র পুঁটি। কুপ পেয়েই মহাসাগর ভেবে তিড়িং-বিড়িং লাপাচ্ছে। ওদের শেরে বাংলার বাস্তব মহাসাগরে ছেড়ে দিন। হতভম্ব হয়ে যাবে।
জ্বি, উপরের কথাগুলো কাল্পনিক। তবে শেরে বাংলার জীবন পর্যালোচনায় আমি এমন অসংখ্য তথ্য পেয়েছি। এমন চাঞ্চল্যকর ঘটনাগুলো ঈমামের জীবদ্দশায় প্রায়সময়ই ঘটতো। তখনকার সময়ে এগুলো ছিলো বাতিলবধের প্রধান মাধ্যম। কিন্তু সময় পাল্টেছে। পাড়ায়-মহল্লায়, রাস্তায়-বাজারে সাজানো মঞ্চগুলোতে বসে হাজির-নাজির, এলমে গায়েব, নুরনবীর আলোচনায় এখন আর বাতিলরা ডরায় না। হুম, ভয় করে না। শেরে বাংলার সময় করতো, এখন করে না। সত্যিই করে না। তাদের চৌদ্দগুষ্ঠি উদ্ধার করে ছাড়লেও তেমন গায়ে মাখে না।
তো তারা ডরায় কাকে? টেলিভিষনকে। টিভিকে? হাঁ, তাদের বর্তমান ভয় টিভিকে। ইউটিউভকে। ভয়কে তারা জয় করেছে। টিভির পর্দায় কাজী নামের পাজিদের সর্বত্র আনাগোনা। ‘শায়খ’ লকবধারি গোমটাওয়ালা নাদুস-নুদুস কথাবার্তার মিষ্টিগায়করা ইউটিউভকে তাদের পৈত্রিক সম্পদ বানিয়ে ছেড়েছে। সাপের মুখ থেকে মধু বের হতে দেখেছেন কখনো? আমি দেখেছি। ঐ যে, ঘোমটাওয়ালা বিশাল বিশাল সাপ। তারা বিষগুলোকে রিপাইনিং মেশিনে প্রক্রিয়াজাত করে মিষ্টিরূপে বিতরন করছে। ট্রেনিংপ্রাপ্ত বিচক্ষণ লোক ব্যথিত আমজনতারা তা ধরতে পারছে না। পারা সম্ভব না। তাই তারা ঘোগ্রাসে গিলছে। তারা ফলের ভেতরের ফরমালিন নামক বিষ দেখে না। উপরের তরতাজা ভাবটা দেখে। অতএব ওটা প্রদর্শন বাঞ্চনীয়। তাই মিষ্টভাষী হোন। জনতা গ্রহণ করবে।
শেরে বাংলার সময় তাদের(বাতেলদের) অবস্থান মাঠে ছিলো, পাড়াগাঁয়ে মানুষকে প্রতারিত করতো। শেরে বাংলা তাই ওখানে ছোটে যেতেন। হুঙ্কার ছেড়ে ছাগলদের বিতাড়িত করতেন। প্রেক্ষাপট বদলে ওটা পাড়াগাঁ থেকে টিভি-টিউবে পৌঁছে গেছে। মুক্তাদিদের কোথায় যাওয়া উচিৎ? বলুন। উত্তর দিন। কুপতূল্য জ্ঞান নিয়ে তারা তা নেটওয়ার্কে যুক্ত করে পৃথিবীময় ছড়িয়ে দিচ্ছে। আর আপনারা মহাসাগর হয়ে পাড়াগাঁ-খানেকায় বসে আছেন? প্লিজ, অনুরোধ করছি। পায়ে ধরছি। আপনাদের মহাসাগরের পানিগুলো টিভি-টিউভে ঢেলে দিন। কুপবাসিরা কুল হারিয়ে সেখানে সাতরাতে থাক। বিশ রাকাতের জলোচ্ছ্বাসে(অসংখ্য ভিডিও-প্রোগ্রামে) আট রাকাত ভেসে যাক। জান্নাতবাসি আবদুল্লাহর সন্তানদের আনাগোনায় জাহান্নামবাসি জাহেল প্রেতাত্মারা হাঁরিয়ে যাক। শেরে বাংলার শিক্ষা এটাই- যেখানেই বাতিলের আনাগোনা বেশি, সেখানেই হুঙ্কার ছাড়া। প্রকৃতির শিক্ষাও এটাই। যেখানে মশাদের উৎপাত বেশি, স্প্রে সেখানেই মারা। কয়েল ওখানেই জ্বালানো। সময় অনেক ক্ষয় হয়েছে। এবার ঈমানী কয়েল জ্বালিয়ে মশাদের বিতাড়িত করুন।
ও হাঁ, আজ ঈমামের উরস। বাতিলবধের আগে মুক্তাদিদের ঈমামের শরনাপন্ন হওয়া উচিৎ। অতএব, দৌড়ে যান। ফয়েজ নিয়ে আসুন।
বিষুদবার, মধ্যাহ্ন।
২৯-০৩-১৮
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন