করোনা: শরিয়ত, সুফি দৃষ্টিকোণ ও বাস্তবতা
(ভ্রান্তি নিরসনে লেখাটি ছড়িয়ে দিতে পারেন)
হাদিসে পাকে বর্ণিত ঘটনা: এক সাহাবি তাঁর উটকে বেলাভূমিতে ছেড়ে আসলো৷ রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিজ্ঞেস করলেন ‘উট না-বেঁধে আসার কারণ কী?’ তিনি জবাব দিলেন, ‘আল্লাহর উপর আমার পূর্ণ আস্থা আছে।’ নবিজি জানালেন ‘তুমি উটকে বেঁধে তারপর আল্লাহর উপর ভরসা রাখো’।
এবার একটা গল্প শুনুন। এক এলাকায় প্রচুর বৃষ্টি হলো। দেখতে দেখতে বন্যা পরিস্থিতি খারাপের দিকে যেতে থাকে৷ লোকজন ঘরবাড়ি ছেড়ে নিরাপদ স্থানে পাড়ি জমাতে লাগলো। কিন্তু এক ব্যক্তি জেদ ধরলো। সে যাবে না৷ তাকে আল্লাহ রক্ষা করবে। মানুষজন অনেক ডাকাডাকি করলো। গেল না। এরপর গাড়ি এলো। গেল না। পানি উঠতে উঠতে তার বাড়ির অর্ধেকটা ডুবে গেল। নৌকা এল নিতে। সে যাবে না। অবস্থা আরও খারাপ হলে এল হেলিকপ্টার। না, সে নাছোড়বান্দা। কিছুতেই যাবে না। উঠলো না হেলিকপ্টারে। অতপর পানিতে যখন তার ঘর ডুবে গেল, সেও মারা পড়লো৷ পরকালে গিয়ে তো স্রষ্টার সাথে বিরাট অভিমান! অভিযোগ করে বললো “আপনার উপর আমার পুরো ই’তেকাদ-বিশ্বাস ছিলো। তবু আপনি আমাকে বাঁচালেন না৷” এই শোনে স্রষ্টা হেসে বললো “তোমাকে বাঁচানোর জন্য গাড়ি, নৌকা, হেলিকপ্টারগুলো কে পাঠিয়েছিলো?”
দেখুন ভাই, আল্লাহর উপর তাওয়াককুলের নাম এটা নয় যে, আপনি চোখ বন্ধ করে রাস্তা পার হবেন, আল্লাহ আপনাকে রক্ষা করবে, গাড়ি আপনাকে মারবে না৷ বরং তা এমন: আপনি সর্বোচ্চ সতর্কতার সাথে রাস্তা পার হবেন। সজাগ দৃষ্টি রাখার জন্য দৃষ্টিশক্তিটা তো আপনাকে আল্লাহই দিয়েছেন, নাকি? হ্যাঁ, বাঁচার জন্য যা যা করা দরকার, যা যা আপনি হাতের কাছে পাচ্ছেন, সেসব উপকরণ দিয়ে বাঁচার চেষ্টা করাই তাঁর উপর বিশ্বাস রাখা। কেননা আল্লাহ যদি আপনাকে বাঁচাতে না-চায়তেন, তবে আপনি বাঁচার কোনো উপকরণই হাতের কাছে পেতেনা না। তাঁর অনুমতি ব্যতীত যে গাছের একটি পাতাও নড়ে না!
তবে হ্যাঁ, ব্যতিক্রমও আছে। এক আল্লাহর অলির ঘটনা: তিনি একটা ডিমকে সোনায় রূপান্তর করে এক গরীবকে দিলেন। লোকটি তো মহা খুশি। কারণ, সে কেবল স্বর্ণের ডিমই পেল না, শোনে ফেলেছেন ডিমকে স্বর্ণে রূপান্তর করার মন্ত্রও। সে মন্ত্র ছিল সুরা ইখলাস৷ সে জনে জনে এ-কথা বলে বেড়াতে লাগলো যে, সে চায়লেই আস্ত ডিমকে সোনা বানাতে পারবে। লোকে তো উৎসুক। জড়ো হলো তার চারপাশে। অতপর সে তার কারিশমা দেখাতে প্রস্তুত। যথারীতি সুরা ইখলাস পড়ে দিলো ফু। কিন্তু কই, কিছুতেই তো কিছু হচ্ছে না। শত শত বার ফু দিতে থাকে৷ ডিম আর সোনা হয় না৷ কোনোরকম পিঠ বাঁচিয়ে দৌঁড়ে যায় সে মহা সাধকের কাছে। কাঁদতে কাঁদতে জানতে চায়, “আপনি একবার পড়ে ফু দেয়ার সাথে সাথে ডিম সোনা হয়, আমার এত এত ফু’তেও হয় না কেন?” সাধক জবাব দিলো আগে তো ফু দেবার যোগ্যতা অর্জন করো। সাধক হবার আগেই ডিমকে সোনা বানানোর সাধ জাগা তো ভালো না।” সোজা কথায় যে ডিজেল গাড়িতে ঢালবেন, তা তো পরিশুদ্ধ হওয়া চায়। ভেজাল তেলে গাড়ি চলে না, উল্টো নষ্ট হয়। হ্যাঁ আপনি যদি জিয়া বাবা হয়ে উঠতে পারেন, তবে পানি দিয়েও চালাতে পারবেন।
বোঝাতে চাচ্ছিলাম, আল্লাহর উপর সবকিছু ছেড়ে দিয়ে শুধু আল্লাহর উপর ভরসাকেই যদি আপনি একমাত্র অবলম্বন হিসেবে নিতে চান, তবে আপনাকে আগে সে যোগ্যতা অর্জন করতে হবে। সে লেভেলে পৌঁছুতে হবে। কিন্তু বাস্তবতা কি ঐরকম? জিয়া বাবার মতো মুমিন, মুসলমান, ইমানদার কি আমরা হয়ে উঠতে পেরেছি? বহুবছর আগে নজরুল বলেছিল—
“আল্লাতে যার পূর্ণ ইমান
কোথা সে মুসলমান?”
নবিজি বিসমিল্লাহ বলে বিষ খেয়ে ফেলেছিলেন, বিষ পানি হয়ে গিয়েছিল। আপনি খান তো। বিসমিল্লাহ বলেই খান। পারবেন? না। যদি না-পারেন তো, আপনি দুর্বল। প্রচুর দুর্বল।
হ্যা, আমাদের চারপাশে আমরা যারা আছি, তারা সবাই এই লেভেলের দুর্বল। এই লেভেলের দুর্বল ইমানদাররা কি করবে? ঐ যে, একেবারে শুরুর কাজটিই করবে। নবিজি যেমনটি বলেছেন, “উটটি বেঁধে তারপর আল্লাহর উপর আস্থা রাখো।” এর মানে কী? আল্লাহর উপর ভরসা রেখে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করে যাওয়া। সর্বোচ্চ সতর্ক থাকুন, চেষ্টা করুন। আল্লাহ আপনার চেষ্টাকে সফলতায় রূপ দেবেন। সুরা আনফালে তো স্পষ্টই বলে দেয়া আছে—
“আল্লাহ কোনো জাতির ভাগ্য ততক্ষণ পর্যন্ত পরিবর্তন করেন না, যতক্ষণ না সেই জাতি নিজেরা নিজেদের পরিবর্তন করে।”
(ভ্রান্তি নিরসনে লেখাটি ছড়িয়ে দিতে পারেন)
হাদিসে পাকে বর্ণিত ঘটনা: এক সাহাবি তাঁর উটকে বেলাভূমিতে ছেড়ে আসলো৷ রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিজ্ঞেস করলেন ‘উট না-বেঁধে আসার কারণ কী?’ তিনি জবাব দিলেন, ‘আল্লাহর উপর আমার পূর্ণ আস্থা আছে।’ নবিজি জানালেন ‘তুমি উটকে বেঁধে তারপর আল্লাহর উপর ভরসা রাখো’।
এবার একটা গল্প শুনুন। এক এলাকায় প্রচুর বৃষ্টি হলো। দেখতে দেখতে বন্যা পরিস্থিতি খারাপের দিকে যেতে থাকে৷ লোকজন ঘরবাড়ি ছেড়ে নিরাপদ স্থানে পাড়ি জমাতে লাগলো। কিন্তু এক ব্যক্তি জেদ ধরলো। সে যাবে না৷ তাকে আল্লাহ রক্ষা করবে। মানুষজন অনেক ডাকাডাকি করলো। গেল না। এরপর গাড়ি এলো। গেল না। পানি উঠতে উঠতে তার বাড়ির অর্ধেকটা ডুবে গেল। নৌকা এল নিতে। সে যাবে না। অবস্থা আরও খারাপ হলে এল হেলিকপ্টার। না, সে নাছোড়বান্দা। কিছুতেই যাবে না। উঠলো না হেলিকপ্টারে। অতপর পানিতে যখন তার ঘর ডুবে গেল, সেও মারা পড়লো৷ পরকালে গিয়ে তো স্রষ্টার সাথে বিরাট অভিমান! অভিযোগ করে বললো “আপনার উপর আমার পুরো ই’তেকাদ-বিশ্বাস ছিলো। তবু আপনি আমাকে বাঁচালেন না৷” এই শোনে স্রষ্টা হেসে বললো “তোমাকে বাঁচানোর জন্য গাড়ি, নৌকা, হেলিকপ্টারগুলো কে পাঠিয়েছিলো?”
দেখুন ভাই, আল্লাহর উপর তাওয়াককুলের নাম এটা নয় যে, আপনি চোখ বন্ধ করে রাস্তা পার হবেন, আল্লাহ আপনাকে রক্ষা করবে, গাড়ি আপনাকে মারবে না৷ বরং তা এমন: আপনি সর্বোচ্চ সতর্কতার সাথে রাস্তা পার হবেন। সজাগ দৃষ্টি রাখার জন্য দৃষ্টিশক্তিটা তো আপনাকে আল্লাহই দিয়েছেন, নাকি? হ্যাঁ, বাঁচার জন্য যা যা করা দরকার, যা যা আপনি হাতের কাছে পাচ্ছেন, সেসব উপকরণ দিয়ে বাঁচার চেষ্টা করাই তাঁর উপর বিশ্বাস রাখা। কেননা আল্লাহ যদি আপনাকে বাঁচাতে না-চায়তেন, তবে আপনি বাঁচার কোনো উপকরণই হাতের কাছে পেতেনা না। তাঁর অনুমতি ব্যতীত যে গাছের একটি পাতাও নড়ে না!
তবে হ্যাঁ, ব্যতিক্রমও আছে। এক আল্লাহর অলির ঘটনা: তিনি একটা ডিমকে সোনায় রূপান্তর করে এক গরীবকে দিলেন। লোকটি তো মহা খুশি। কারণ, সে কেবল স্বর্ণের ডিমই পেল না, শোনে ফেলেছেন ডিমকে স্বর্ণে রূপান্তর করার মন্ত্রও। সে মন্ত্র ছিল সুরা ইখলাস৷ সে জনে জনে এ-কথা বলে বেড়াতে লাগলো যে, সে চায়লেই আস্ত ডিমকে সোনা বানাতে পারবে। লোকে তো উৎসুক। জড়ো হলো তার চারপাশে। অতপর সে তার কারিশমা দেখাতে প্রস্তুত। যথারীতি সুরা ইখলাস পড়ে দিলো ফু। কিন্তু কই, কিছুতেই তো কিছু হচ্ছে না। শত শত বার ফু দিতে থাকে৷ ডিম আর সোনা হয় না৷ কোনোরকম পিঠ বাঁচিয়ে দৌঁড়ে যায় সে মহা সাধকের কাছে। কাঁদতে কাঁদতে জানতে চায়, “আপনি একবার পড়ে ফু দেয়ার সাথে সাথে ডিম সোনা হয়, আমার এত এত ফু’তেও হয় না কেন?” সাধক জবাব দিলো আগে তো ফু দেবার যোগ্যতা অর্জন করো। সাধক হবার আগেই ডিমকে সোনা বানানোর সাধ জাগা তো ভালো না।” সোজা কথায় যে ডিজেল গাড়িতে ঢালবেন, তা তো পরিশুদ্ধ হওয়া চায়। ভেজাল তেলে গাড়ি চলে না, উল্টো নষ্ট হয়। হ্যাঁ আপনি যদি জিয়া বাবা হয়ে উঠতে পারেন, তবে পানি দিয়েও চালাতে পারবেন।
বোঝাতে চাচ্ছিলাম, আল্লাহর উপর সবকিছু ছেড়ে দিয়ে শুধু আল্লাহর উপর ভরসাকেই যদি আপনি একমাত্র অবলম্বন হিসেবে নিতে চান, তবে আপনাকে আগে সে যোগ্যতা অর্জন করতে হবে। সে লেভেলে পৌঁছুতে হবে। কিন্তু বাস্তবতা কি ঐরকম? জিয়া বাবার মতো মুমিন, মুসলমান, ইমানদার কি আমরা হয়ে উঠতে পেরেছি? বহুবছর আগে নজরুল বলেছিল—
“আল্লাতে যার পূর্ণ ইমান
কোথা সে মুসলমান?”
নবিজি বিসমিল্লাহ বলে বিষ খেয়ে ফেলেছিলেন, বিষ পানি হয়ে গিয়েছিল। আপনি খান তো। বিসমিল্লাহ বলেই খান। পারবেন? না। যদি না-পারেন তো, আপনি দুর্বল। প্রচুর দুর্বল।
হ্যা, আমাদের চারপাশে আমরা যারা আছি, তারা সবাই এই লেভেলের দুর্বল। এই লেভেলের দুর্বল ইমানদাররা কি করবে? ঐ যে, একেবারে শুরুর কাজটিই করবে। নবিজি যেমনটি বলেছেন, “উটটি বেঁধে তারপর আল্লাহর উপর আস্থা রাখো।” এর মানে কী? আল্লাহর উপর ভরসা রেখে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করে যাওয়া। সর্বোচ্চ সতর্ক থাকুন, চেষ্টা করুন। আল্লাহ আপনার চেষ্টাকে সফলতায় রূপ দেবেন। সুরা আনফালে তো স্পষ্টই বলে দেয়া আছে—
“আল্লাহ কোনো জাতির ভাগ্য ততক্ষণ পর্যন্ত পরিবর্তন করেন না, যতক্ষণ না সেই জাতি নিজেরা নিজেদের পরিবর্তন করে।”
সুন্দর গঠনমূলক আলোচনা
উত্তরমুছুন