লেখাটি পড়ার আগে পোস্টে দেয়া প্রথম ছবিটা একবার ভালোভাবে দেখুন।
জ্বি হাঁ, ছোট বিন্দুটা পৃথিবী। ছবিটি মঙ্গলগ্রহ থেকে নেয়া৷ কী ভাবছেন? আমরা খুব ক্ষুদ্র জায়গায় আছি? তবে আপনাকে আরেকটু অগ্রসর হতে হবে। মঙ্গলগ্রহ সম্পর্কে আপনি নিশ্চয় অবহিত। এটা সূর্যের আট গ্রহের একটি। পৃথিবী থেকে কিছুটা বড়ো।
সবাই জানি, সূর্যের আটগ্রহ সূর্যকে কেন্দ্র করে নির্দিষ্টি কক্ষপথে ঘুরছে। সাথে আরো যা যা আছে সেগুলোও। কিন্তু সূর্য কাকে কেন্দ্র করে ঘুরছে? ‘মিল্কিওয়ে’ নাম শুনেছেন? ওটা আমাদের গ্যালাক্সি। ওটাকে কেন্দ্র করেই সূর্যের ঘূর্ণন। একবার ঘুরে আসতে সময় লাগে প্রায় ২২৫ থেকে ২৫০ মিলিয়ন বছর! এভাবেই ঘুরছে। তার সমস্ত সৌরজগত সাথে নিয়ে। সবার দেখছি ঘুরাঘুরি ছাড়া আর কোনো কাজই নেই।
এবার আরেকটু চমকে দিই। মিল্কিওয়েকে কেন্দ্র করে কি সূর্য একাই ঘুরছে? না। একা হলে সেটা আর গ্যালাক্সি হতো না৷ গ্যালাক্সি মানে ছায়াপথ। যা নির্দিষ্ট একটি আবর্তে অসংখ্য নক্ষত্রের ঘূর্ণনের মাধ্যমে সৃষ্টি হয়েছে। অসংখ্য নক্ষত্র বলতে? সে সংখ্যা কত? হাতে গননা করা শক্তি কারো নেই। প্রায় ১০০ ট্রিলিয়নেরও বেশি! ভাবা যায়? ১০০ ট্রিলিয়ন সূর্য(আয়তনে সব সমান না, কোনোটা আমাদের সূর্যের চেয়ে বড়ো আবার কোনোটা ছোট) একসাথে ঘুরে চলেছে!
এবার আরেকটু জোরে ধাক্কা দিতে চলেছি। মহাবিশ্ব কি শুধু ঐ(মিল্কিওয়ে) একটি গ্যালাক্সি নিয়ে গঠিত? গেল শতাব্দীর শেষ দশকের মাঝামাঝিতে এসে বিজ্ঞানীরা সিদ্ধান্তে পৌঁছান এ সংখ্যা প্রায় দুই ট্রিলিয়ন বা ২ লাখ কোটি। এবং তা ক্রমশই সম্প্রসারিত হয়ে চলেছে। এর উপসংহারে বলা হয়েছে, ছায়াপথগুলোর ৯০ শতাংশ এখনকার সবচেয়ে শক্তিশালী টেলিস্কোপের সাহায্যেও দেখা যায় না। কারণ, হয় এগুলো একেবারেই ক্ষীণ না হয় অনেক বেশি দূরে।
মোটকথা, পৃথিবী এবং অন্যান্য সমস্ত গ্রহ, সূর্য ও অন্যান্য নক্ষত্র, জ্যোতির্বলয়স্থ স্থান ও এদের অন্তর্বর্তীস্থ গুপ্ত পদার্থ, ল্যামডা-সিডিএম নকশা, তমোশক্তি ও শূণ্যস্থান (মহাকাশ)–যেগুলো এখনও তাত্ত্বিকভাবে অভিজ্ঞাত কিন্তু সরাসরি পর্যবেক্ষিত নয়–এমন সব পদার্থ ও শক্তি মিলে যে জগৎ তাকেই বলা হচ্ছে মহাবিশ্ব বা বিশ্ব-ব্রহ্মাণ্ড (উইকিপিডিয়া)।
এবার আসুন, সাত আসমান কোথায়? জান্নাত-জাহান্নাম? আরশ-কুরসী-লৌহ-কলম? কোনো উত্তর নেই। আল্লাহ ও তাঁর রাসূলই ভালো জানেন–এটাই সবচে’ বড়ো উত্তর।
এতক্ষণ প্যাচাল পারার মূল রহস্য বলি। আজ পীরানা পীরের জন্মদিন। দীনের পূণর্জীবনদাতার। তিঁনি কে? কী তাঁর অস্তিত্ব? কেমন স্বত্তা তিঁনি? চলুন, একটি বাণী পড়ি।
“নাজারতু ইলা বিলা-দিল্লাহী জামআন
কাখারদালাতিন আলা হুকমিত তিসালি।”
‘আমি আল্লাহর সমগ্র বিশ্বজগতের দিকে দৃষ্টি দিলাম। এবং সেটিকে একটি ক্ষুদ্র সরিষার দানার মত দেখতে পেলাম।’ এবার একটু শুরুতে যান। সেখান থেকে ভাবা শুরু করুন। পৃথিবীর ঐ ক্ষুদ্র বিন্দু থেকে। তারপর আস্তে আস্তে বিশ্বব্রহ্মাণ্ড ঘুরে আসুন। কল্পনার মাধ্যমে। এরপর বড়ো পীরের এ বাণীতে ডুব দিন। তার গভীরতায় দৃষ্টি দিন। তিনি কোন জিনিষকে সরিসার দানার সাথে তুলনা করলেন? এ বিশ্বব্রহ্মাণ্ডকে? না, খোদার খোদায়ী যা আছে সবকিছুকে। ভাবুন। তাঁর দৃষ্টিশক্তি কীরূপ? তাঁর অবস্থান কোথায়? তল পাচ্ছেন? সম্ভব না। তিঁনি অতল। তাঁর সত্তার কুলকিনারা নেই৷ তাঁকে মাপার সাধ্য কারো নেই। শুধু উচ্চস্বরে একটি চিৎকার দিন,
“ইয়া গাউস, আল মদদ”।
বিনয়চিত্তে প্রার্থনা করুন,
“কাদেরি কর, কাদেরি রাখ, কাদেরিওমে উঠা
কদরে আবদুল কাদেরে কুদরত-নুমাকে ওয়াস্তে।”
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন