সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পোস্টগুলি

ফেব্রুয়ারী, ২০১৯ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

বিলাসী মন

বিলাসী মন —মুহাম্মদ সৈয়দুল হক উড়ে যারে ও বিলাসী মন তুই  উড়ে যা বহুদূরে সাত সমুদ্দুর তের নদীর পরে  কোনো এক অচিনপুরে যে দেশে তোর বিলাসিতার ফল  তিক্ততায় নাহি ফিরে সে দেশে তুই বসতি গেঁড়ে নে  জনম-জনমের তরে যারে চলে যা সেই সে দেশেতে যে দেশের আলো-বাতাস অধরা অনধীন তা তা ধিন ধিন  গেয়ে চলে বারোমাস।

সুহাসিনী

সুহাসিনী সুদূর প্রান্থে ওহে কে গো তুমি সুহাসিনী ঝরনার কলকল শব্দের মতো কিংবা প্রভাতের হাসনাহেনার মত সুন্দর-সুশ্রী লাবণ্যতায় ভরা সর্গের হাসি হেসে যাও? হৃদয় মাজারে আন্দোলিত সে হাসির ব্যাখ্যা শোনাবে না? বলে কী যাবে না —কোন সমুদ্রের তলদেশে প্রবাহবান সে হাস্যধারা। মননচক্ষে দেখেছি বেশ, এবার কপালচক্ষে দেখার স্বাদ যে জেগেছে। শুনতে চাই, তুমি হেসে যাও, থেমো না হে সুহাসিনী। জনমের সব হাসি আজিকেই হেসে নাও। আমার ভেতর-বাহির পুলকিত হোক। সজীবতায় ভরে যাক এ দেহ-প্রাণ। আমি হারিয়ে যাই- অজানায়।

রাসুলপ্রেমে দাঁড়িয়ে যা।

মন তুই রাসুলপ্রেমে দাঁড়িয়ে যা —মুহাম্মদ সৈয়দুল হক হযরত হাস্সান বিন সাবিত। সাহাবিয়ে রাসুল। এটুকুন না। পরিচিত আরো আছে। ঢের। কবি ছিলেন। শায়েরে রাসুল। আবৃত্তিশিল্পীও বটে। কবিতা রচনা করতেন। সাথে আবৃত্তি। মদিনার বাদশার সামনে। তাঁরই প্রশংসাগাথা। তাঁরই শান-মান। কবিতার ভাষায়। ভাবা যায়? রাসুলে অতুল মিম্বর বানিয়ে দিলেন। তাঁর হাস্সানের জন্য। মসজিদে নববি শরিফে। সেখানটাই দাঁড়িয়ে রাসুলের শান গায়বেন। সুবহানাল্লাহ! একদা তিনি দাঁড়ালেন। সেই মিস্বরে। যেটি রাসুলে দোজাহাঁ স্থাপন করেছেন। রাসুলুল্লাহর গুণগান শুরু হল। আহা! সৃষ্টির সেরার গুণগান। অদ্বিতীয় স্রষ্টার অদ্বিতীয় সৃষ্টি ‘নুরে মুহাস্মদি’র গুণগান। তিনি গেয়ে চলেছেন। রাসুলুল্লাহ শোনে চলেছেন। সে কত প্রেম, কত গভীরের পঙক্তিমালা। কে বা রচে আর কে বা শোনে? দর্শনেদ্রিয় বন্ধ করে একটু ভাবুন। প্রেমশূন্য হৃদয়েও ঝড় বয়ে যাবে। মরু দুলাল খুশি হলেন। তৃপ্ত হলেন। তুষ্ট নয়, সন্তুষ্ট। হাস্সান বিন সাবিতের উপর। দুআ করতে লাগলেন, ‘আল্লাহুম্মা আই ইয়াদাহু বিরুহিল কুদুস।’ ‘হে আল্লাহ! তুমি হাস্সানকে সাহায্য কর। রুহে কুদুস-জিবরাইলের মাধ্যমে।’ দুআ করে ক্ষান্ত না। ঘোষণা দিলেন। নিশ্চিত ভ...

রূপোত্তম

ধরাপর রূপোত্তম -মুহাম্মদ সৈয়দুল হক নিখিল-বিশ্ব ওরে আয় ছুটে আয় আমেনার ক্রোড়ে দেখ নুর চমকায়। চওড়া ললাট-মাঝে স্রষ্টার বাণী  দুচোখ-গভীরে তাঁর মুক্তার খনি চিবুক অতলে তাঁর মনোহরি বাঁশি দুঠোঁট ঠীকরে বেরোয় স্বর্গের হাসি শিরোপরি দেখনারে নুরিকেশ উড়ে যেন ভ্রমরের গুঞ্জন গোলাপের পরে। দেখ দেখ- সেঁ হাসে! দেখ ঐ হাসি দাঁতের ফাঁকে যেন রূপরাজ-শশী! ও সে হাত নাড়ে, সাথে নাড়ে পা সৃষ্টিজগত দোলে ধিন ধিন তা! ওরে দেখে যা, আয় তোরা শোনে যা কে সেঁ? কোন সেঁ রাজন এলো... জগত-সূর্য; না-না পূর্ণশশী যে তারকারাজির ভিড়ে সমুজ্জ্বল সেঁ! হেরি তাঁর নুরি রূপ এই ধরাপর– ওরে লাজে মরে দিনমণি-নিশাকর। রূপরাশির আধার –রূপোত্তম গুণবিকিরণী গুণরাজ –গুণোত্তম।
এসো আলোর শামিয়ানায় মোমবাতির তলে –মুহাম্মদ সৈয়দুল হক দিকে দিকে ঐ কালোর মিছিল আঁধারে আছে ডুবে লুটতরাজের গুলিমিছিলে শান্তিরা গেলো চুবে। জুলুম-অনাচারের করাল থাবায় জনজীবনে হাহাকার হুমকি-ধমকি জোরের খেলায় সত্যের সুর চুপিসার। অধিকার আমার স্বাধীনসত্তা ধুকে ধুকে মরে হায় প্রতিবাদী সুর নমনীয় হয় ক্ষমতার ঝাপটায়। মানুষে মানুষে দ্বেষের জোয়ার ছড়িয়েছে এ বাংলায় স্নেহ-সম্প্রীতি-মানবপ্রেমের নেই যে কোথাও ঠায়। চারিদিকে যবে হাহাকার রবে আঁধারে ডুবে আলোরা এলো দেখো ঐ মোমবাতি জ্বেলে মতিন আর সামাদরা। সাইফুদ্দীন, হাকিম-আযম দুলাল নঈমুদ্দীন মোমেন-মানিক-সোলায়মান ও আশরাফ হোসাইন। তাঁদের সাথে আছে যারা আরো সকলের সুরে ঐ আঁধারবিদারি আলো-জ্বলমলে মোমবাতির রই রই। চাও যদি সুখ, বিনাস দুখের শান্তির আলো ফের মারো সিল জোরে প্রতিকের পরে আলোময় মোমের। ভ্রান্তি-অশান্তি-জুলুম-অনাচার সবকিছু পায়ে ঠেলে এসো সেই আলোর শামিয়ানাতে মোমবাতির তলে।

হযরতের স্কুল-১

হজরতের স্কুল-১ –মুহাম্মদ সৈয়দুল হক “হাসরের দিন আমি সর্বপ্রথম বলিব– ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ।” শিরক শিরক বলে মাইজভাণ্ডারের প্রতি আঙ্গুল তোলা ব্যক্তিরা গাউছুল আজম মাইজভাণ্ডারির এ বাণীটি অন্তরে গেঁতে রাখুন। অঘোষিত এক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা গাউছুল আজম হজরত আহমদ উল্লাহ মাইজভাণ্ডারি। সে ভার্সিটির পহেলা সবক ছিল “কবুতরের মত বাছিয়া খাও, হারাম খাইও না। নিজ সন্তানসন্ততি লইয়া আল্লাহর জিকির কর।”  গ্রামবাংলার আমজনতা সেসময় বিশ্ববিদ্যালয় বুঝত না৷ স্কুল বুঝত৷ তাই রমেশ স্কুল বলেছেন। এভাবে– “সেই স্কুলের এমনি ধারা, বিচার নাইরে জোয়ান বুড়া সিনায় সিনায় লেখাপড়া শিক্ষা দিতাছে মাস্টার ও মাহিনা ছাড়া, এলমে লাদুনি ভরা কাগজ কলম দোয়াত কালির কী দরকার আছে? গাউছুল আজম মাইজভাণ্ডারি স্কুল খুইলাছে...” রমেশ শীল হিন্দু ছিলেন। মাইজভাণ্ডারি গান লিখেছে প্রায় ৩৫০। ‘আমি তোমায় ভালোবাসি, তুমি আমাকে দেখা দাও’ টাইপের না। মানে গানগুলো কেবল গান না। এলমে শরিয়ত ও তরিকতের গভীর থেকে গভীরতর রহস্য। সেখানে নামাজ, রোজা, হজ, জাকাত কোনটি নেই? যেমনটি লিখেছেন– “নামাজ রোজা কলমা আর, হজ ও জাকাত সার এই পাঁচ কাজে দাসগণে মশগুল রাখিও দয়াল ভাণ্ডারি ...

হযরতের স্কুল-২

হজরতের স্কুল-২ 📝মুহাম্মদ সৈয়দুল হক “হজরতে শাহ আহমদুল্লাহ কাদেরি কুতুবুল আকতাবে বেলাদে মাশরেকি”                         –ইমাম শেরে বাংলা কুতুবুল আকতাব। স্রষ্টার পক্ষ হতে সময়ের সর্বোচ্চ ক্ষমতাবান। যা ইচ্ছা, যখন ইচ্ছা, করতে পারেন এমন সত্তাই কুতুবুল আকতাব। কুতুবিয়্যত; এটি বেলায়তে কুবরা বা সর্বোচ্চ বেলায়তের এক ভাগের নাম। অপর ভাগ গাউছিয়ত তথা ত্রানকতৃত্ব। যিঁনি যা চান, তা দান করতে পারেন, তিঁনিই গাউছ।  ইমাম শেরে বাংলার কসিদার শেষে যাওয়া যাক– “কাদেরিয়ম নারায়ে আঁ গাউছে আজম মি যনম দম যে শাহে আহমদুল্লাহ কুতবে আলম মি যনম।”–“আমি কাদেরি। আমার শ্লোগান হলো- হজরতে শাহ আহমদুল্লাহ রহ. একই সাথে গাউছুল আজম ও কুতুবে আলম।” হজরতের বাণী– “মাই মজজুবে সালেক হোঁ, বায়তুল মুকাদ্দাস মে নামাজ পড়তা হোঁ।” কীভাবে সম্ভব? তিনি তো বাংলাদেশী। থাকেন ভাণ্ডার শরিফ। অথচ নামাজ জেরুজালেমের আকসায়? চলুন, সামনে যাই। উত্তর মেলে কি না দেখা যাক। ফটিকছড়ির ঈসাপুরের রমিজ উদ্দীন। গেলেন হজে। প্রেমচিত্তে তাওয়াফে বায়তুল্লাহ করছিলেন। দেখেন হজরতও সেখানে। তাওয়াফরত অবস্থায়৷  কাব...

কী যেন খোঁজে

কী যেন খোঁজে, কী যেন ভাবে,  কী যেন আবিষ্কার করতে চায়!  দিনশেষে খালি হাতে ফেরা।  সময় বড় নিষ্টুর, বড় কঠিন, বড় স্বার্থপর। আঁধারেরা দলবেঁধে ঘনীভূত হয়। নতুন কিরণের প্রত্যাশায় সূর্যের জন্য প্রতীক্ষা।  ইশ, সূর্য হওয়া যেত! সর্বাবস্থায় দীপ্যমান!  যেদিকে যাবো কেবল আলোই ছড়াবো! কোনো অন্ধকার ছোঁতে পারতো না! তাতেও কী স্বার্থকথা? আমার অনুপস্থিতিতে  ঠিকই অন্ধকার নেমে আসতো।  কিন্তু আমি তো অন্ধকার পছন্দ করি না। সবাই সবসময় আলোয় থাকবে,  উদ্ভাসিত হবে– এই তো ঠিক।  কলুষতা! তুমি বিদায় নাও,  দূর হও এ পৃথিবী থেকে। তোমাকে আর চাচ্ছি না।

একুশ-পাড়া

একুশ-পাড়া মুহাম্মদ সৈয়দুল হক মা... ওগো  মা! চলো একুশ-পাড়ায় যাই; যেথা রক্ত দিয়ে রফিক জব্বার ভাষারি গান গায়।         সেথা গরজ উঠে দুঠোঁট ফেটে সে   ‘রাষ্ট্রভাষা চাই–         যা’তে মান-অভিমান প্রেম-বিরহ         মুক্তসুরে গা’ই।’             মা... ও মা..! চলো,  যাই সে দেশে যে দেশটাতে            ‘অ’ ‘আ’তে দিন যায়            ‘কুহু’ সুরে কুকিল পক্ষী             ক-এ স্বর মিলায়। যার রূপ-লাবণ্যে বিভোর হয়ে রূপালি কবির দল লিখছে কবিতা গান উপন্যাস নিত্য অনর্গল। সেসব ক খ গ ঘ’র মধুর ধ্বনি যার আকাশে বা’য় চল না ও মা, মাগো আমার ধরার সে পাড়ায়...
“জগতের যত পবিত্র গ্রন্থ ভজনালয়  ঐ একখানি ক্ষুদ্র দেহের সম পবিত্র নয়!”                          —কাজী নজরুল ইসলাম দৌড়ঝাপ শেষে শোবার খাটে এসে বসলাম। সারা দিন কেবল নিউজ দেখে গেছি। চকবাজারে লাশের মিছিল। মানুষ পুড়া গন্ধে ঢাকার আকাশ ভারি। কয়েক লাইন লিখা দরকার। আপন জায়গা থেকে শোক প্রকাশ করা আর কি! নইলে যে আমার মনুষ্যত্ব বিকিয়ে গেছে, এটা প্রকাশ হয়ে যাবে৷ অন্তত নিজের মানুষ দাবির পেছনে এই পিলারটা বসিয়ে দেয়া যাক। কিন্তু মশার বাচ্চারা লিখতেই দিচ্ছে না। ভুল বললাম। বাচ্চা না। সাইজ দেখে মনে হচ্ছে কিশোর নতুবা যুবক। সমানে কামড়ে যাচ্ছে। তার উপর কানের গোড়ায় ভনভন। মানা যায়? সহ্য হয়?  ভাবছি, সামান্য মশা। তার কামড় এত বিষাক্ত! আওয়াজ এতটা বিরক্তিকর! আগুনের আওয়াজ কেমন? আগুনের পরশ কতটা বিষাক্ত? বলতে পারেন? ব্যাখ্যা করা যায়? সেই আগুনেই পুড়েছে মানুষ। চেনা চেহেরায় কালি লেপে অচেনা করে দিয়েছে সর্বনাশা আগুনের ফুলকি! ঠিক সে সময়ে কিছু লোকের পোস্ট– ‘আগুনে সবকিছুকে পোড়ালেও মসজিদ পুড়েনি। অক্ষত তার সর্বাঙ্গ। কেউ আমিন না লিখে যাবেন না।’ আচ্ছা, মসজিদ ক...

সাম্যবাদী-২

সাম্যবাদী-২ –মুহাম্মদ সৈয়দুল হক                             চলো, সাম্যের গান গাই জগতের যত সুন্নি মুসলিম সকলেই ভাই-ভাই। আরবের কে ও, পাকিস্তানি কে, কে সে বাংলাদেশি এক কাতারে দাঁড়াবো সবে ভুলে সব রেষারেষি।  কে কার পক্ষে রায় দিলো কবে–সে খবর নাহি রেখে দিয়ে গলে শান মদিনার তান–গেয়ে যাবো এক মুখে। কে গেল ও কার আমন্ত্রণে; কারে নিলো বুকে চেপে না দেখে এসব সিনাখান তাঁর দেখে আবো সবে মেপে। থাকে যদি হেথা নবিকুলরাজ পরম ভালোবাসায় করবো কেন হে মিছে সে হিংসা; হিংসুটে কলিজায়। কে সে রেজভী, ভাণ্ডারি কে–কাদের সে দরবার? মাপকাঠি এ নয়তো হকের পরিচিতি যাচিবার। যদি না থাকে বুকভরা তার মদিনা-মুনিব-প্রেম ভণ্ড যে সে নামধারি জন–যতই থাকুক হেম। রাসুল-স্মরণে আপন বক্ষে যার যায় দিবানিশি আরবে থাক সে, থাক না ইয়ামেন–তবু যেন কাছাকাছি।  পীর-পীরালি গদি-হাদিআয় টানাটানি যারা করে ভণ্ড সেসব অন্ধ যোগী—কে বলে সুন্নি তারে? ‘আমিই সুন্নি আমিই খাঁটি’ এমন ভাবনা যাদের ছাই মারি ও মুখের ওপরে; ধিক শত ধিক তাদের। মত-মতবাদ ভিন্ন তবু হানাফি-শাফেয়ি ঠিক ঈষৎ–দ্বন্দ্বে ছন্দপতন ...