এই প্রকৃতি আর দেখা হবে না
ট্রেনটা ঠিক কাঁটায় কাঁটায় নটায় ছাড়লো। ব্যাগ থেকে ‘মাওয়াহিবুল লাদুন্নিয়্যাহ’ বের করে পড়া শুরু করলাম। নবীজিকে তাঁর দুধ-মা হালিমা নিয়ে যাবার পরের ঘটনা। নবীজি হালিমার উভয় স্তন থেকে পান করতেন না। একটি থেকে পান করতেন। অন্যটি ছোঁয়েও দেখতেন না। হালিমা তো অবাক! ব্যাপার কী? ভাবতে ভাবতে হালিমার বোধোদয় হয়। হালিমার নিজেরও একটি বাচ্চা আছে। নবীজিকে আনার পর হালিমার দায়িত্ব দুজনকে সন্তুষ্ট করা। তাই উভয়কে সমানভাবে তৃপ্ত করানে তাঁর দায়িত্ব। কাজটা বেশ কঠিন। এই কঠিন কাজটি শিশুনবী ‘জলবৎ তরলং’ করে দিলেন। দুধ-ভাইয়ের অধিকারে তিনি হস্তক্ষেপ করলেন না। সাম্যবাদের শিক্ষা তিনি কোলে বসেই দেয়া শুরু করলেন। পড়তে পড়তে মনের অজান্তে দুফোঁটা গরম জল বইয়ের পাতা ভিজিয়ে দিল।
ট্রেন ইতোমধ্যে দুই স্টেশন অতিক্রম করেছে। মানুষের ভীড়ও বেড়েছে বেশ৷ বই থেকে মুখ তুলে দেখি সামনে মায়ের বয়সী দুই মহিলা দাঁড়িয়ে। আশেপাশে একবার ঘাড় ঘোরালাম। তাগড়া জোয়ান জোয়ান যুবকের দল বসে আছে। কারো চোখ মোবাইলের স্কিনে, কারো কানে হেডফোন, কেউ আবার মেতে আছে আড্ডায়। ব্যাগটা কাঁধে ঝুলিয়ে উঠে পড়লাম। খালা বসুন। বৃদ্ধা সিট পেয়ে হাঁপ ছেড়ে বাঁচলো। একজনের সিটে ঠাঁসাঠাসি করে দুজনেই বসে গেলো। একটুকুতেই বৃদ্ধার চোখে রাজ্যের ঘুম। বুঝতে পারলাম—বৃদ্ধা আসলেই ক্লান্ত ছিল। মনে মনে বেশ ভালো লাগা কাজ করছিলো। ভালো কাজ ছোট হলেও করতে পারার মাঝে কেমন জানি এক অদ্ভুত তৃপ্তি আছে। পৃথিবীর অন্যকিছুতে এ তৃপ্তি পাওয়া যায় না। কামিনী রায় বলেছিলেন—“তার মত সুখ কোথাও কি আছে?
আপনার কথা ভুলিয়া যাও।”
নবীজির হাদিসে এসেছে “মুমিন ঐ ব্যক্তি, যে ভালো কাজ করে তৃপ্তি পায়, আর খারাপ কাজ করে অনুতপ্ত হয়।”
টিকেট চেকার খুব দ্রুত টিকেট চেক করছে। টিকেট না-করে উঠায় দুয়েকজনকে ধমকাচ্ছে। এ রাস্তায় ইদানীং দেখি কড়াকড়ি আরোপ হয়েছে। হুট করে বলে ফেললাম—তারা টিকিট করেনি কেন? একজন বলে উঠলো—যারা বছরের পর বছর মুফতে ট্রেন যাতায়াত করে অভ্যস্ত, তারা কোন দুঃখে বিশ টাকা ট্রেনের চাকায় বিসর্জন দিবে? এরূপ রেকর্ড সংখ্যক মুফতে যাতায়াতের জন্য তাদেরকে উল্টো পুরস্কৃত করা দরকার। লোকটির কথায় যুক্তি আছে৷ যেই ইহুদিরা মুফতে মুফতে ফিলিস্তিনে বসবাসের সুযোগ পেয়েছিল, তারাই কি-না এখন জেরুজালেমের দাবিদার! ট্রেনে আপাতত পা বাড়ানোর জায়গা নেই। কিন্তু চেকার সাহেবকে আগাতেই হবে। অনেকটা কৌশলপূর্বক ভদ্রধাক্কায় তিনি এগিয়ে চলেছেন।
ধাক্কা খেয়ে দরজার পাশে গিয়ে পড়লাম। বাহ! বাইরের দৃশ্য তো বেশ মনোরম! বসন্ত আসার আগেই আকাশে অতিথি পাখির মিছিল। পশ্চিমে মনোরম টিলায় ভরা। এরও বহু পশ্চিমে সীতাকুণ্ড চন্দ্রনাথ পাহাড়। চন্দ্রনাথ যদি স্টেজ হয়, টিলাগুলো ময়দান। সে ময়দানে নাম জানা-অজানা হাজার রকমের বৃক্ষের সমাবেশ। তরুলতারও কমতি নেই কোনো অংশে। আমাকে উদ্দেশ্য করে কিছু একটা বলছে সম্ভবত চন্দ্রনাথের চূড়ায় থাকা প্রাচীন মন্দিরটি। কথাটির অন্তর্নিহিত তাৎপর্য অনেকটা এরূপ মনে হলো—“স্রষ্টার রহস্য পাহাড়ের চূড়ার ক্ষুদ্র এ ইটপাথরে নয়, তা প্রকৃতির মাঝেই লুকায়িত। প্রতিটি বৃক্ষের শাখা-প্রশাখায়। পাতায় পাতায়, তরু-লতায়। বিস্তৃত লোকালয়ে। আকাশের ছত্রে ছত্রে। গ্রহ-উপগ্রহে আর নক্ষত্ররাজিতে। সৃষ্টির প্রতিটি উপকরণে। দুচোখ ভরে দেখো। খোঁজো। পেলেও পেতে পারো।”
দ্রুত চোখ সরিয়ে অন্যত্র দেখা শুরু করলাম। মাঠ-ঘাট কতকিছু পেরিয়ে যাচ্ছি। কোথাও ছোট ছোট ছেলে-মেয়ের তিড়িং-বিড়িং লাফ, কোথাও আবার নানান বয়সী ছেলেফেলের ক্লাসে যাবার দৌড়ঝাঁপ। ধানিজমির ধান বহু আগেই কাটা শেষ। সেখানটাই এখন নানান ধরনের শাক-সবজির খেত। খেতের মাঝে মাঝে আবার কাকতাড়ুয়া দাঁড়িয়ে। কাকতাড়ুয়া মানে কাক তাড়ানোর যন্ত্র। যন্ত্র বলা ঠিক হবে না। বানানো হয় খড় আর ছেঁড়া কাপড়-চোপড় দিয়ে। যন্ত্র না-বললে কী বলা যাবে—সেটা আপাতত মাথায় আসছে না। খেতের আশপাশে গরু-ছাগলের পাল। ঝাঁকে ঝাঁকে চড়ছে। সামনে আগাতেই আরেক দল দেখি ব্যাট-বল নিয়ে ঝগড়া লাগিয়ে দিয়েছে। আরও সামনে চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্ট। জায়গাটা বেশ সজ্জিত। স্রষ্টার সাজানো-গোছানো অপরূপ প্রকৃতি। আহা! কত মনোহর!
যাচ্ছিলাম নাজিরহাট থেকে চট্টগ্রাম শহরের দিকে। প্রকৃতি দেখতে দেখতে হঠাৎ আসল প্রকৃতির দেখা মিললো। একটা খাট। চার কোণায় চারজন লোক কাঁধে করে বয়ে চলেছে। খাটের ঠিক পেছন থেকে একজন আওয়াজ দিচ্ছে—আল্লাহু রাব্বি, মুহাম্মদ নবী-সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। তার সাথে সাথে গোটা শতেক লোকও বলে উঠছে—আল্লাহু রাব্বি, মুহাম্মদ নবি-সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। সহসা নিজেকে আবিষ্কার করলাম ঐ খাটের মাঝে। গা থেকে বাহারি রঙের জামাটা কোথায় যেন উধাও। সর্বাঙ্গে সাদা কাপড় জড়ানো। উপরে-নিচে-মাঝে—তিন জায়গায় তিনটা গিট মারা। বাড়ির উঠোন থেকে মহিলারা এখনো আমার লাশবাহী খাটের দিকে তাকিয়ে। এদিকে জোরে জোরে আওয়াজ আসছে—আল্লাহু রাব্বি, মুহাম্মদ নবী-সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে কাফনটা ছিঁড়ে ফেলার চেষ্টা করলাম। কিন্তু হাত জায়গা থেকে নড়ছেই না। সবাইকে অনেক কাকুতি মিনতি করলাম। কেউ আমার দিকে ফিরেও তাকালো না। জমি নিয়ে জব্বার চাচার সঙ্গে ঝগড়া লাগিয়েছিলাম কাল। একটু পর সে জমির নিচে গিয়ো পড়বো। মাফও চাওয়া হয়নি। আরও বহুজনের সাথে বহু কথা যে এখনও বাকি। কিন্তু সে সুযোগ যে আর নেই। সব আশা শেষ। আমায় শোনার দিন ফুরিয়ে এসেছে। এ কণ্ঠ আর গান গাইবে না। এ চোখের মায়ায় আর কেউ মজবে না। তবু জোর গলায় চেঁচিয়ে বলার চেষ্টা করলাম—“বিদায় পৃথিবী! এ প্রকৃতি আর দেখা হবে না...”
ট্রেনটা ঠিক কাঁটায় কাঁটায় নটায় ছাড়লো। ব্যাগ থেকে ‘মাওয়াহিবুল লাদুন্নিয়্যাহ’ বের করে পড়া শুরু করলাম। নবীজিকে তাঁর দুধ-মা হালিমা নিয়ে যাবার পরের ঘটনা। নবীজি হালিমার উভয় স্তন থেকে পান করতেন না। একটি থেকে পান করতেন। অন্যটি ছোঁয়েও দেখতেন না। হালিমা তো অবাক! ব্যাপার কী? ভাবতে ভাবতে হালিমার বোধোদয় হয়। হালিমার নিজেরও একটি বাচ্চা আছে। নবীজিকে আনার পর হালিমার দায়িত্ব দুজনকে সন্তুষ্ট করা। তাই উভয়কে সমানভাবে তৃপ্ত করানে তাঁর দায়িত্ব। কাজটা বেশ কঠিন। এই কঠিন কাজটি শিশুনবী ‘জলবৎ তরলং’ করে দিলেন। দুধ-ভাইয়ের অধিকারে তিনি হস্তক্ষেপ করলেন না। সাম্যবাদের শিক্ষা তিনি কোলে বসেই দেয়া শুরু করলেন। পড়তে পড়তে মনের অজান্তে দুফোঁটা গরম জল বইয়ের পাতা ভিজিয়ে দিল।
ট্রেন ইতোমধ্যে দুই স্টেশন অতিক্রম করেছে। মানুষের ভীড়ও বেড়েছে বেশ৷ বই থেকে মুখ তুলে দেখি সামনে মায়ের বয়সী দুই মহিলা দাঁড়িয়ে। আশেপাশে একবার ঘাড় ঘোরালাম। তাগড়া জোয়ান জোয়ান যুবকের দল বসে আছে। কারো চোখ মোবাইলের স্কিনে, কারো কানে হেডফোন, কেউ আবার মেতে আছে আড্ডায়। ব্যাগটা কাঁধে ঝুলিয়ে উঠে পড়লাম। খালা বসুন। বৃদ্ধা সিট পেয়ে হাঁপ ছেড়ে বাঁচলো। একজনের সিটে ঠাঁসাঠাসি করে দুজনেই বসে গেলো। একটুকুতেই বৃদ্ধার চোখে রাজ্যের ঘুম। বুঝতে পারলাম—বৃদ্ধা আসলেই ক্লান্ত ছিল। মনে মনে বেশ ভালো লাগা কাজ করছিলো। ভালো কাজ ছোট হলেও করতে পারার মাঝে কেমন জানি এক অদ্ভুত তৃপ্তি আছে। পৃথিবীর অন্যকিছুতে এ তৃপ্তি পাওয়া যায় না। কামিনী রায় বলেছিলেন—“তার মত সুখ কোথাও কি আছে?
আপনার কথা ভুলিয়া যাও।”
নবীজির হাদিসে এসেছে “মুমিন ঐ ব্যক্তি, যে ভালো কাজ করে তৃপ্তি পায়, আর খারাপ কাজ করে অনুতপ্ত হয়।”
টিকেট চেকার খুব দ্রুত টিকেট চেক করছে। টিকেট না-করে উঠায় দুয়েকজনকে ধমকাচ্ছে। এ রাস্তায় ইদানীং দেখি কড়াকড়ি আরোপ হয়েছে। হুট করে বলে ফেললাম—তারা টিকিট করেনি কেন? একজন বলে উঠলো—যারা বছরের পর বছর মুফতে ট্রেন যাতায়াত করে অভ্যস্ত, তারা কোন দুঃখে বিশ টাকা ট্রেনের চাকায় বিসর্জন দিবে? এরূপ রেকর্ড সংখ্যক মুফতে যাতায়াতের জন্য তাদেরকে উল্টো পুরস্কৃত করা দরকার। লোকটির কথায় যুক্তি আছে৷ যেই ইহুদিরা মুফতে মুফতে ফিলিস্তিনে বসবাসের সুযোগ পেয়েছিল, তারাই কি-না এখন জেরুজালেমের দাবিদার! ট্রেনে আপাতত পা বাড়ানোর জায়গা নেই। কিন্তু চেকার সাহেবকে আগাতেই হবে। অনেকটা কৌশলপূর্বক ভদ্রধাক্কায় তিনি এগিয়ে চলেছেন।
ধাক্কা খেয়ে দরজার পাশে গিয়ে পড়লাম। বাহ! বাইরের দৃশ্য তো বেশ মনোরম! বসন্ত আসার আগেই আকাশে অতিথি পাখির মিছিল। পশ্চিমে মনোরম টিলায় ভরা। এরও বহু পশ্চিমে সীতাকুণ্ড চন্দ্রনাথ পাহাড়। চন্দ্রনাথ যদি স্টেজ হয়, টিলাগুলো ময়দান। সে ময়দানে নাম জানা-অজানা হাজার রকমের বৃক্ষের সমাবেশ। তরুলতারও কমতি নেই কোনো অংশে। আমাকে উদ্দেশ্য করে কিছু একটা বলছে সম্ভবত চন্দ্রনাথের চূড়ায় থাকা প্রাচীন মন্দিরটি। কথাটির অন্তর্নিহিত তাৎপর্য অনেকটা এরূপ মনে হলো—“স্রষ্টার রহস্য পাহাড়ের চূড়ার ক্ষুদ্র এ ইটপাথরে নয়, তা প্রকৃতির মাঝেই লুকায়িত। প্রতিটি বৃক্ষের শাখা-প্রশাখায়। পাতায় পাতায়, তরু-লতায়। বিস্তৃত লোকালয়ে। আকাশের ছত্রে ছত্রে। গ্রহ-উপগ্রহে আর নক্ষত্ররাজিতে। সৃষ্টির প্রতিটি উপকরণে। দুচোখ ভরে দেখো। খোঁজো। পেলেও পেতে পারো।”
দ্রুত চোখ সরিয়ে অন্যত্র দেখা শুরু করলাম। মাঠ-ঘাট কতকিছু পেরিয়ে যাচ্ছি। কোথাও ছোট ছোট ছেলে-মেয়ের তিড়িং-বিড়িং লাফ, কোথাও আবার নানান বয়সী ছেলেফেলের ক্লাসে যাবার দৌড়ঝাঁপ। ধানিজমির ধান বহু আগেই কাটা শেষ। সেখানটাই এখন নানান ধরনের শাক-সবজির খেত। খেতের মাঝে মাঝে আবার কাকতাড়ুয়া দাঁড়িয়ে। কাকতাড়ুয়া মানে কাক তাড়ানোর যন্ত্র। যন্ত্র বলা ঠিক হবে না। বানানো হয় খড় আর ছেঁড়া কাপড়-চোপড় দিয়ে। যন্ত্র না-বললে কী বলা যাবে—সেটা আপাতত মাথায় আসছে না। খেতের আশপাশে গরু-ছাগলের পাল। ঝাঁকে ঝাঁকে চড়ছে। সামনে আগাতেই আরেক দল দেখি ব্যাট-বল নিয়ে ঝগড়া লাগিয়ে দিয়েছে। আরও সামনে চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্ট। জায়গাটা বেশ সজ্জিত। স্রষ্টার সাজানো-গোছানো অপরূপ প্রকৃতি। আহা! কত মনোহর!
যাচ্ছিলাম নাজিরহাট থেকে চট্টগ্রাম শহরের দিকে। প্রকৃতি দেখতে দেখতে হঠাৎ আসল প্রকৃতির দেখা মিললো। একটা খাট। চার কোণায় চারজন লোক কাঁধে করে বয়ে চলেছে। খাটের ঠিক পেছন থেকে একজন আওয়াজ দিচ্ছে—আল্লাহু রাব্বি, মুহাম্মদ নবী-সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। তার সাথে সাথে গোটা শতেক লোকও বলে উঠছে—আল্লাহু রাব্বি, মুহাম্মদ নবি-সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। সহসা নিজেকে আবিষ্কার করলাম ঐ খাটের মাঝে। গা থেকে বাহারি রঙের জামাটা কোথায় যেন উধাও। সর্বাঙ্গে সাদা কাপড় জড়ানো। উপরে-নিচে-মাঝে—তিন জায়গায় তিনটা গিট মারা। বাড়ির উঠোন থেকে মহিলারা এখনো আমার লাশবাহী খাটের দিকে তাকিয়ে। এদিকে জোরে জোরে আওয়াজ আসছে—আল্লাহু রাব্বি, মুহাম্মদ নবী-সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে কাফনটা ছিঁড়ে ফেলার চেষ্টা করলাম। কিন্তু হাত জায়গা থেকে নড়ছেই না। সবাইকে অনেক কাকুতি মিনতি করলাম। কেউ আমার দিকে ফিরেও তাকালো না। জমি নিয়ে জব্বার চাচার সঙ্গে ঝগড়া লাগিয়েছিলাম কাল। একটু পর সে জমির নিচে গিয়ো পড়বো। মাফও চাওয়া হয়নি। আরও বহুজনের সাথে বহু কথা যে এখনও বাকি। কিন্তু সে সুযোগ যে আর নেই। সব আশা শেষ। আমায় শোনার দিন ফুরিয়ে এসেছে। এ কণ্ঠ আর গান গাইবে না। এ চোখের মায়ায় আর কেউ মজবে না। তবু জোর গলায় চেঁচিয়ে বলার চেষ্টা করলাম—“বিদায় পৃথিবী! এ প্রকৃতি আর দেখা হবে না...”
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন