সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পোস্টগুলি

আগস্ট, ২০১৯ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

প্রাণসখা

এসো হে প্রাণসখা ________________________________ মনে দখিনা বাতাস লেগেছে, উত্তরীবায়ুর আনাগোনা নেই বহুদিন হলো। শ্যামলকান্তি গেঁড়ে বসেছে মন-মগজের সবখানে। এভাবে চলা যায় না, থেমে থাকতেও যে আমি আসি নি। রঙধনুর রঙ মিলিয়ে গেছে সে কবেই; আঙিনার গোলাপ-গাঁদা-চামেলিরাও নেতিয়ে পড়েছে। সে ঘ্রাণ, সে সুর, সে ছন্দের সন্ধি হয় না বহুকাল ধরে। সব কি ফুরিয়ে গেছে? অবশিষ্ট কি কিছুই নেই? তবে দেরি কেন? এত অপেক্ষা সহ্যের ক্ষমতা আমার আছে? প্রাণসখা! তোমার প্রতীক্ষায় বসে আছি। তুমি এলেই যে বাঁচি।  শ্বাস রুদ্ধ হয়ে আসছে, আর থাকা যায় না।  শ্রাবণের বারিধারার মতো নেমে এসো– আমার দেহ-মনের সবখানে। খানিকটা নয়; পুরোটাই ভিজিয়ে দাও। ধুয়ে দাও সব জঞ্জাল-ঝঞ্জাট। কলুষতা ঢেকে রেখেছে;  আমায় পবিত্র করো, উদ্ধার করো, নতুনরূপে আবিষ্কারের অবসর দাও। মুছে দাও জমাটবাঁধা সব আস্তরণ।

ফিরে এসো

মিস করছি ভীষণ, বারবার এসো ইফতার করা হয় না দুদিন হলো। দিনের পর রাত, রাতের পর দিন; নিয়ম মেনেই আসছে। কিন্তু চনা, মুড়ি, পেঁয়াজি, বেগুনি, মিষ্টিদানা, শষা ও পুদিনাপাতার রসায়ন থেমে গেছে। অন্তত দশমিনিট ধরে ঘড়ির দিকেও তাকিয়ে থাকা হচ্ছে না রোজ করে। আজানের পূর্বে মসজিদ থেকে ভেসে আসে না বহু আকাঙ্ক্ষিত সাইরেনের শব্দ। একই ধরনের লেবুর শরবত আজও খেলাম; অথচ তৃষ্ণাকাতর ইফতারে খাওয়া সেই ফ্লেভারটা আর নেই। এভাবে আরো অনেক। অনেক কিছুকে মিস করছি ভীষণ। সারাদিন প্রচুর খেয়েও না-খেয়ে থাকার তৃপ্তিটা আর মিলছে না। রাতভর ঘুমিয়ে নির্ঘুম থাকার মতো স্বস্তি পাচ্ছি না। যাদের কাছ থেকে তেন্দ্রামী করে ট্রিট চেয়েও পাইনি, তারা এখন আবদারপূর্বক যত্নে খাওয়াচ্ছে। নাহ, সেই তৃপ্তি নেই। খুউব উপলব্ধি করলাম–কিছু সময়ের না-পাওয়ার তৃপ্তি অন্য সময়ের পাওয়ার চাইতেও মধুর হয়।  সময়টার বড্ড তাড়াহুড়ো। খুব দ্রুত ফুরিয়ে যায়। স্বার্থপর! হাজার আবেদন করলেও এক সেকেন্ডের জন্য থামে না। বেঁধে রাখার নিয়ম থাকলে বেঁধেই রাখতাম।  খোদা! তোমার দেয়া সিদ্ধান্তের সবকিছুতে সন্তুষ্ট। তবু কিছু বিষয়ে বড়ো আবদার করতে ইচ্ছে করে৷ বলতে ইচ্ছে করে, আয় বারি তাআলা! অন্ত...

শূন্যতা

শূন্যতা যে ভর করেছে পূর্ণ করবে কে শুনি? ভূবনজুড়ে নাই কি কোথাও, নাই কিরে মন সে গুণী? কূলহারা এ-ছন্নছাড়া জীবনভেলায় উঠবে কে? কোন হাওয়া সে সঙ্গ দেবে পালের গতি ঠিক রেখে।

অদ্ভুত ভজনালয়২

অদ্ভুত ভজনালয়ে একদিন ৭ শাওয়াল। ঈদের সপ্তম দিন। আমরা ক’জন হেঁটে চলেছি। উঁচুনিচু পাথুরে পথ বেয়ে। জায়গাটা রাউজান ডিঙিয়ে রাঙ্গামাটিতে গিয়ে ঠেকেছে। সম্ভবত ‘কাউখালি’ পড়েছে। ভাঙাচোরা এক সাইন বোর্ডে দেখলাম ‘ফটিকছড়ি ইউনিয়ন’। বাহ, ফটিকছড়ি থানা থেকে সোজা ফটিকছড়ি ইউনিয়নে! অদ্ভুত! আমার সাথে জিয়া, বেলাল, ফয়েজ, আরিফ ও আরমান ভাই। হাতে বাঁশের যষ্টি। যষ্টি অন্ধের না হলেও বেশ কাজের। উপরে বানরের লাফঝাঁপ। নিচে পিচ্ছিল পথ। বানরকে ভয় দেখানো, পিচ্ছিল পথে সামনে আগানো। দুটাতেই কাজে লাগছে। পাহাড় চুপসে গড়িয়ে আসা গিরিপথের শীতল পানি পায়ে লাগছে। অনুভবটা পায়ের গোড়ালি হয়ে মাথা পর্যন্ত পৌঁছে যাচ্ছে। উপরের রোদ্রের খরতাপ তখন ক্লান্তি আনতে অক্ষম। নতুন স্বাদের সন্ধানেই যে বেরিয়েছি। সেটা না-পাওয়া পর্যন্ত ক্লান্তি এলে কি চলবে? বেশ আগ্রহ নিয়েই সামনে চলা। কোনো বাধাই যেন প্রতিবন্ধক নয়৷ দুয়েকজন সামান্য ভয় পাচ্ছে। আমাকে আপাতত ভয়টয় ওসবে কাবু করতে পারছে না। মনজিলে মকসুদে পৌঁছুতে হবে৷ মনজিলে মকসুদ নিচে জানতে পারবেন। তার আগে আপাতত কয়েকটা সেলফি হয়ে যাক। আরিফ ভাইয়ের যুক্তি ফেলবার নয়। ফেরার সময় এসবে ইন্টারেস্ট থাকে না। অল্পসময়ে কিঞ্চিৎ...

অদ্ভুত ভজনালয়

অদ্ভুত ভজনালয়ে একদিন –মুহাম্মদ সৈয়দুল হক ৭ শাওয়াল। ঈদের সপ্তম দিন। আমরা ক’জন হেঁটে চলেছি। উঁচুনিচু পাথুরে পথ বেয়ে। জায়গাটা রাউজান ডিঙিয়ে রাঙ্গামাটিতে গিয়ে ঠেকেছে। নামটা সম্ভবত ‘কাউখালী’। ভাঙাচোরা এক সাইন বোর্ডে দেখলাম ‘ফটিকছড়ি ইউনিয়ন’। গিয়েছিলাম ফটিকছড়ি থানা থেকে। বাহ, থানা থেকে সোজা ফটিকছড়ি ইউনিয়ন! মানের বেশ উন্নতি হয়েছে, অদ্ভুত! আমার সাথে জিয়া, বেলাল, ফয়েজ, আরিফ ও আরমান ভাই। হাতে বাঁশের যষ্টি। যষ্টি অন্ধের না হলেও বেশ কাজের। উপরে বানরের লাফঝাঁপ, নিচে পিচ্ছিল পথ। বানরকে ভয় দেখানো, পিচ্ছিল পথে সামনে আগানো। দুটাতেই কাজে লাগছে। পাহাড় চুপসে গড়িয়ে আসা গিরিপথের শীতল পানি পা বেয়ে নিচের দিকে ছুটছে। অনুভবটা পায়ের গোড়ালি হয়ে মাথা পর্যন্ত পৌঁছে যাচ্ছে। উপরের রোদ্রের খরতাপ তখন ক্লান্তি আনতে অক্ষম। নতুন স্বাদের সন্ধানেই যে বেরিয়েছি। সেটা না-পাওয়া পর্যন্ত ক্লান্তি এলে কি চলবে? বেশ আগ্রহ নিয়েই সামনে চলছি। অনেকটা পথ পেছন ফেলে এসেছি। সামনে থেকে তিনটা কুকুর এলো হঠাৎ৷ দুয়েকবার ঘেউ ঘেউ শব্দ করে আমাদের সামনে সামনে হাঁটতে লাগল। ঠিক যেদিক থেকে এসেছে সেদিকে। আমরা আমাদের মতো হাঁটছি। কুকুরগুলো কিছুক্ষণ অন্তর ...

প্রাণের বার্তাবাহী

এসো হে প্রাণের বার্তাবাহী আজি রহিরহি– সুদূরের পানে চাহি, খুঁজি আনমনে কোথা সে আমার  প্রাণের বার্তাবাহী। প্রাণে প্রাণে যে রচে দেয় গান সুরেতে ভরায় মন ক্ষণে ক্ষণে যে তুলে বুকে তান কোথা সে আপনজন? বলে নানা কথা, সুখ-দুখগাথা– কথাতেই মেতে রয় ভুল করে তবু বলে না সে কভু কে সে, কী তার পরিচয়। কোথা সে আমার চির আপনার বসবাস কোন বনে মনালয়ে আজ বিরহীনি সাজ খুঁজেফিরি জনেজনে। … হিরন্ময়ের বেশে ওগো,  ধরা দাও কাছে এসে, মিশবো দুজন একজনাতে অনন্ত প্রেমাবেশে।

জলাবদ্ধতা

লঞ্চের এ কেবিনটা বেশ অগোছালো। নেই এসি-টেসিও। আলমিরাগুলোরও যা-তা অবস্থা। চারিদিকে ছড়ানো-ছিটানো কাপড়-ছোপড়। উপরে যে ফ্যানটা ঘুরছে, সেটাতেও বাতাসের যথেষ্ট ঘাটতি। বিচানার কী যে অবস্থা করে রেখেছে; তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। ক’টা বাজে আল্লাজানে। উফফফফ, দেয়ালে একটা ঘড়ি পর্যন্ত টাঙায়নি।  আচ্ছা, এখানকার কর্তৃপক্ষের কাজটা কি আসলে? মনে হচ্ছে কেবিন নিয়ে শুধুশুধু টাকা নষ্ট করলাম। ভাগ্যিস, ব্যাচেলর বাসায় থাকতে থাকতে এরূপ পরিবেশটা বেশ পরিচিত। না-হয় কোনো সুস্থ মানুষ এখানে আসলে অসুস্থ হয়ে পড়তে পারে। তবে এসবের মাঝে একটা বিষয় বেশ স্বস্তির। মাথার ঠিক উপর ও পাশে অনেকগুলো বই এলোমেলোভাবে সাজানো। ছোটখাটো লাইব্রেরি বলা চলে। এ নির্জন দরিয়ার মাঝে অন্য সঙ্গী না-পেলেও সময়টা যে বইয়ের সাথে বেশ কেটে যাবে–সেটা ভাবতেই মনটা ভালো হয়ে যাচ্ছে।  আরো একটা মজার বিষয় আছে৷ বাইরে গুড়িগুড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। এ বৃষ্টির মাঝে জানালার দ্বারে বসে এক মগ চা আর নজরুলের মরুভাস্কর হাতে পেলে আর কী লাগে! তার আগে অবশ্য মনে মনে গান বাজছে– “রিমঝিম এ ধারাতে, চায় মন হারাতে।” খুব জোরে একটা বজ্রপাত হলো। অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে ঘুমটাও ভেঙে গেল। মনে হচ্...

এলিয়েনদের খোঁজে...

এলিয়েনদের খোঁজে... বিকেলটা মোটামোটি শান্ত ছিল৷ বৃষ্টির আনাগোনা ছিল না একটুও। এখন ৯টা বাজে। আবারো মুষলধারে শুরু। বৃষ্টি বরাবরই প্রিয়। শহর থেকে তড়িঘড়ি করে বাড়ি এসেছিলাম কেবল টিনের চালায় বৃষ্টির ঝুমঝুম শব্দ শুনবো বলে। এ শব্দ আমাকে মাতাল করে দেয়। অনুভূতিরা সব দেয়াল ভেঙে চুরমার করে আমাকে ঝাপটে ধরে। সর্বাঙ্গে কাঁথা জড়িয়ে কান দুটো খাড়া করে দিই। চোখ বন্ধ করে শুনতে থাকি। এ এক অদ্ভুত স্পর্শ। মাপা যায় না, ছোঁয়া যায় না। তবে অনুভবের সবটা দখল করে নেয়। পেটে লাত্থি পড়লে সব অনুভূতি পালিয়ে যায়। বৃষ্টি না, আকাশ থেকে বেহেশতের পানি পড়লেও কেউ গা ভেজাতে এগিয়ে যাবার কথা না। কিন্তু এ লাত্থি যে শুধু পেটে না, পেটে-পিঠে সবটায়। শুধু চুলা নয়, অনেকের শোয়াও বন্ধ। শুবে কোথায়, ঘরের ভেতরই হাঁটু কিংবা কোমর-পানি। অনেকের আবার ঘরবাড়িই নাই। সব হারিয়ে অনেকটা পথহারা পথিক। হালদায় নিয়ে গেছে।  চিনের দুঃখ হোয়াংহো হলে ফটিকছড়ির ক্ষেত্রে হালদা। এ এক সর্বনাশা নদী। দোষ অবশ্য নদীর না, প্রকৃতির। না, এটা বাড়াবাড়ির পর্যায়ে চলে যাচ্ছে। প্রকৃতির দোষ না, প্রকৃতির পরিচালক তো আল্লাহ। তবে কি আল্লাহ দোষী? তা-তো অসম্ভব। দোষী আসলে আমরা। পাপে না...

নিশিথের মনোরথ

নিশীথের মনোরথ নিশীথলগ্নে ও সে কোন সুরে মন মাতিলি এ প্রেমাবেগে; কে-রে সে আপন! মিটিমিটি জ্বলে ধ্যানে নাহি দেখি পথ কত দূর বাড়ি তাঁর ক্রোশ না-কি শত্। দূরে থেকে থেমে-থেমে ডাকে কেন হায় ডেকে নিক মেখে হেম নীল সন্ধ্যায়, নীলত্বে মিশে পরে সবুজাব বেশে বুররাকে চড়ে যাব তাঁর নুরি দেশে। চুমি-চুমি দেহভরে মাখিবো সকল ধুলি যত তাঁর পায়ে নিয়াছে দখল।  প্রণাম-শ্রদ্ধা সবি সেথা দেবো ঢেলে আরামেতে যেথা তিনি পড়েছিল ঢলে। সে দেশের মহীরুহ-তরুলতা-সহ দেখেছিল রূপ তাঁর আরো যত দেহ মন্ত্রমুগ্ধে তাঁরে করে অনুভব; জ্যোতিহীন চোখজোড়া দেখিবে সে-সব। সহসা পড়বো মুখে কাঁদো কাঁদো সুরে সল্লা আলাইকা–সে নুরি তনু স্মরে। আসবে কি সে-প্রহর হীন দাস তরে লভিতে সে পদনুর এই হীন শিরে... [২৩,০৭,১৯–সুবহে সাদিক তালুকদার ভবন, শ্যামলী আ/এ ষোলশহর, চট্টগ্রাম]

তুমি এসো

তুমি এসো ওগো এসো আমার মন খারাপের দেশে তুমি এসো ওগো এসো;  কৃষ্ণচূড়ার বেশে, মেঘকালো মন রঙিন কোরো একটু ভালোবেসে। আমার চাঁদনি রাতের শেষে তুমি এসো ওগো এসো; চাঁদনি-পরীর বেশে, চোখজুড়িয়ে দেখবো আমি গভীর প্রেমাবেশে। আমার নিশুতি ঘুমঘোরে তুমি এসো ওগো এসো; প্রাণের বাহুডোরে, নিশ্বাসে তব বিশ্বাসী সুর শুনবো যতন করে। আমার কাকডাকা ঐ ভোরে তুমি এসো ওগো এসো; ঘুম ভাঙানোর তরে, আলসে দুচোখ খোলবে–তোমার মিষ্টি চুমুর পরে। আমার ক্লান্তদিনের শেষে তুমি এসো ওগো এসো; গ্লাসভরা জল নিয়ে, হাতছোঁয়া ঐ জলটি দেবে সর্ব অঙ্গে ছোঁয়ে। আমার ঘামভেজা মুখ দেখে তুমি এসো ওগো এসো; চোখে দুচোখ রেখে, শাড়ির আঁচে মুছো এ মুখ চোখভরা প্রেম মেখে। আমার দিন-যামিনী সারা তুমি থেকো ওগো থেকো অনুভবে ঘেরা, আসতে কভু দিয়ো না-কো ভালোবাসার খরা।

চাঁদ এলো জিলহজ মাসের

চাঁদ এলোরে জিলহজ মাসের চাঁদ এলোরে জিলহজ মাসের কুরবানি যে এলো না পশু কুরবান ঠিকই হলো পশুত্ব আর গেলো না... পশুর, চামড়া খোলে সব দেখালি তার ভেতরের অলিগলি নিজের মুখে পড়লি মুখোশ আসল রূপ কেউ দেখলো না... পশুর, মাংস-হাঁড়গুড় সব কাটিলি ইচ্ছে যত গিলে নিলি আত্মপশুর স্বাস্থ্য বাড়ে মরার যে, সে মরলো না... রে মন, গরীব মরে অনাহারে আস্ত গরু তোর উদরে কুরবানি কই করলি ওরে কুরবানি তো এমন না... ও শোন, কুরবানি তো রাহে-লিল্লাহ চাওয়া-পাওয়ার সবটায় আল্লাহ দাম হাঁকিয়ে নাম ভাঙিয়ে চাস কিরে তুই বুঝি না... ও মন, আসল পশু তোর ভেতরে তার গলেতে পরম জোরে দেরে দে ছুরি চালিয়ে যেন জাগতে পারে না...