পড়ুন এবং শেয়ার/কপি করুন।
★মশক ঈমাম★
-মুহাম্মদ সৈয়দুল হক
দেখুন না- সে কখন থেকে এপাশ ওপাশ করছি, ঘুম আসেই না। হারামজাদা মশা দুটা কানের ঠিক নাক বরাবর এসে ঘ্যান ঘ্যান, ঘ্যান ঘ্যান করেই যাচ্ছে। কম্বলমুড়ি দিলাম তাতেও শান্তি নাই। শান্তির বাপ আসলে মইরা গেছে। নইলে এইটুকু ফাঁক, তা দিয়েই কেমনে মরার মশক ঢুকে পড়ে? ঢুকছে তো ঢুকছে, শান্তমতে আমার পাশে শুয়ে থাক, তা না। ঐ বেসুরা গলায় গান শোনাতেই হবেক। শুধু কি গান? মহামান্য মশা সাহেব অত কিপ্টা না যে গান শুনিয়ে ক্ষান্ত হবেন। যাবতীয় নোংরা কিসিমের সুঁইগুলা দিয়ে ইঞ্জেকশন না দিয়ে ছাড়বে না। রক্ত পিয়াসু এই মশা সাহেবকে নিয়ে আর পারা গেলো না, যারা বহু অনুসন্ধানেও ছিদ্র পাইনি, তারা কম্বলের বাইর থেকে জোর গলায় চেঁচাচ্ছে। ভাবসাব এমন যেন, ‘আমরা জাতে মশা তালে গোলমাল’ বংশের প্রাণী! আমাদের গান শুনতেই হবে! আমরাই পৃথিবীতে একমাত্র গায়কদল, বিগত কয়েক শতাব্দির হারিয়ে যাওয়া গানের ঐতিহ্য আমরাই ফিরিয়ে এনেছি। আমাদের মান্যবর মহান মশারাজ, মশাঈমাম এ পৃথিবীতে এ মুহুর্তে একাই রাজাধিরাজ.............. ইত্যাদি ইত্যাদি।
ভাবছেন মশা নিয়ে কেন এত মশকারি? আরে নাহ, এ তো সবার জানা কথন। এভাবে মশকবাজি করার কি আছে? আমি আসলে মশকজ্বির এ আচরণে অন্যকিছু পেয়েছি, যেমনি ভাবে আশিক ( Mohammad Mesbahul Islam Akib) ঐদিন টিউব লাইটের ভেতর মাল খোঁজে পেয়েছিলো। আমি অবশ্য মাল না পেলেও মশকের এ তালের ডালে খানিক ঝাল কিছু পেয়েছি। যা মশাঈমামের হাতাভারিরা খেলে গাল নয় গায়ের ছাল পর্যন্ত জ্বলতে থাকবে, এবং জ্বালানি নিবানোর জন্য তাদের গা তাদের ঈমামের পিঠে ডলতে থাকবে। ঈমাম সাবরে চেনেন তো? ঐ যে, মহামান্য জোঁকের ঈমাম, হেইডা আর কি। তেনার কিছু ফ্যান-পলোয়ার আছে ফেবু জগতে। ওদের গানও কিন্তু সেই মশক মহাশয়ের মতই। যতই ইগ্নোর করেন না কেন, শুনতেই হবে! আজব দুনিয়া, কমেন্টে না গেলে ট্যাগ মারবে, মেসেজ দিয়ে ইনবক্স ফুল করে ছাড়বে, তবুও গান শোনাবেই! হতচ্ছড়া মশাদের মত কম্বল মুড়ি দিয়েও শান্তি পাবেন না, একটু ফাঁক-ফোঁকর পেলেই ঢুকতে চাইবে। প্রয়োজনে টাকা দিয়ে হলেও তাদের এবং তাদের মহামান্য ঈমামের মশক কন্ঠের গান আপনাকে শুনতেই হবে। আপনার ভালোবাসার স্বাদের শরীরের যায়গায় যায়গায় বেঈমানি বিশাক্ত ইঞ্জেকশন মারতে বসে থাকবে। এ ক্ষেত্রে তাদের প্রধান টার্গেট হাতিমার্কা বতন ওয়ালা মদনরাই, যাদের শরীরে রক্ত প্রচুর, বংশ গৌরব দিয়ে যারা সবার শ্রদ্ধার পাত্র। এ টাকার খেলায় কেউ কেউ তাদের চৌদ্দপুরুষের গৌরবকে জলাঞ্জলী দিচ্ছে, আবার কেউ কেউ টাকার ঝাঁকানাকা ঝুলির ডুলডুলিতে চোখ না দিয়ে নিজ নিজ আলয়ে মহামান্যের আসন লয়ে বসে আছে। জনসাধারণকে এ ব্যপারে সথর্ক করছে না। ‘যার তার কোয়াইসে তাত্তা মরক’ (যে যেদিকে যাবে যাক) আমি ঠিক থাকলেই সব ঠিক টাইপের চিন্তাধারা নিয়ে মান্যবররা তাঁদের অনুচরদের নিয়ে নিজেদের মত করেই চড়ে চলেছে।
অতএব, একজন পাঞ্জেরী চাই, যে ‘পাওয়ার কয়েল’ জ্বালিয়ে ঈমানী ধোঁয়া ছড়িয়ে ঈমামসুদ্ধ এ নোংরা মশক বাহিনীকে দুনিয়া ছাড়া করবে। পাবো কি গো সে পাঞ্জেরী? আছে কি কেউ? ঈমানী পাল তুলে দাঁড় টেনে সে দাড়াবে কি?
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন