সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পোস্টগুলি

সেপ্টেম্বর, ২০১৯ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

সরষের ভূত

সরষের ভূত হুজুর হাঁকালেন,  ‘ডাকতার করিবেন ডাকতারি মসল্লা নিয়ে টানলে হয় মশকারি। ব্যাটা নচ্ছার– মোদের হতে হয় সোচ্চার। ফতোয়ার টেবিলে তারে মানায়? ব্যাকরণ না-বুঝিয়া অযথা লাফায়। দেখে দেখে এবারত পড়িবে কীরূপ? শুদ্ধ করিয়া তো বেরোই না হুরুফ। কত ক্লেশ আর সাধনার পরে নিয়াছি বুখারি কাঁধের উপরে দুকলম ইংলিশে বুখারিটা পড়ে কথার আগেই সে রেফারেন্স ঝাড়ে। ধুর ধুর, থাকলেই হলো না-কি মুখে মৃদু সুর? সুর আছে গান করো, মন চায়–শান ধরো, টান মারো জোরে, চলে যাক ভেসে ভেসে পৃথিবীর ওপারে; কিন্তু পা মাড়িয়ো না এপারে, মাড়ালে মাড়াতে পারো– খসে যাবে-ভেঙে যাবে পরে। আমরা বলিলাম, কিয়া বয়ান হ্যায়! ঠিক-ঠিক, হুজুরের বাণীর সে কী ঝিকমিক! বাণীতে মণি আছে, হুজুরের কথা যা, সবি ঠিক আছে।  মাছের রাজত্ব পানিতে মানায় ডাঙায় কী-লাভ অযথা লাফায়। আদার ব্যাপারি—আদা বেচিবে জাহাজের খবরে—সে কী করিবে? ফার্মেসির লোকে কি ডাক্তারি পারে? অথচ ওষুধ সব তাহাদের ঘরে। লাইব্রেরি ওয়ালা আর কতটা জানে? জ্ঞান তো সবি ঐ ঋষিদের ধ্যানে। বাংলার মাস্টারে ইংরেজি পারে তাই বলে পাঠশালায় ইংলিশ ঝাড়ে? হুজুরের কথা তাই,  মানি ভাই, মানো ভাই—মেনে নাও সবে, শুনিবো-না বলিলে ...

আমি আর জাগবো না

আমি আর জাগবো না একদিন চুপ মেরে যাবো, শত কোলাহলেও জাগবো না। বসন্তী কোকিলের কুহুকুহু রবে ডানামেলে আর উড়বো না। অন্যায় হবে,  অবিচারে ছেঁয়ে যাবে বিশ্ব। জুলুমের জাঁতাকলে পৃষ্ঠ হয়ে  পৃথিবীটাও হবে নিঃস্ব। ধরণীতলে মানুষ-মানবতা-মমত্বের  চরম বিপর্যয় ঘটবে, মুখের আগেই অস্ত্ররা কথা বলবে। হিয়ার বাঁধন টুটে যাবে, উল্কাপিণ্ডের মত ভাসমান আগুনের লীলাখেলা চলবে। চতুর্দিকে আর্তনাদ আর আর্তনাদ; হাহাকার আর আহা-কারত্বের নিনাদে ভরবে বিশ্ব। তবু, থেকেও আমি থাকবো না, শত অবিচারেও প্রতিবাদ করবো না। ঘাতের প্রতিঘাতে গর্জে আর উঠবো না। আমায় নিয়ে আহাজারি চলবে সতীনের ছেলেরা নাক ছিটকে বলবে— কবির কবিগিরি আর কবিত্ব কোথা গেলো আজ শব্দের বীরত্ব। দেখবো না,  ভ্রুক্ষেপ ওদিকে আর করবো না। থেমে যাবো, অজানা কারণে চুপ মেরে যাবো। পেয়েও কেউ পাবে না কাছে; শত আবেদনেও আর মাতবো না। কোলাহল হোক, বজ্র পড়ুক,  হয়ে যাক চাঁদের পতন— আমি আর জাগবো না...

এই কবিটা

এই কবিটা এই কবিটা নকল কবি,  এই কবিটা ভণ্ড এই কবিটার জীবনপাঠে  নাই যে কোনো ছন্দ। এই কবিটা আলসে ভীষণ,  এই কবিটা রসহীন এই কবিটার দূরপানে চোখ লাগে না-রে দুরবিন। এই কবিটা খ্যাতনামা নয় এই কবিটা ক্ষুদ্র এই কবিকে রাত্রদুপুর জ্বালিয়ে মারে রৌদ্র।  এই কবিটা খামখেয়ালি এই কবিটা লম্পট এই কবিটা মারতে পারে হঠাৎ করে চম্পট।  এই কবিটা পষ্টভাষী এই কবিটা ঝাল তো! এই কবিটার চালচলনে উদ্ভটে সব চাল তো! এই কবিটা চনমনে বেশ এই কবিটা গম্ভীর, এই কবিটা ঢেউয়ের তালে নাচতে পারে অস্থির।  এই কবিটা শূন্যে ভাসে; হাওয়ার মুখে স্থির, এই কবিটা যায় তলিয়ে শক্ত মাটির পিঞ্জির। এই কবিটা প্রবোধ গুনে আকাশজুড়ে উড়বে, এই কবিটার ইচ্ছে প্রবল মনের দেশে ঘুরবে। এই কবিটা মিশুকপ্রিয়; এই কবিটা নির্জন, এই কবিটা হাসতে হাসতে করতে থাকে ক্রন্দন।  এই কবিটা পাপের নহর; এই কবিটা শূন্য, এই কবিটার জীবনখাতায় নাইতো কোনো পূণ্য।  এই কবিটা অভিমানী; এই কবিটা কমজোর, এই কবিটা ভালোবাসা বুঝে না কী প্রেমসুর। এই কবিটা কবি তো নয়; এই কবিটা ভণ্ড, এই কবিটা কবিকুলের মান করেছে পণ্ড। [বিঃ দ্রঃ প্রথম লাইনটার রচয়িতা স্নেহের মুকিম। মজাচ্ছল...

তৈয়বকা কালাম

কামেল-তৈয়বকা তৈয়ব-কালাম (হুজুর কেবলা তৈয়ব শাহ (রহ.)-এর কতিপয় মালফুজাতের কাব্যানুবাদ) –মুহাম্মদ সৈয়দুল হক =============>১<============= অধ্যাত্মের কেন্দ্র—সে তো মোর নবিজির রূহ পীরের রশি মিললে সেথা; মিলবেরে প্রভু, না-হয় ভাঙবেরে সেতু। =============>২<============= অপক্ব ফল পক্ব হতে লাগবে রবির কর সাধন-ভজন পূর্ণে লাগে নবিজির অন্তর, ও তাই নুরি চরণ ধর। =============>৩<============= শরীর বাঁচে করলে পরে নির্ভেজাল আহার দিলকে বাঁচাও দরুদপাঠ ও জিকিরে আল্লার, নচেৎ দেহের কী দরকার? =============>৪<============= নবির শানে গোস্তাখিতে যারা নিমজ্জন ইয়াহুদীদের চেয়ে অধিক নীচু সে কুজন, তাদের নাই কোনো যতন। =============>৫<============= নবির বাণী, ‘আমি বণ্টক, আল্লাহ দানোত্তম’ আউলিয়া পান ফয়জে রসুল নয় তো কিছু কম, ও তার নাইরে সমতম। =============>৬<============= দম্ভ লয়ে চলে যেজন এই দুনিয়ার পর তরিকতের গন্ধ ও তার যাবে না অন্দর, কারণ দম্ভ খরতর। =============>৭<============= সঙ্গগুণে বেহেশ্ত্ পাবে কাহাফের কুকুর সঙ্গদোষে শাস্তি পাবে নূহেরো পুত্তুর, অলাভ শয়তানের নেক-জোর। (মূল ...

শেষ সম্ভাষ

🔉শেষ সম্ভাষ🔉 (বিদায় হজের ভাষণ)  ... শূন্যে রবি চমকায় উটের পৃষ্ঠে চড়ে নবিরাজ  পৌঁছিলো আরাফায়। দলে দলে এলো সাহাবা সকল  আরাফার ময়দান সামনে দাঁড়ায়ে আছে মহাজন  শোনাবে সমতা-গান। লক্ষ লক্ষ অনুচর সবে  কান পেতে শুনে রয় দুইজাহানের বাদশাহ নবি কোন কোন কথা কয়। দুনিয়ার রবি দুপারের নবি  ভাষণ করল শুরু “শোন ওরে শোন সাহাবা সকল  শুনে রাখ জল-তরু। এবারের পরে হবে না হয়ত  সফর হজের পথে হয়ত মিলিত হবো নারে ফের  আরবের আরাফাতে। এ নগর যথা মহামহিয়ান  তেমনি সকলে জেনো- একে-অপরের ধন-মান-তন  নিরাপদ রেখো হেন। বিপথগামীতা-পথভ্রষ্টটা  নিয়ো নাকো বেছে কভু অচিরে হিসেব করবে গ্রহণ  জগৎস্রষ্টা প্রভু। যুগে যুগে বহু জাতির উপরে  ধ্বংস নেমেছে এই- জাত-মান তুলে বিবাদ-দুয়ারে  কড়া নেড়েছিলো যেই। পুরুষ-নারিতে ভেদাভেদ করে  চলো নাকো দিবারাত পুরুষ যেভাবে মানুষ জানিও  নারিরাও সে সে জাত একে অপরের অধিকার দিয়ো,  হরণ করো না ভুলে দাসদাসি সবে আপন ভাবিও  জন্মেছে নরকুলে। অন্ন-বস্ত্র-বাসের অভাবে পড়ে যদি মরে তারা মানুষ বলিয়া মানুষকে আর  মানুষ ডাকিবে কার...

চাঁদ এলোরে জিলহজ মাসের

চাঁদ এলোরে জিলহজ মাসের চাঁদ এলোরে জিলহজ মাসের কুরবানি যে এলো না পশু কুরবান ঠিকই হলো পশুত্ব আর গেলো না... পশুর, চামড়া খোলে সব দেখালি তার ভেতরের অলিগলি নিজের মুখে পড়লি মুখোশ আসল রূপ কেউ দেখলো না... পশুর, মাংস-হাঁড়গুড় সব কাটিলি ইচ্ছে যত গিলে নিলি আত্মপশুর স্বাস্থ্য বাড়ে মরার যে, সে মরলো না... রে মন, গরীব মরে অনাহারে আস্ত গরু তোর উদরে কুরবানি কই করলি ওরে কুরবানি তো এমন না... ও শোন, কুরবানি তো রাহে-লিল্লাহ চাওয়া-পাওয়ার সবটায় আল্লাহ দাম হাঁকিয়ে নাম ভাঙিয়ে চাস কিরে তুই বুঝি না... ও মন, আসল পশু তোর ভেতরে তার গলেতে পরম জোরে দেরে দে ছুরি চালিয়ে যেন জাগতে পারে না...