সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পোস্টগুলি

এপ্রিল, ২০২০ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

রমজান মাহিনা

রমজান মাহিনা —মুহাম্মদ সৈয়দুল হক দ্বারে এসেছে আবার, সেই রহম খোদার রমজান মাহিনা ধরা পেয়েছে আবার খরা পেরিয়ে জোয়ার— রহমত খজিনা। মাফ করিবে খোদায়; হাঁফ ছেড়েছে সবাই সিজদায় পড়ে আজ, পাপ নিয়াছে বিদায় সাফ হয়েছে হৃদয় কোলাহল করে রাজ। ছেড়ে শয়তানি কাম, পড়ে খোদার কালাম, চোখে পর্দা-দখল, হাতে তসবির দান, মুখে জপ সোবহান হাঁকে মসজিদে চল। দেখো জনম-খাদক; যার খাওয়াটাই শখ সদা খাই খাই রব, ডরে এক আল্লার—ঘরে থেকে অনাহার করে সুখ অনুভব। নিয়ে উপাদেয় সব, সবে রয়েছে নিরব পেটে ক্ষুধা-অস্থির— প্রভু দেয়নি আদেশ তাই করে সমাবেশ পড়ে দোয়া-তকবির। রব উঠে তসলিম, ওরে ওরে মুসলিম সম্ভাষে মালায়েক, সব জান্নাতি দ্বার খোলে প্রভু-করুণার ক্ষমে শত নালায়েক। লভে স্বর্গী সুবাস বহে মুক্ত বাতাস পুরো ধরণী অতল শুধু মুসলিম নয় যত ধর্ম ধরায় সেথা মিশেছে সকল।

দয়াময়

দয়াময় (কাব্যানুবাদ: সুরা আর-রহমান) —মুহাম্মদ সৈয়দুল হক আল্লার নামে শুরু, যিনি সবাকার— করুণার পারাবার, কৃপার আধার। সীমাহীন দয়াময়—শেখালো কুরান, সৃজিয়া মুহাম্মদ—সেরা ইনসান। সৃষ্টির আদি হতে অন্তের জ্ঞান আছে যত সবটাই করেছেন দান। রবি শশী চলে তাঁর নিয়মে নিরব, গাছপালা তরুলতা সিজদায় সব। উন্নত করেছেন আকাশের ধার, উপমায় যেন তা-ই দাঁড়িপাল্লার। করো না, করো না কভু লঙ্ঘন তার পরিমাপে নীতি মেনো দাঁড়িপাল্লার। ধরণী সৃজন করে মানবের তরে ভরেছে সেথায় ফল আর খর্জুরে। আবরণে শস্য ও ফুলের বাহার, ওহে জীন, ওহে ইনসান, বলো— অস্বীকার করবে কী, রব-তায়ালার? শক্ত মাটির দ্বারা গড়ে ইনসান, আগুনের শিখা হতে জিন-উত্থান। বলো তবে বলো ওরে জিন-ইনসান, মানিবে না প্রভুজীর কোন কোন দান? পূর্ব ও পশ্চিমে আছে যত কিছু প্রভু তিনি সকলের, বাকি সবি নিচু। প্রভু তব দিয়াছেন দয়া এই ভবে, বলো সবি অস্বীকার করবে কীভাবে? প্রবাহিনী পাশাপাশি নিরবধি বয়, মিশে না-তো কভু তারা থাকে অক্ষয়। অগোচরে সকলের বেঁধেছি সে বাঁধ নাহি যেন মিশে কভু চলে কাঁধে-কাঁধ। মানব-দানব সবে এ...

ধর্মটা যে ধর্ম নেই

ধর্মটা যে ধর্ম নেই আর —মুহাম্মদ সৈয়দুল হক ধর্মটা যে ধর্ম নেই আর চর্ম কেবল আছে তা’য়, ধর্মমূলের কর্ম সকল দূর হয়েছে অচিন গাঁ’য়। জুব্বা টুপি পাগড়ি সবি বাড়ছে ক্রমে দিনে-দিন, মানুষগুলো হচ্ছে কেবল মুহাম্মদের ধর্মহীন (দরুদ)। তথ্যমতে নিত্য যারা গরীব-দুখীর ভাত মারে, গিয়ে দেখো ইদ-জুমাতে তারাই প্রথম কাতারে। যেই হুজুরে দিন-দুপুরে হালাল-হারাম বয়ান দেয়, দুই থেকে চার পয়সা পেলে ইমানখানাও বেইচা দেয়। পীর-সাধক আর ধর্মগুরুর বাড়ছে অভাব নিত্যদিন, পাত্র দেখে ছাত্র পোষে পীর নিজে বেশ ধর্মহীন। সহিহ হাদিস করছে হদিস দিনমজুর আর দিন-ফকির, মুহাদ্দিস আজ কলেজ-বালক ডাক্তারে-ও মুফাস্সির। প্রাথমিকের বাল-বালকে কাফের বলে রায় ছাড়ে, সোশ্যাল মামুর এই জগতে কার সাথে আর কে পারে! গাঞ্জা খেয়ে মঞ্চে উঠে পাঞ্জা দোলায় দেয় বয়ান, মোল্লা-মুনসির এই দশাতে যাবে কোথায় মুসলমান? কেউবা খেলে ফুটবল আবার কেউবা চড়ে রকেটে, দর্শকে কয় মারহাবা-জী হাদিয়া ভরুন পকেটে। সকাল থেকে রাত অবদি, রাত্র থেকে সকাল-তক, দীনটা ছিল সবটা-জুড়ে সবটা যেন থাকে হক। কর্ম যত ধর্ম সবি বলছে কুরআন মজিদে, অকর্মা...

ধ্রুব

ধ্রুব ধ্রুব চা খাচ্ছিল। খেতে খেতে ভাবছে। ভাবতে ভাবতে খাচ্ছে। কোনটা আগে? ভাবনা না খাওয়া? খাওয়া না ভাবনা? আরে, এটা তো পান করার জিনিস; খাচ্ছে কেন? যাব্বাবা, কী যে মাথামুণ্ডু ভাবছে—কে জানে! পানকে খাওয়া ভেবে ভাবনার অপমান হয়েছে ঢের। আর না। এবার খাওয়ায় মনোযোগ দেয়া যাক। হে হে, মনোযোগ দেবার আগেই মনোভাব পাল্টে গেল? আবারো খাওয়া? ভাবনার মান-ইজ্জত একেবারে শেষ। কিন্তু না, এভাবে শেষ হতে পারে না। সে ভাবুক৷ ভাবনার অপমান সে হতে দেবে না। প্রয়োজনে পানকে যে-কোনো রীতিতে খাওয়া বানিয়ে ছাড়বে। আচ্ছা, চা’কে বিরিয়ানি ভাবলে কেমন হয়? হাঁ, বিরিয়ানি ভাবলেই হয়ে যায়। খাওয়া-পানের দ্বন্দ্ব শেষ। তা-ছাড়া চা আর বিরিয়ানির কালারটা কাছাকাছি। বিরিয়ানিতে ঝোল ঢালা হোক। মাখামাখি করে পান্তাভাত বানানো যাক। এবার পান্তাভাতের তরিকায় পুরুত পুরুত টানা যাক। আহা! সে কী স্বাদ, সে কী স্বাদ! ধ্রুব এবার চিৎকার দেয়—পৃথিবী বিরিয়ানির, পৃথিবী বিরিয়ানির। চায়ের কাপটা আর কাপ নেই। আকাশের বুকে সুসজ্জিত থালা। থালাটা আবার চাঁদের মতো। সে চাঁদে ঝিলিক মারছে। চাঁদটাকে একবার ডানহাতে, আবার বাঁহাতে। সেটাকে আবার কিছুক্ষণ পরপর মুখে পুরে লম্বা চুমুক। চু...

সুফিবাদ বনাম উগ্রতা

সুফিবাদ বনাম উগ্রতা: শান্তির ইসলাম বনাম বাড়াবাড়ি পনেরো শাবান। ফেসবুকের টাইমলাইন টানছিলাম। চোখে পড়লো এক অদ্ভুত শিরোনাম। “শবে বরাতের একটি রোজা আপনাকে জাহান্নামে নিয়ে যাবার জন্য যথেষ্ট!” আঁতকে ওঠলাম। ঢুকলাম বয়ানে। মাথায় টুপি, চিবুকে দাঁড়িওয়ালা লোকটি বলছে, “শবে বরাত বেদাত। কুরআন-হাদিসের কোথাও নাই। পালন করলে জাহান্নাম নিশ্চিত।” নিচে হেডলাইনে বক্তার নাম দেখি—শায়ক আবদুর রাজ্জাক। বুদ্ধি-বয়স থেকে শবে বরাতের রোজা বাদ যায়নি কখনও। যেখানে একটি রোজায় জাহান্নাম নিশ্চিত, সেখানে আমার জন্য অন্তত পনেরো-বিশটা জাহান্নাম ইতোমধ্যে বরাদ্দ হয়ে গেছে। হ্যা, বিগত পনের-বিশ বছর ধরেই তো নিয়ম করে পালন করছি শবে-বরাত। আম্মাজান মাগরিবের পরপরই বাড়ির সবাইকে জড়ো করে সিন্নি/হালুয়া পরিবেশন করেন। ওটার পর আবার রুটি-গোশত। এশার আজান দিলে সুগন্ধি লাগিয়ে মসজিদে রওনা। ফরজ, সুন্নাত পড়ে আরো বারো রাকাআত নামাজ। চার রাকাআত অন্তে দরুদ-মোনাজাত, তারপর হুজুরের বয়ান। শেষে মিলাদ-কিয়াম। গদগদ কণ্ঠে কাঁদতে কাঁদতে মোনাজাত! এতেই কি শেষ? এসবে সর্বোচ্চ ১১-১২টা বাজে। বাকি সময়টা কবর জিয়ারত, আশেপাশের বুজুর্গ অলিদের মাজার জিয়ারত, কুরআন তি...

প্রশংসিত ৬

প্রশংসিত-৬ খাদিজা সাত রাজার ধন পেয়ে বসেছে। সাত না; রাজাদের রাজার ধন। আরে না, স্বয়ং রাজা পেয়ে বসে আছেন। খাদিজা থেকে খাদিজাতুল কুবরা হয়েছেন। তাঁর আর সম্পদ চায় না। চায় শুধু প্রেমাস্পদের ভালোবাসা-সন্তুষ্টি। সব সম্পদ প্রেমাস্পদের পদতলে উজাড় করে দেন। নব-দোলহা রাতারাতি সম্পদশালী। কিন্তু এ সম্পদ তিনি কী করবেন? তিনি তো বিলাতে এসেছেন, ভোগ করতে নয়। কার মেয়ের বিয়ে আঁটকে গেছে, কোন গরীব না-খেতে পেয়ে মরছে, কোন বিধবা সম্বলহীনা, কার মাল দস্যুরা লুটে নিয়েছে—খোঁজে খোঁজে দান করা শুরু। পৃথিবীময় প্রসারিত এ হাত—দানে থামে না। ফকির হওয়ার ভয় করে না। কমে যাওয়ার চিন্তায় মজে না। পরম দাতা যাঁর সাথে, কমার ভয় কি তাঁর সাজে? সাজে না। সাজা থেকে সাজগোজ। ওসবের বালাই ছাট। পূর্ণ যুবক। টগবগে চেহারা৷ মাথায় বাবরি চুল। দেখতে মাঝারি গড়ন। কিন্তু ভীড়ের মধ্যে দূর থেকেও দেখা যায়। পুরো মক্কার মধ্যমণি এখন। আল-আমিন নামের প্রচার আরো প্রসারিত হয়েছে। ঘোড়ায় চড়লে তাঁকে আর থামায় কে? হ্যা, ঘোড়ায় এখন চড়া হয় নিয়মিত। সিরিয়ার সাথে বাণিজ্যিক সম্পর্ক ছিল খাদিজার। সে-সবের দেখাশোনা এখন নিজেকেই করতে হয়। গোত্রের দশজনের একজনও বটে। মধ্যমণি বল...