সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

সেই নেতাদের জাত মারি

সেই নেতাদের জাত মারি
—মুহাম্মদ সৈয়দুল হক

কাঁদছে ওরে দীন-দুখীনি, কাঁদছে আমার প্রাণের ভাই
অবুঝ নাদান পুত্র আছে, পেটে দেবার খাদ্য নাই।

করোনার ঐ করুণ ছোবল এই পাড়াতে আইসে নাই
ভাত যে খাবে চাল কিনিবার-ডাল রাঁধিবার পয়সে নাই।

বন্ধ হলো কাজের গতি, পেটের গতির বন্ধ কই
নিজের পেটে মানলো শেষে ঘরের পেটে মানলো কই?

টিভির খবর মারছে ফাঁপর—ত্রাণ দিয়েছে সরকারে
অভাগা ঐ উপোস শিশুর ত্রাণ গেলো কার দরবারে?

আমার দেশের মূল কারিগর মধ্যবিত্ত যায় মরে
প্রাণ বাঁচাবার ত্রাণের খাবার আঁটকা আছে কার ঘরে?

রাজচোরেদের ডাকব কিরে কুত্তা-বিলাই, না শুয়োর
অনাহারীর ভাত গিলে খাস—তোরাই আসল হারামখোর।

উপোস খাটা শমসু মিয়া বলছিল কাল গাল ছেড়ে
হকচকিয়ে ঠোঁট বেঁকিয়ে পোস্টারেতে লাথ মেরে—

গরীব-দুখির ভাত মেরে তোর নাদুস-নুদুস গায়ের ছাল,
ঐ শালা তুই যা কবরে, দেখবি কেমন চ্যাটের বাল।

খালি পেটে দিনটা কেটে নেতা চুদার সময় নাই,
নেতা হলে খাবার তরে ভাত কেন মোর জুটে নাই?

সরকারি মাল সবটা চেটে মাংস পোলাও করিস পাক,
ভরপেটে তোর মস্তিগীরী, আমার তরে কচুর শাক।

আর কত বল চলবে এ ছল—নেতার নামে ভণ্ডামি,
বললে আবার লাঠির জোরে করতে আসিস গুণ্ডামি।

আশেপাশে বিশ-পঁচিশেক ইঁদুর-বিড়াল দিস ছেড়ে,
তোর ইশারায় শিয়াল সেজে তারাও দেখি ডাক পাড়ে।

মামলা দিয়ে হামলা করার নীতিও দেখি নেতার হয়,
ক্ষিধের জ্বালায় পেট যে মরে করবো কী আর মরার ভয়!

ভয়কে রেখে চলরে সবে সেই নেতাদের জাত মারি,
মোদের পেটের খাদ্যে যাদের তৈরি হচ্ছে ঘর-বাড়ি।

অট্টালিকা দে গুড়িয়ে আইন মানিবার বালাই নাই,
এইখানেতে নীতি একটাই—আমার খাদ্য ফেরত চাই।

দিনমজুররা বাঁচলে পরে বাঁচবে আমার সোনার দেশ,
বিশ্ব অবাক তাকিয়ে রবে দেখে সোনার বাংলাদেশ।

কিন্তু তাদের মারতে যাদের বিন্দুমাত্র ভাবনা নাই,
কুলাঙ্গার ঐ চাটার দলের হোকরে শাস্তি, শাস্তি চাই।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

ধর্মটা যে ধর্ম নেই

ধর্মটা যে ধর্ম নেই আর —মুহাম্মদ সৈয়দুল হক ধর্মটা যে ধর্ম নেই আর চর্ম কেবল আছে তা’য়, ধর্মমূলের কর্ম সকল দূর হয়েছে অচিন গাঁ’য়। জুব্বা টুপি পাগড়ি সবি বাড়ছে ক্রমে দিনে-দিন, মানুষগুলো হচ্ছে কেবল মুহাম্মদের ধর্মহীন (দরুদ)। তথ্যমতে নিত্য যারা গরীব-দুখীর ভাত মারে, গিয়ে দেখো ইদ-জুমাতে তারাই প্রথম কাতারে। যেই হুজুরে দিন-দুপুরে হালাল-হারাম বয়ান দেয়, দুই থেকে চার পয়সা পেলে ইমানখানাও বেইচা দেয়। পীর-সাধক আর ধর্মগুরুর বাড়ছে অভাব নিত্যদিন, পাত্র দেখে ছাত্র পোষে পীর নিজে বেশ ধর্মহীন। সহিহ হাদিস করছে হদিস দিনমজুর আর দিন-ফকির, মুহাদ্দিস আজ কলেজ-বালক ডাক্তারে-ও মুফাস্সির। প্রাথমিকের বাল-বালকে কাফের বলে রায় ছাড়ে, সোশ্যাল মামুর এই জগতে কার সাথে আর কে পারে! গাঞ্জা খেয়ে মঞ্চে উঠে পাঞ্জা দোলায় দেয় বয়ান, মোল্লা-মুনসির এই দশাতে যাবে কোথায় মুসলমান? কেউবা খেলে ফুটবল আবার কেউবা চড়ে রকেটে, দর্শকে কয় মারহাবা-জী হাদিয়া ভরুন পকেটে। সকাল থেকে রাত অবদি, রাত্র থেকে সকাল-তক, দীনটা ছিল সবটা-জুড়ে সবটা যেন থাকে হক। কর্ম যত ধর্ম সবি বলছে কুরআন মজিদে, অকর্মা...

পথে পথে-২

পথে পথে-২ ঢাকা থেকে মহানগর প্রভাতিতে চড়ে সোজা নারায়ণগঞ্জ বন্দরে পৌঁছলাম। সাথে আছে সদ্য প্রকাশিত ‘বাংলা কাব্যে নবী-বন্দনা এবং নজরুলের মুনশিয়ানা’র লেখক আবু সাইদ এবং স্নেহাস্পদ মুকিম। যাবো আল্লামা বাকি বিল্লাহ (রহ.)র প্রতিষ্ঠিত গাউছিয়া তৈয়বিয়া তাহেরিয়া মাদরাসায়। সামনে বুড়িগঙ্গা। পার হতে হবে। ঘাটে নৌকার হুড়োহুড়ি। দু-তিনজন মাঝি একসাথে ডাকাডাকি করছে—আয়েন হুজুর আয়েন। নিজেকে ভিআইপি ভিআইপি মনে হচ্ছে। পেছন পেছন আরও কিছু লোকের আগমন। মাঝিরা এবার আমাদের ছেড়ে ওদের ডাকছে। বুঝলাম—এ ঘাটে যারা আসে সবাই ভিআইপি। অতিরিক্ত ভাবসাব বাদ দিয়ে দ্রুত উঠে পড়লাম। উঠেই গান শুরু— “বাঁশখালিইইইই, মইশখালি      পাল উড়াইয়া দিলে সাম্পান গুরগুরাই টানে— হন হন যাবি আঁর সাম্পানে। কর্ণফুলীর মাঝি আঁই   নিয়ুম ভাটি-উজানে, হন হন যাবি আঁর সাম্পানে ও তোরা, হন হন যাবি আঁর সাম্পানে।” মুকিম রসিকতার সুরে বললো—“ভণ্ডামি বাদ দেন ভাই, এটা কর্ণফুলী না; বুড়িগঙ্গা।” তার পিঠে কষে এক চড় দিয়ে বললাম—আবে হালা, ঢাকাইয়ারা বুড়িগঙ্গা নিয়া না-লেইখলে মুই কী করবাম? আবু সাইদের মুখটা কেমন জানি ফ্যাকাসে দেখাচ্ছে। বাড়ি কুমিল্লা...

ধ্রুব

ধ্রুব ধ্রুব চা খাচ্ছিল। খেতে খেতে ভাবছে। ভাবতে ভাবতে খাচ্ছে। কোনটা আগে? ভাবনা না খাওয়া? খাওয়া না ভাবনা? আরে, এটা তো পান করার জিনিস; খাচ্ছে কেন? যাব্বাবা, কী যে মাথামুণ্ডু ভাবছে—কে জানে! পানকে খাওয়া ভেবে ভাবনার অপমান হয়েছে ঢের। আর না। এবার খাওয়ায় মনোযোগ দেয়া যাক। হে হে, মনোযোগ দেবার আগেই মনোভাব পাল্টে গেল? আবারো খাওয়া? ভাবনার মান-ইজ্জত একেবারে শেষ। কিন্তু না, এভাবে শেষ হতে পারে না। সে ভাবুক৷ ভাবনার অপমান সে হতে দেবে না। প্রয়োজনে পানকে যে-কোনো রীতিতে খাওয়া বানিয়ে ছাড়বে। আচ্ছা, চা’কে বিরিয়ানি ভাবলে কেমন হয়? হাঁ, বিরিয়ানি ভাবলেই হয়ে যায়। খাওয়া-পানের দ্বন্দ্ব শেষ। তা-ছাড়া চা আর বিরিয়ানির কালারটা কাছাকাছি। বিরিয়ানিতে ঝোল ঢালা হোক। মাখামাখি করে পান্তাভাত বানানো যাক। এবার পান্তাভাতের তরিকায় পুরুত পুরুত টানা যাক। আহা! সে কী স্বাদ, সে কী স্বাদ! ধ্রুব এবার চিৎকার দেয়—পৃথিবী বিরিয়ানির, পৃথিবী বিরিয়ানির। চায়ের কাপটা আর কাপ নেই। আকাশের বুকে সুসজ্জিত থালা। থালাটা আবার চাঁদের মতো। সে চাঁদে ঝিলিক মারছে। চাঁদটাকে একবার ডানহাতে, আবার বাঁহাতে। সেটাকে আবার কিছুক্ষণ পরপর মুখে পুরে লম্বা চুমুক। চু...