সেই যে কথা হয়েছিল...
সেই যে ভেসেছিলাম
মোহনীয় কণ্ঠে তার,
চলে গেছে কত প্রহর, কত দিন,
শোনা হয় না আর।
কত নিশি পার হলো ভেবে ভেবে—
এই বুঝি তার কণ্ঠ শোনা যাবে।
আজ-ই বুঝি আসবে
কথার জাদুতে ভাসাবে—
আমার মন-প্রাণ সবে।
ভেবেছি,
প্রহর থেকে প্রহর শেষ হয়েছে।
আশায় বুক বেঁধেছি—
ঝরনাধারার মত কলকল শব্দে
আমি ভিজবো রাতভর,
তটিনীর ছলছল ঢেউয়ের মত ভেসে যাবো
তার নির্মল কণ্ঠের স্রোতধারায়।
অনুভবে শূন্যে ঘুরে বেড়াবো
তার মায়াবী কণ্ঠে ভেসেভেসে।
হয়নি; সে আশার দরিয়া শুকিয়ে গেছে।
শুকোবে নাই বা কেন?
তটিনী যে জেদ ধরেছে,
একটি জোয়ারও এ পাড়ায় আর মাড়ায় না।
মায়াবিনীর সে চেহারা!
কত অনুনয় গেল,
কত অনুরোধ করা হলো—
মিললো না। সে এক আরাধ্য বস্তু।
শত আরাধনায়ও মিলে না।
বুকে ফেটে যাক,
কলিজা ছিঁড়ে চৌচির হয়ে যাক,
কাঁদতে কাঁদতে
বালিশের অর্ধেকটা ভিজে যাক,
তবু মিলবে না।
রূপসী তার সিদ্ধান্তে একচুলও নড়বে না।
অতপর, সাতরাজার ধন,
মায়াবী সে বদনখানি দেখা হয় না—
সে বহুকাল আগে থেকেই।
আবেদন যায়—দেখবো।
জবাব আসে—দেখেছেন তো!
আচ্ছা, বলো তো, চাঁদকে মানুষ
এক জনমে কতবারই না দেখে।
তবু কি স্বাদ মিটে?
চাঁদের রূপ—
সে তো হাজার বছর পরেও একই;
পরিবর্তন নেই কোনো।
তবু কত কবি, কত লেখক, কত স্বপ্নচারী
প্রতিনিয়ত চাঁদের দিকে
অপলক চেয়ে থাকে,
কত গান লিখে, কত ছবি আঁকে।
বলো, তার রূপের কি শেষ আছে?
তারে দেখার স্বাদ কি মিটে?
চাঁদ কি কখনও প্রশ্ন করেছে—
এত দেখার কি আছে? করেনি।
প্রশ্ন কেবল আমার বেলায়।
যাকে চাঁদ ভেবে
মন জুড়াবো বলি চোখ মেলি
সুরভী নিতে যার, বুকেতে টানি
গোলাপরাঙা উষ্ণ ঠোঁটের কীর্তনে মাতি
সে কেবল প্রশ্নই করে,
প্রশ্নবানে কেবল-ই ঝাঁজরা করে দেই।
কোমল হৃদয় মোর, ভারসাম্যহীন দেহ
আর কত সই,
বলো সখী, আর কত সই?
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন